বরিশাল জমজম নার্সিং ইনস্টিটিউট

‘ভয়-আতঙ্কে’ ৪ শিক্ষার্থী হাসপাতালে

ZamZam.jpg
বরিশাল জমজম নার্সিং ইনস্টিটিউট। ছবি: সংগৃহীত

অজানা আতঙ্কে ভুগে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন বরিশালের একটি নার্সিং ইনস্টিটিউটের চার শিক্ষার্থী। গতকাল রাত সাড়ে ৮টার দিকে ইনস্টিটিউটের মোট ২০ শিক্ষার্থীকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে হাসপাতাল ছাড়েন ১৬ জন।

বরিশাল নগরীর রুপাতলীর জমজম নার্সিং ইন্সটিটিউট কর্তৃপক্ষ জানায়, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শিক্ষার্থীরা হলেন- নার্সিং অনুষদের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী জামিলা আক্তার, সেতু দাস এবং প্রথম বর্ষের তামান্না ও বৈশাখী।

ভয়-আতঙ্কে নগরীর সিঅ্যান্ডবি এলাকার ওই প্রতিষ্ঠানের ছয়তলা বিশিষ্ট হোস্টেলের সব শিক্ষার্থী হোস্টেল ছাড়লে কর্তৃপক্ষ আগামী শুক্রবার পর্যন্ত ইনস্টিটিউট বন্ধ ঘোষণা করেছে।

ইনস্টিটিউটের কো-অর্ডিনেটর মো. জুবায়ের বলেন, ‘গত ৪-৫ দিন ধরে এই সমস্যা। হোস্টেলের ছাত্রীরা রাতে ভূতের ভয় পেয়েছে বলে আমাদের জানায়। তারা মিলাদ পড়াতে চাইলে আমরা ব্যবস্থা করি, পরে হুজুর আনানো হয়। শুক্রবার সন্ধ্যায় আরও দুই ছাত্রী ভয় পাওয়ার কথা জানালে হোস্টেলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। রাতে বেশ কয়েকজন অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের হাসপাতালে নেওয়া হয়, বর্তমানে চার জন হাসপাতালে ভর্তি আছেন।’

ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষ জানায়, গত ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে ৪৫ জন শিক্ষার্থীর পরীক্ষা চলছিল এবং আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে। এর মধ্যেই এই ঘটনা ঘটেছে।

হোস্টেলের বাবুর্চি খালেদা বলেন, ‘ভূত আতঙ্কে একে একে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন ছাত্রীরা। তাদের হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।’

ইন্সটিটিউটের নার্সিং ইনস্ট্রাকটর জালিস মাহামুদ বলেন, ‘কোনো কারণে ছাত্রীরা ভয় পেয়েছেন এবং অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তারা হোস্টেলে ভূত দেখার কথা বললেও বিষয়টি আসলে তেমন কিছু নয়।’

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক শিক্ষার্থীর মা জানান, তার মেয়ে ভয় পেয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর বেশী কিছু তিনি বলতে চাননি।

বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নারী নার্সারি ওয়ার্ডের চিকিৎসক ডা. সোলায়মান বলেন, ‘ওই চার ছাত্রী এক কক্ষে ছিলেন এবং একত্রে ভয় পেয়েছেন। আমরা এটাকে অ্যাংজাইটি ডিজঅর্ডার বলি। তাদের চিকিৎসা চলছে। আশা করছি দ্রুত তারা সুস্থ হয়ে উঠবেন।’

হাসপাতালের সহকারী রেজিস্ট্রার ডা. মোহাম্মদ শামীম বলেন, ‘ছাত্রীরা কিছু মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন। তবে তারা ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠবেন বলে আশা করছি। এটা প্যানিক ডিজঅর্ডারও হতে পারে।’ 

জমজম নার্সিং ইন্সটিটিউটের চেয়ারম্যান মাসুদুল আলম খান বলেন, ‘হোস্টেলের পাঁচ ও ছয়তলায় ৪৫ জন ছাত্রী থাকেন। ৫-৬ দিন ধরে তারা অভিযোগ করে আসছিলেন যে, ছাদের ওপরে কেউ হাঁটাহাঁটি করে, কেউ ইট মারে এবং তারা সে শব্দ শুনতে পান।’

তিনি আরও বলেন, ‘শুক্রবার সন্ধ্যায় দেখি ভয়-আতঙ্কে সবাই হোস্টেল ছেড়ে বেড়িয়ে আসছেন, কয়েকজন অজ্ঞান হয়ে পড়েছেন। পরে তাদের হাসপাতালে নেওয়া হয়।’

Comments

The Daily Star  | English

JP central office vandalised, set ablaze

A group of unidentified people set fire to the central office of Jatiyo Party in Dhaka's Kakrail area this evening

1h ago