সব সময় ইতিবাচক ছিলাম, আমরা কখনোই হাল ছাড়িনি: মায়ার্স
খুব নীরব প্রকৃতির মানুষ তিনি। নিজের মধ্যে ডুবে থাকেন বলে জৈব সুরক্ষা বলয়ে একদম সমস্যা হয় না কাইল মায়ার্সের। কিন্তু ব্যাট হাতে আবার তাকে পাওয়া যায় ক্যারিবিয়ান ছন্দে আর আগ্রাসী ভূমিকায়। বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডেতে ছিটেফোঁটা দেখিয়েছিলেন। টেস্টে নেমে যা করলেন, তা এখন ইতিহাসে ঠাঁই হয়ে গেছে। একদম অচেনা নাম থেকে ক্রিকেট বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দেওয়া মায়ার্স বললেন অনেকটা পিছিয়ে থেকেও এক মুহূর্তের জন্যও হাল ছাড়েননি তারা।
চট্টগ্রাম টেস্টে পরিষ্কারভাবে হারের পথে ছিল ক্যারিবিয়ানরা। প্রথম ইনিংসেই বাংলাদেশ লিড পেয়েছিল ১৭১ রানের। দ্বিতীয় ইনিংসে আরও ২২৩ রান যোগ করে উইন্ডিজকে দেওয়া গিয়েছিল ৩৯৫ রানের বিশাল লক্ষ্য।
চতুর্থ ইনিংসে এত রান তাড়া করে বাংলাদেশ তো বটেই, উপমহাদেশের মাঠেও জেতেনি কোনো দল। তাছাড়া, পঞ্চম দিনের উইকেট। আর সেরা কজন তারকাবিহীন উইন্ডিজ দল। অধিনায়ক ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট ফিরেছিলেন চতুর্থ দিন বিকেলেও। শেষ দিনে ৭ উইকেট নিয়ে করতে হতো ২৮৫ রান। ড্র করতে হলেও সামনে ছিল তিন সেশন টেকার কঠিন চ্যালেঞ্জ। সব কিছু উতরে দলকে বাঁহাতি মায়ার্স এনে দিয়েছেন অবিশ্বাস্য জয়। দলের জয়ে বেশিরভাগ রানই করেন তিনি। ২০ চার, ৭ ছক্কায় অপরাজিত ছিলেন ২১০ রানে।
রবিবার রেকর্ড গড়া অবিস্মরণীয় ম্যাচশেষে মায়ার্স জানান, সব প্রতিকূলতা জেনেও কখনই হাল ছেড়ে দেওয়ার কথা ভাবেননি তারা, ‘আমি বরাবরই একজন ইতিবাচক মানুষ। আমি সব সময় আমার সামর্থ্য আর দলের উপর আস্থা রাখি। আমরা হাল ছাড়িনি। আমরা সব সময় ড্রেসিংরুমে বলেছি, আমাদের লড়াই করা দরকার। অধিনায়ক ও কোচ বোলারদের বলেছেন, এই উইকেটে লড়াই জারি রাখতে হবে।’
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে এর আগে কেবল দুটি সেঞ্চুরি ছিল মায়ার্সের। অলরাউন্ডার হিসেবেই ওয়েস্ট ইন্ডিজে পরিচিতি তার। ২০১২ সালের যুব বিশ্বকাপে চতুর্থ সর্বোচ্চ উইকেটও পেয়েছিলেন। তবে এরপর আর সিনিয়র ক্রিকেটে আলো ছড়াতে পারেননি। ২৮ বছর পেরিয়ে পেলেন টেস্ট ক্যাপ। আর সেটা এমনভাবেই রাঙানো হয়েছে যে, দিবাস্বপ্নেও হয়তো এমনটা ভাবতে পারতেন না তিনি!
নিজের এই পারফরম্যান্স তরুণদের অনুপ্রেরণার কারণ হবে বলেই ভাবছেন মায়ার্স, ‘টেস্ট ক্রিকেট খেলাটা দারুণ স্বস্তির ব্যাপার। তারপর এরকম সেঞ্চুরি করা এবং সেটা ডাবল বানিয়ে দেওয়া এবং টেস্ট জিতে যাওয়া (দারুণ কিছু)। আমি সতীর্থদের ধন্যবাদ দিতে চাই। দেশে আমার কোচ ও পরিবারকে ধন্যবাদ। (আমার) অভিষেকে ডাবল সেঞ্চুরি করা এই পর্যায়ে আসতে অনুপ্রাণিত করবে সব তরুণকে।’
Comments