‘ভোট আগে থাকতি কইরে ফেলতি হবে, সেন্টারে যায়ে ভোট হবে না’
আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে ভোট দেবে না এমন ভোটারদের ভয়ভীতি দেখিয়ে কেন্দ্রে যেতে বাধাসহ ঘরেই আটকানোর পরিকল্পনা করেছেন চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন।
একইসঙ্গে ভোটের আগের রাতে কীভাবে নৌকা মার্কায় ভোট দিতে হবে সেই কৌশলও কর্মীদের শিখিয়ে দিয়েছেন তিনি।
আলমডাঙ্গা পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী হাসান কাদির আয়োজিত কর্মীসভায় দেওয়া বক্তব্যে এই পরিকল্পনা তুলে ধরেন তিনি।
গত শুক্রবার আলমডাঙ্গা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যালয়ে এই কর্মীসভা হয় বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
সভায় আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাসান কাদির গনু, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) ইয়াকুব আলী ও আলমডাঙ্গা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি রিয়াদ হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
দেলোয়ার হোসেনের বক্তব্যের ১ মিনিট ৫৭ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ক্লিপ গতকাল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
ভিডিও ক্লিপে দেখা যায় তিনি আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলছেন। তিনি বলেন, ‘ভোট করার কায়দা আছে, অনেক কায়দা আছে। ভোট আগে থাকতি কইরে ফেলতি হব, সেন্টারে (কেন্দ্রে) যায়ে ভোট হবে না। এটা বিএনপির লোক, এটা জামায়াতের লোক। আমি ওই লোককে ব্যারিকেড দিয়ে ভোট আটকে দেব। আমরা নৌকাকে ভোট দিয়ে দেব। তাহলে কি হবে জানেন? বিএনপি-জামায়াতের যারা ভোট দিতে যাতি পাইরল না, আমাদের যে ৫০০ ভোট, ৫০০ ভোটই থেকে গেল। ভোটে অনেক কৌশল আছে। কৌশলগতভাবে আগালে বিপুল ভোটে জয়ী হবেন।’
এসময় প্রতিদ্বন্দ্বী মেয়র প্রার্থীদের ঠেকাতে কৌশল শিখিয়ে দেন দেলোয়ার। তিনি বলেন, ‘আমরা এখানে পরিশ্রম করছি কিসির জন্যি? ভোটের জন্যি। এই ভোটগুলো কীভাবে বাড়ির কাছে আটকে দেব? গলির মধ্যি জামাত-বিএনপি। টুক করে ভোটের আগের রাত্রি গলির মধ্যি বুলে আসতি হবে, তুই বাড়ির মধ্যিতি নড়বিনে। নড়লি তোর খবর আছে এবং তুই হচ্ছে রাজাকার, তুই হচ্ছে জামাত। ভোট করার কায়দা আছে, অনেক কায়দা আছে। ভোট আগে থাকতি কইরে ফেলতি হবে। সেন্টারে যায়ে ভোট হবে না।’
এ সম্পর্কে জানতে চাইলে দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘ভিডিওর বক্তব্য রাখা ব্যক্তিটি আমি। কিন্তু আমার বক্তব্য সরিয়ে নতুন করে বক্তব্য বসানো হয়েছে।’
‘আমি এ ধরনের কথা বলিনি। শত্রুতা করে কেউ এসব করছেন’, যোগ করেন তিনি।
স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী সবেদ আলী বলেন, ‘আমি তার দেওয়া হুমকিতে ভয় পাই না। আলমডাঙ্গার মানুষ ভালোবেসে আমাকে ভোট দেবে।’
বিএনপির মেয়র প্রার্থী মীর মহিউদ্দিন বলেন, ‘মানুষ এখন অনেক সচেতন। কারও হুমকিতে তারা বাড়িতে বসে থাকবে না।’
এ বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা তারেক আহমেদ বলেন, ‘ওই বিষয়ে এখনও কেউ অভিযোগ করেনি। ভোট যাতে অবাধ ও গ্রহণযোগ্য হয় সেজন্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।’
Comments