আগের রাতে ভোট দেওয়ার কৌশল শেখানো সেই আ. লীগ প্রার্থীকে শো কজ

বিরোধী দলের ভোটারদের ভয়ভীতি দেখিয়ে কেন্দ্রে যেতে বাধা দেওয়া এবং ভোট কারচুপির পরিকল্পনা করে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতির দেওয়া বক্তব্যকে কেন্দ্র করে আলমডাঙ্গা পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
Kushtia.jpg-1.jpg
আলমডাঙ্গা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

বিরোধী দলের ভোটারদের ভয়ভীতি দেখিয়ে কেন্দ্রে যেতে বাধা দেওয়া এবং ভোট কারচুপির পরিকল্পনা করে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতির দেওয়া বক্তব্যকে কেন্দ্র করে আলমডাঙ্গা পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা তারেক আহমেদ দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ ও ভিডিও ক্লিপ দেখে আওয়ামী লীগের মেয়র পদপ্রার্থী হাসান কাদিরকে নোটিশ পাঠানো হয়েছে। তার কাছে কেউ কোনো লিখিত অভিযোগ করেনি। আজকের মধ্যে নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, ‘আপনার সমর্থনের আয়োজিত শ্রমিক সমাবেশে আলমডাঙ্গা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন “ভোট আগে থাকতি কইরে ফেলতি হবে, সেন্টারে যায়ে ভোট হবে না” সংক্রান্ত বক্তব্য রেখেছেন। উক্ত অনুষ্ঠানে আপনি মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। নির্বাচনকালীন এ ধরনের সভা সমাবেশ আয়োজন পৌরসভা (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালা ২০১৫ এর স্পষ্ট লঙ্ঘন। এ সংক্রান্ত প্রকাশিত সংবাদ ও ভিডিও ক্লিপের বিষয় ১১ ফেব্রুয়য়ারি অফিস চলাকালে লিখিত ব্যাখ্যা প্রদান করতে বলা হলো। অন্যথায় আপনার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

হাসান কাদির নোটিশ পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন। তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমি আমার বক্তব্য রেডি করেছি, যথা সময়ে জমা দেবো।’

এ বিষয়ে বিএনপি’র মেয়র প্রার্থী মীর মহিউদ্দিন বলেন, বর্তমানে যে প্রক্রিয়ায় ভোট হচ্ছে তাতে এ ধরনের বক্তব্যে অবাক হওয়ার কিছু নেই। অভিযোগ করেও লাভ নেই।

গত শুক্রবার আলমডাঙ্গা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যালয়ে আয়োজিত কর্মীসভায় দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘ভোট করার কায়দা আছে, অনেক কায়দা আছে। ভোট আগে থাকতি কইরে ফেলতি হব, সেন্টারে (কেন্দ্রে) যায়ে ভোট হবে না। এটা বিএনপির লোক, এটা জামায়াতের লোক। আমি ওই লোককে ব্যারিকেড দিয়ে ভোট আটকে দেবো। আমরা নৌকাকে ভোট দিয়ে দেবো। তাহলে কি হবে জানেন? বিএনপি-জামায়াতের যারা ভোট দিতে যাতি পাইরল না, আমাদের যে ৫০০ ভোট, ৫০০ ভোটই থেকে গেল। ভোটে অনেক কৌশল আছে। কৌশলগতভাবে আগালে বিপুল ভোটে জয়ী হবেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এখানে পরিশ্রম করছি কিসির জন্যি? ভোটের জন্যি। এই ভোটগুলো কীভাবে বাড়ির কাছে আটকে দেবো? গলির মধ্যি জামাত-বিএনপি। টুক করে ভোটের আগের রাত্রি গলির মধ্যি বুলে আসতি হবে, তুই বাড়ির মধ্যিতি নড়বিনে। নড়লি তোর খবর আছে এবং তুই হচ্ছে রাজাকার, তুই হচ্ছে জামাত। ভোট করার কায়দা আছে, অনেক কায়দা আছে। ভোট আগে থাকতি কইরে ফেলতি হবে। সেন্টারে যায়ে ভোট হবে না।’

তার দেওয়া এক মিনিট ৫৭ সেকেন্ডের বক্তব্যের ভিডিও ক্লিপটি মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। সভায় আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাসান কাদির গনু, উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইয়াকুব আলী ও আলমডাঙ্গা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি রিয়াদ হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি আলমডাঙ্গা রসভার সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

আরও পড়ুন

‘ভোট আগে থাকতি কইরে ফেলতি হবে, সেন্টারে যায়ে ভোট হবে না’

Comments

The Daily Star  | English

Ex-public administration minister Farhad arrested

Former Public Administration minister Farhad Hossain was arrested from Dhaka's Eskaton area

3h ago