ক্যারিবিয়ান নান্দনিকতায় অভিষেকেই মায়ার্সের সেঞ্চুরি
জেসন হোল্ডার, রোস্টন চেজ, শিমরন হেটমায়াররা থাকলে হয়তো কাইল মায়ার্সের দলেই ডাক পড়ত না। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ঘরোয়া ক্রিকেটে অলরাউন্ডার হিসেবে তিনি বেশ পরিচিত। সেরা কজন তারকার অনুপস্থিতিতে বাংলাদেশে এসে ২৮ বছরে টেস্ট অভিষিক্ত মায়ার্স দেখাচ্ছেন ব্যাটিং ঝলক। ক্যারিবিয়ান নান্দনিকতার ছোঁয়া পাওয়া গেল তার মাঝে। দৃষ্টিনন্দন সব শটে বাংলাদেশকে চিন্তায় ফেলে দারুণ সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন তিনি।
রবিবার চট্টগ্রাম টেস্টের পঞ্চম দিনের দ্বিতীয় সেশনে ১৭৮ বলে মোস্তাফিজুর রহমানকে চার মেরে সেঞ্চুরিতে পৌঁছান মায়ার্স। তিন অঙ্কে যেতে এই বাঁহাতি বাউন্ডারি মেরেছেন ১১টি। মোস্তাফিজকে হাঁকিয়েছেন ১ ছক্কাও। লাঞ্চের আগে তিনি ফিফটিতে পৌঁছেছিলেন ৮৯ বলে।
এর আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে সাদা পোশাকে অভিষেকে ১৩ জন সেঞ্চুরি করেছিলেন। মায়ার্সের নাম সেখানে যুক্ত হলো যেন কিছুটা অপ্রত্যাশিতভাবে। তবে দুই ইনিংসেই যেমন ব্যাট করেছেন, তাতে সেঞ্চুরিটা তার পাওনাই ছিল।
অভিষেকে বাংলাদেশের বিপক্ষে এর আগে সেঞ্চুরি করেছিলেন তিন জন। ২০০১ সালে পাকিস্তানের তৌফিক উমর, ২০০৩ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার জ্যাক রুডলফ ও ওই বছরে দুই ইনিংসেই তিন অঙ্কে পৌঁছেছিলেন পাকিস্তানের ইয়াসির হামিদ।
যদিও একদম নিখুঁত ছিল না মায়ার্সের ইনিংস। ৪৭ ও ৪৯ রানে পেয়েছেন দুবার জীবন। ৪৭ রানে তাইজুল ইসলামের বলে জোরালো আবেদন আম্পায়ার সাড়া দেননি। রিপ্লেতে দেখা গেছে, রিভিউ নিয়ে তাকে ফেরাতে পারত বাংলাদেশ। এরপর ৪৯ রানে মেহেদী হাসান মিরাজের বলে স্লিপে ক্যাচ দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু নাজমুল হোসেন শান্ত হাতে জমাতে পারেননি বল।
তবে বাদ বাকি সময় দেখার মতো শট এসেছে মায়ার্সের ব্যাটে। প্রথম ইনিংসেও ৪০ রানের ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। সেখানে ছিল স্ট্রোকের পসরা। দ্বিতীয় ইনিংসেও তা জারি রেখেছেন তিনি। কাভার ড্রাইভে যেমন মুগ্ধ করেছেন, তেমনি অন ড্রাইভ, লফটেড শট আর পুলেও দেখিয়েছেন সমান দক্ষতা।
টেস্টে সেঞ্চুরি এমনিতেই বড় ব্যাপার। সেটা যদি হয় ম্যাচের পঞ্চম দিন আর বিশাল রান তাড়ার চাপে, তাহলে তা আলাদা করে মনে রাখতেই হয়। ইতিহাস বলছে, টেস্ট অভিষেকে চতুর্থ ইনিংসে সেঞ্চুরির ঘটনা আছে আর মাত্র সাতটি। অষ্টম ক্রিকেটার হিসেবে তা করে দেখালেন মায়ার্স। সবশেষ ২০১২ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অভিষেকে দক্ষিণ আফ্রিকার ফাফ দু প্লেসি করেছিলেন সেঞ্চুরি।
চতুর্থ উইকেটে এনক্রুমা বোনারকে নিয়ে মায়ার্সের জুটিতে ১৭০ রান হয়ে গেছে ইতোমধ্যে। এদিনের প্রথম সেশন তারা পার করে দেন অনায়াসে। ৩৯৫ রান তাড়ায় নেমে মুমিনুল হকদের কপালে তারা ফেলেছেন চিন্তার ভাঁজ।
এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত, উইন্ডিজের রান ৩ উইকেটে ২২৯। ম্যাচ জিততে তাদের দরকার আরও ১৬৬ রান। ড্র করতে টিকতে হবে ৪৫ ওভারের মতো।
Comments