তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নিতে দ্বিধায় ভোগেন মুমিনুল
ফলাফল নির্ধারণে অধিকাংশ খেলাতে কোচ-ম্যানেজারদের ভূমিকা থাকে প্রবল। সেখানে কিছুটা ব্যতিক্রম ক্রিকেট। মাঠে অধিনায়ককেই প্রায় সব সিদ্ধান্ত নিতে হয়। যে কারণে পরিস্থিতির দাবীতে হুটহাট কিছু সিদ্ধান্তও নিতে হয় তাদের। কিন্তু টেস্ট দলের নেতৃত্ব পাওয়ার পর ঠিক এমন ধরণের তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নিতে দেখা যায়নি মুমিনুল হককে। আসলে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নিতে বড় দ্বিধায় ভোগেন তিনি। রাখঢাক না রেখে নিজেই স্বীকার করেছেন এ বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।
চট্টগ্রাম টেস্টে অবিশ্বাস্যভাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হেরে যায় বাংলাদেশ। প্রথম চার দিন একচ্ছত্র প্রাধান্য বিস্তার করে শেষ দিনে হেরে যায় দলটি। অথচ আগের দিন টপ অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে কোণঠাসা ছিল ক্যারিবিয়ানরা। শেষ দিনে লক্ষ্যটাও ছিল বিশাল। কিন্তু প্রথম দুই সেশনে কোনো উইকেটই তুলে নিতে পারেনি বাংলাদেশ। অথচ ব্রেকথ্রু আনতে ভিন্ন কোনো সিদ্ধান্ত নিতে দেখা যায়নি মুমিনুল। ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বল করিয়েছেন চার বোলারকে দিয়েই। নিজেও আসেননি। সবমিলিয়ে মাঠে তার শরীরী ভাষাও ছিল দুর্বল। তার অধিনায়কত্ব নিয়ে ব্যবচ্ছেদ শুরু হয় তখন থেকেই।
মিরপুর টেস্ট শুরুর আগে ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরা হয় সে বিষয়টি। সেখানেই তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নিতে না পারার কথা স্বীকার করেন অধিনায়ক, 'দেখেন এগুলো তো তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত। এগুলো নিয়ে আসলে অতো বেশি কথা বলার কিছু নাই। আমার কাছে মনে হয় তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্তগুলা মাঝে মাঝে দ্বিধান্বিত হয়ে যাই। খুব কম সময় থাকে সিদ্ধান্তগুলো নেয়ার জন্য। তো এগুলো নিয়ে আপনার অত বেশি কথা বলার কিছু নাই। আমার কাছে যেটা মনে হয় যে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্তগুলো ওভাবেই নিতে হবে।'
মুমিনুলের ক্ষেত্রে বিষয়টি অবশ্য স্বাভাবিকই। কারণ অধিকাংশ ক্ষেত্রে নেতৃত্ব জিনিসটা সহজাত। কেউবা নেতৃত্ব দিতে দিতে শিখেন। তার একটিও নন মুমিনুল। ব্যক্তিগতভাবে বেশ অন্তর্মুখী। আর বয়স ভিত্তিক দল থেকেও নেতৃত্ব দেওয়ার নজির নেই তার। এমনকি ঘরোয়া ক্রিকেটে খুব বেশি দিন হয়নি অধিনায়কের ভূমিকায় দেখা যাচ্ছে তাকে। অভিজ্ঞতার ডালি বেশ ছোটই তার। সেখানে হুট করেই তার কাঁধে পুরো বাংলাদেশ দলের অভিজাত সংস্করণের দায়িত্বটা দেওয়া হয় তাকে। আর শুরু থেকেই কঠিন পরীক্ষায় পড়েছেন তিনি।
মূলত সাকিব আল হাসান নিষিদ্ধ হওয়ার পর বেশ কঠিন সময়ে বিকল্প না পেয়ে তখন অধিনায়কের দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয় মুমিনুলের কাঁধে। দেশ সেরা টেস্ট ক্রিকেটার হওয়ার কারণেই হয়তো দেওয়া হয়। কিন্তু শুরু থেকেই সিনিয়র খেলোয়াড়দের পরামর্শটা বেশ মিস করেছেন। সাকিব নিষিদ্ধ। মাহমুদউল্লাহ দলের বাইরে। তামিম ছিলেন আসা যাওয়ার মধ্যে। আর মুশফিক যেন থেকেও নেই। সবমিলিয়ে যেন কঠিন সময়ই পার করছেন মুমিনুল।
Comments