মুশফিক, তামিমের পরামর্শে মিরাজের এমন ব্যাটিং

Mehedi hasan Miraz
সেঞ্চুরি করে ফেরা মিরাজকে মুমিনুল, সাকিব, মুশফিকের অভিনন্দন। ছবি: ফিরোজ আহমেদ

বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে ব্যাটসম্যান হিসেবে বেশ নামডাক ছিল মেহেদী হাসান মিরাজের। কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রাখার পর তার অফ স্পিনার পরিচয়টাই হয়েছে বড়। মাঝেমাঝে ব্যাটিং দক্ষতা দেখালেও সেভাবে নিজেকে মেলে ধরতে পারছিলেন না তিনি। উইন্ডিজের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টে আটে নেমে করে ফেললেন দারুণ এক সেঞ্চুরি। তার সেঞ্চুরিতেই চারশো ছাড়িয়ে ভালো অবস্থায় বাংলাদেশ। দিনশেষে মিরাজ বললেন, দুই অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম আর তামিম ইকবালে টিপস পেয়েই ব্যাটসম্যান হিসেবে তার এমন বদলে যাওয়া।

বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দিনের তৃতীয় ওভারেই ক্রিজে এসেছিলেন মিরাজ। আউট হয়েছেন দলের শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তো বটেই সিনিয়র ক্রিকেটেও পেয়েছেন নিজের প্রথম সেঞ্চুরি। তার ১০৩ রানের ইনিংসেই মূলত সাড়ে তিনশোর আশেপাশে আটকে যাওয়ার শঙ্কা উড়িয়ে বড় রান পেয়েছে বাংলাদেশ।

সাকিব আল হাসানের সঙ্গে সপ্তম উইকেটে ৬৮ রান যোগ করার পর শেষ তিন উইকেটেও মিরাজ বাংলাদেশকে রাখেন পথে। টেল এন্ডারদের নিয়ে আনেন আরও ১১৫ রান।

১৬৮ রানের ইনিংসে ১৩ বাউন্ডারি মেরেছেন। ২৪ ও ৮৫ রানে দুবার জীবন পেয়েছিলেন। কিন্তু বাকিটা সময় অথরিটি নিয়ে খেলতে দেখা গেছে তাকে। পেসার শ্যানন গ্যাব্রিয়েলকে অনায়াসে খেলে দেওয়ার পর স্পিনারদের বিপক্ষে দেখিয়েছেন দাপট। নিয়ন্ত্রণ নিজের কাছে রেখে রান বাড়িয়েছেন তিনি।

দারুণ এক দিনশেষে ভিডিও বার্তায় এই অলরাউন্ডার তার ব্যাটিংয়ের এমন সাফল্য টেনে আনলেন দুই সিনিয়রের পরামর্শের কথা, ‘একটা জিনিস দেখেন, আমি যখন সেদিন নেটে ব্যাট করছিলাম তখন তামিম ভাই আমাকে ২-১টা পরামর্শ দিচ্ছিলেন। তার আগেও আমি যখন ব্যাট করেছিলাম মুশফিক ভাই অনেক পরামর্শ দিয়েছিলেন। উনি যখন প্র্যাকটিসে ব্যাটিংয়ে আসতেন আগে আগে, আমাকেও নিয়ে আসতেন। উনিও ব্যাটিং করতেন, আমাকেও ব্যাটিং করাতেন। গত  এক সপ্তাহ আগেও আমি তার সাথে ব্যাটিং নিয়ে অনেক কাজ করেছি।

‘তামিম ভাই সেদিন আমাকে একটা পরামর্শ দিয়েছেন, জোরে বলগুলো কীভাবে খেলতে হবে, শরীরের দিকে আসা বলগুলো কীভাবে খেলতে হবে। তামিম ভাই শুধু একটা কথা বলেছেন যে, শরীরের দিকে আসা বলগুলো সোজা রাখার জন্য, এটা যেন না ঘুরিয়ে দেই। আজকে এটা প্রয়োগ করেছি। (শ্যানন) গ্যাব্রিয়েল যখন আমাকে শরীর বরাবর বল করেছে, যতটা সম্ভব সোজা রাখতে পেরেছি এবং ছেড়ে দিয়েছি।

‘এক সপ্তাহ আগে মুশফিক ভাইয়ের সঙ্গে যে ট্রেনিং করেছি, তখন মুশফিক ভাই একটা কথা বলেছেন যে, সোজা খেলতে হবে এবং বাইরের বলে যেন খোঁচা না দেই, এটা যেন ছেড়ে দেই। পাশাপাশি সবসময় যেন মনোযোগ ধরে রাখি এবং বল টু বল খেলার চেষ্টা। দুজনের পরামর্শই অনেক কাজে লেগেছে।’

এমনকি আজ ব্যাট করতে নামার আগেও মিরাজ পেয়েছেন মুশফিকের মূল্যবান পরামর্শ, ‘নামার আগে মুশফিক ভাই হয়তো দুই-একটা কথা বলেছে যে, এ উইকেটে অনেক সুযোগ আছে, ভালো কিছু যেমন ৭০ রানে নটআউট থাকতে পারবি।’

ক্রিজে এসে মিরাজ পরামর্শ পেয়েছেন আরেক সিনিয়রের। ৬৮ রানের জুটি গড়ার সময় সাকিবও মিরাজকে দেখিয়ে দিয়েছেন ভালো করার পথে, ‘আমি যখন উইকেটে এসেছি, তখন একটু স্নায়ুচাপে ছিলাম। সাকিব ভাইয়ের সঙ্গে আমি কথা বলছিলাম যে, ভাই কী করলে ভালো হয়। সাকিব ভাই একটা কথা বলেছেন স্বাভাবিক ক্রিকেট খেলতে এবং যদি আত্মবিশ্বাস থাকে যে মারলে পার হয়ে যাবে বা যে শটই খেলি যেন আত্মবিশ্বাস নিয়ে খেলি।’

‘যেমন মাঝখানে আমি নিজের চাপ কমাতে একটা স্লগ সুইপ চেষ্টা করব, তখন সাকিব ভাই আমাকে বলেন যে, এখানে স্লগ সুইপের চেয়ে প্যাডল সুইপ করলে ভালো। তখন আমার মাথায় চিন্তাটা কাজে লেগেছে যে, আমি যদি স্লগ সুইপের বদলে প্যাডল সুইপ খেলি তাহলে হয়তো ভালো হবে, আউট হওয়ার সুযোগ কম থাকবে। এসব ছোট ছোট জিনিস অনেক গুরুত্বপূর্ণ, যা আমাকে হয়তো সাহস দিয়েছে।’

Comments

The Daily Star  | English
Nat’l election likely between January 6, 9

EC suspends registration of AL

The decision was taken at a meeting held at the EC secretariat

7h ago