২০০৫ সালের সিরিজ বোমা হামলা: ৫ মামলায় ১৪ জনের কারাদণ্ড

স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

সাতক্ষীরার পাঁচ স্থানে সিরিজ বোমা হামলার ঘটনায় হওয়া পাঁচটি মামলার ১৯ আসামির মধ্যে ১৪ জনকে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। দণ্ড পাওয়া ১৭ আসামির মধ্যে সাত জনকে ১৩ বছর করে ও বাকি সাত জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

আজ বুধবার দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক শরিফুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন।

২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট দেশব্যাপী সিরিজ বোমা হামলার ঘটনা ঘটে। ওই দিনই সাতক্ষীরার পাঁচ জায়গায় বোমা হামলা চালানো হয়। দীর্ঘ ১৫ বছর পর সাতক্ষীরার পাঁচটি মামলার রায় দেওয়া হলো। এ ছাড়াও, ২০০৭ সালে সাতক্ষীরা থানার তৎকালীন ওসি গোলম মোহাম্মদ বাদী হয়ে এ ঘটনায় ২৩ জনকে আসামি করে মামলা করেন। সেই মামলার সব আসামিকে আজ আদালত বেকসুর খালাস ঘোষণা করেছেন।

সাতক্ষীরা জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট আব্দুস সামাদ বলেন, ‘২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট দেশের ৬৩টি জেলায় একসঙ্গে বোমা হামলা চালায় জেএমবি। এর মধ্যে সাতক্ষীরা শহরের শহীদ রাজ্জাক পার্ক, জেলা জজ আদালত চত্বর, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত চত্বর, বাস টার্মিনাল ও খুলনা মোড়ে একযোগে বোমা হামলা চালানো ও নিষিদ্ধ লিফলেট ছড়ানো হয়। ঘটনার দিনই সাতক্ষীরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বোমা হামলাকারী শহরতলীর বাঁকালের নাসিরুদ্দিন দফাদারকে প্রত্যক্ষদর্শী বাঁকাল ইসলামপুর চরের পকেটমার রওশানের বিবরণ মতে গ্রেপ্তার করা হয়। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী সাতক্ষীরার রসুলপুরে জেএমবির ঘাঁটি চিহ্নিত করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে ২০০৫ সালে পাঁচটি মামলা দায়ের করে।’

‘পরবর্তীতে ২০০৭ সালে সাতক্ষীরা সদর থানার ওসি গোলাম মোহাম্মদ বাদী হয়ে আরও একটি মামলা দায়ের করেন। এসব মামলায় ১৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদেরকে ঢাকায় জেআইসিতে (জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেল) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঠানো হয়। সেখানে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়া ছাড়াও জেএমবির বহু গোপন তথ্য জানায় তারা। পরে তাদের ফিরিয়ে আনা হয় সাতক্ষীরায়। গ্রেপ্তারকৃত মনোয়ার হোসেন উজ্জ্বল ২০১১ সালের জুনে উচ্চ আদালত থেকে জামিন পেয়ে পালিয়ে যান। গ্রেপ্তার হওয়া সব আসামিই সাতক্ষীরার আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।  গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে বাঁকাল ইসলামপুরের নাসিরুদ্দিন দফাদার ২০১৮ সালের ২৬ ডিসেম্বর মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণজনিত কারণে সাতক্ষীরা কারাগারে মারা যান’, বলেন তিনি।

অ্যাডভোকেট আব্দুস সামাদ আরও বলেন, ‘আসামিদের মধ্যে শায়খ রহমান, বাংলা ভাই ও আতাউর রহমান সানির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ায় তাদেরকে এসব মামলার আসামির তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়। ২০০৬ সালের ১৩ মার্চ সিআইডি এসব মামলায় ১৯ জন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়। ২০০৭ সালে দায়ের করা মামলাটিতে ২৩ জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। ২০০৮ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতে এসব মামলার বিচারকাজ শুরু করেন।’

সাতক্ষীরা আদালতের পুলিশ পরিদর্শক অমল কুমার রায় জানান, আজ সকালে সাতক্ষীরা জেলা কারাগার থেকে আদালতে নেওয়া হয় মাহাবুবর রহমান, সাইফুল ইসলাম, ভারতীয় নাগরিক গিয়াসউদ্দিন, বিল্লাল হোসেন ওরফে আব্দুল্লাহ, হাবিবুর রহমান ওরফে ইসমাইল, মনিরুজ্জামান মুন্না, সাইফুল ওরফে আসাদুজ্জামান, হাজারী ওরফে সাঈদ, খালিদ হোসেন ওরফে মিন্টু, শামীম হোসেন ওরফে গ্যালিব, ওবায়দুল ইসলাম, রিয়াজুল ইসলাম, আনিসুর রহমান ওরফে ইসমাইল, আলমগীর হোসেন, আব্দুল আহাদ, আশরাফ আলী ও মামুনকে। এ ছাড়াও, জামিনে থাকা সাতক্ষীরা সদরের খড়িবিলার মমতাজ উদ্দিন ও আশাশুনির কুল্লার নূর আলী মেম্বারও আদালতে হাজির হন।

তিনি আরও জানান, এ মামলার আসামি সদর উপজেলার পাথরঘাটা গ্রামের ফখরুদ্দিন রাজি, সাতক্ষীরা সদরের সাতানির আবুল খায়ের, কলারোয়ার পাটুলি গ্রামের নাঈমুদ্দিন পলাতক রয়েছেন।

Comments

The Daily Star  | English

JP central office vandalised, set ablaze

A group of unidentified people set fire to the central office of Jatiyo Party in Dhaka's Kakrail area this evening

1h ago