ব্যাটিং সামর্থ্যের প্রমাণ দিয়ে মিরাজের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় দিনে বাংলাদেশের ইনিংসের ১৪৮তম ওভার। বাঁহাতি স্পিনার জোমেল ওয়ারিকানের চতুর্থ ডেলিভারি প্যাডেল সুইপ করে দুই রান নিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। প্রথম রানেই তিনি পেয়ে গেলেন পরম আরাধ্য এক অনুভূতি। আট নম্বরে নেমে টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরির স্বাদ নিলেন এই অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার।
বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে নিজের ব্যাটিং সামর্থ্যের প্রমাণ দিয়েছেন মিরাজ। পেসার হোক কিংবা স্পিনার, ক্যারিবিয়ান বোলারদের বিপক্ষে তিনি ঘুরিয়েছেন ছড়ি। ব্যাটিং সত্তাকে জাগ্রত করে খেলেছেন নান্দনিক সব শট। গ্লাইড, ফ্লিক কিংবা ইনসাইড আউট কী করেননি তিনি! ৯৯ বলে ফিফটিতে পৌঁছানো মিরাজ তিন অঙ্কে পৌঁছান ১৬০ বলে। অর্থাৎ পরের পঞ্চাশ তিনি তুলেছেন বেশ দ্রুতগতিতে।
বয়সভিত্তিক পর্যায়ে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেওয়া মিরাজের ব্যাটিং প্রতিভা নিয়েই সেসময় আলোচনা হতো বেশি। কিন্তু সর্বোচ্চ পর্যায়ে পা রাখার পর সামর্থ্যের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি তিনি। ক্যারিয়ারের অভিষেক টেস্টে বল হাতে অবিস্মরণীয় পারফরম্যান্স করার পর তার মূল পরিচয় হয়ে যায় ‘বোলার’।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে চার বছরের বেশি সময়ের পথচলায় ওয়ানডে ও টেস্টে বেশ কিছু কার্যকর ইনিংস খেলেছেন মিরাজ। কিন্তু কখনোই ধারাবাহিক হতে পারেননি। ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে এই সেঞ্চুরি তাই তার জন্য হতে পারে ব্যাট হাতে নতুন শুরুর ভিত।
মিরাজের কল্যাণে বাংলাদেশ পেয়েছে বড় সংগ্রহ। চা বিরতির আগে স্বাগতিকদের ইনিংস থেমেছে ৪৩০ রানে। রাহকিম কর্নওয়ালকে ছক্কায় ওড়াতে গিয়ে দলের শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হওয়ার আগে মিরাজের ব্যাট থেকে আসে ১০৩ রান। তার ১৬৮ বলের অসাধারণ ইনিংসে চার মোট ১৩টি।
ক্রিকেটের সবচেয়ে কুলীন সংস্করণে এর আগে মিরাজ ২২ ম্যাচে খেলেছিলেন ৪২ ইনিংস। সেখানে হাফসেঞ্চুরি ছিল মোটে দুটি। ২০১৮ সালের নভেম্বরে ঢাকায় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে খেলা অপরাজিত ৬৮ রানের ইনিংসটিই এতদিন ছিল তার সর্বোচ্চ।
ব্যক্তিগত ২৪ ও ৮৫ রানে দুবার জীবন পাওয়া মিরাজ শেষ চারটি জুটিতে রাখেন অগ্রণী ভূমিকা। সপ্তম উইকেটে সাকিব আল হাসানের সঙ্গে ৬৭ রান যোগ করেন তিনি। বাঁহাতি তারকা অলরাউন্ডার সাকিবের বিদায়ে বাংলাদেশের বড় স্কোরের স্বপ্নে লেগেছিল আঘাত। তবে মিরাজ সামনে এগিয়ে আসায় চারশো ছাড়িয়ে যায় সংগ্রহ। অষ্টম উইকেটে তাইজুল ইসলামের সঙ্গে ৪৪ ও নবম উইকেটে নাঈম হাসানের সঙ্গে ৫৭ রানের আরও দুটি গুরুত্বপূর্ণ জুটি উপহার দেন তিনি।
Comments