‘আশা’র প্রতিষ্ঠাতা সফিকুল হক চৌধুরীর মৃত্যুতে মুহাম্মদ ইউনূসের শোক
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা, বেসরকারি সংস্থা ‘আশা’র প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট ও চেয়ারম্যান সফিকুল হক চৌধুরীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
আজ শুক্রবার এক শোকবার্তায় তিনি জানান, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ‘আশা’র প্রতিষ্ঠাতা সফিকুল হক চৌধুরী আকস্মিকভাবে আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। তার মৃত্যুতে দেশে এবং বিদেশের অসংখ্য গুণগ্রাহী শোকাহত।
ক্ষুদ্রঋণের জগতে তিনি আকস্মিকভাবে প্রবেশ করেছিলেন। এ ব্যাপারে তার কোনো প্রাতিষ্ঠানিক বা একাডেমিক প্রস্তুতি ছিল না। কিন্তু তাকে তিনি কোনো বাধা হিসাবে গ্রহণ করেননি। যে কাজের জন্য তিনি মনস্থির করেছিলেন, সে-কাজে তিনি দৃঢ়ভাবে এগিয়ে গেছেন। তার সীমাহীন সাহসই ছিল তার মূল শক্তি। তার সাহস, নেতৃত্ব এবং ব্যবস্থাপনার দক্ষতা তিনি দেরীতে ক্ষুদ্রঋণের কর্মকাণ্ডে যোগ দিলেও তাকে অতিদ্রুত দেশের সবচাইতে অগ্রগামী দুটি প্রতিষ্ঠানের কাতারে নিয়ে যেতে পেরেছিল।
তিনি শুধু দ্রুত গতিতে দেশের আনাচে-কানাচে ক্ষুদ্রঋণ সম্প্রসারণ করতে পেরেছিলেন তা-ই নয়, তিনি অসম্ভব সাহস নিয়ে নানা প্রতিকূলতা অতিক্রম করার জন্য কল্পনাতীত রকমের প্রাতিষ্ঠানিক আয়োজনে ক্ষুদ্রঋণ সঠিক মানুষের হাতে পৌঁছানোর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে গেছেন এবং তিনি সফল হয়েছেন।
দেশে ‘আশা’র মতো এই বিশাল কর্মযজ্ঞ পরিচালনার পরেও তিনি পৃথিবীর নানা প্রত্যন্তে বিস্তৃত বহু দেশে ‘আশা’র কাঠামোতে ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠা করেছেন। বহু আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথভাবে নানা দেশে ক্ষুদ্রঋণ পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব নিয়েছেন। ক্ষুদ্রঋণে মোটেও উৎসাহী ছিলেন-না দেশ বিদেশের এমন বহু একাডেমিক এবং দাতা-সংস্থার নেতৃবৃন্দ, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রধানগণকে তিনি ক্ষুদ্রঋণে বিশ্বাসী করে তাদের সহযোগী করে নিয়েছিলেন।
দেশে-বিদেশে তার কর্মসূচির উপকারভোগী বিশাল জনগোষ্ঠী, তার নেতৃত্বে পরিচালিত অসংখ্য কর্মীবাহিনী, পৃথিবীর নানা দেশে ছড়ানো অসংখ্য কর্মীবৃন্দ, যারা তার লক্ষ্য বাস্তবায়নে নিয়োজিত আছেন এবং তার বন্ধুবর্গের সঙ্গে তার গুণমুগ্ধ হিসেবে আমিও তার অবদানের কথা স্মরণ করছি। সবার সঙ্গে এক হয়ে তার আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। এর সঙ্গে তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি আমার সমবেদনা প্রকাশ করছি।
তার মৌলিক অবদানের জন্য দেশের সব মানুষ তার প্রতি চিরকৃতজ্ঞ থাকবে।
Comments