মিয়ানমারে আন্দোলনরত চিকিৎসকদের খুঁজছে পুলিশ, এলাকাবাসীর প্রতিরোধ
সেনা অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী প্রতিবাদ আন্দোলন চালানো সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে অভিযান চালাতে শুরু করেছে মিয়ানমার পুলিশ।
গতকাল শুক্রবার মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম ইরাবতি জানায়, গত ৩ ফেব্রুয়ারি ইয়াঙ্গুন, মান্দালয় এবং অন্যান্য শহরের সরকারি হাসপাতালের কয়েকশ চিকিৎসক ও নার্স এই প্রতিবাদ আন্দোলন শুরু করেছিলেন।
তাদের সঙ্গে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ আন্দোলনে যোগ দেন। ব্যাংক ও সামরিক মালিকানাধীন সংস্থাসহ সরকারি মন্ত্রণালয় ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কয়েক হাজার কর্মীও এই আন্দোলনে যোগ দেন।
গত শুক্রবার কোনো ওয়ারেন্ট ছাড়াই মান্দালয়ে পুলিশ এই আন্দোলনকে সমর্থন করার জন্য মান্দালে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিসিনের বিভাগের অধ্যাপক খিং মং লুইনের বাড়িতে অভিযান চালায়।
ওই অধ্যাপকের মেয়ে একটি ফেসবুক লাইভে এসে সেই পুলিশী তাণ্ডব দেখিয়েছে। ফেসবুক লাইভে দেখা গেছে, তাদের বাবাকে গ্রেপ্তার করার চেষ্টা করা হচ্ছে কিন্তু রাস্তায় স্থানীয়রা উপস্থিত হয়ে, হাড়ি-পাতিল বাজানোর পরে পিছু হটে।
বৃহস্পতিবার রাতে, পুলিশ হাসপাতালের আন্দোলনকে সমর্থন করার অভিযোগে ম্যাগউই অঞ্চলের অংলান হাসপাতালে মেডিকেল সুপারিন্টেন্ডেন্টকেও গ্রেপ্তারের চেষ্টা করে।
তবে, অংলান বাসিন্দারা তাকে গ্রেপ্তার থেকে রক্ষা করতে পেরেছিলেন।
শুক্রবার উত্তর শান স্টেটের ল্যাসিও হাসপাতালের সার্জন ডা. লিন লেটিয়ার দ্য ইরাবতিকে জানান, বৃহস্পতিবার রাত দশটায় দুজন লোক তার বাসায় গিয়ে খোঁজ করেন। সেসময় তিনি বাড়ির বাইরে ছিলেন।
তিনি বলেন, 'নাগরিক হিসেবে আমাদের মত প্রকাশের অধিকার আছে। তারা বিনা কারণে কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারে না। তারা আইন ভঙ্গ করছে। পুলিশ নাগরিকদের বাড়িতে ওয়ারেন্ট ছাড়াই প্রবেশ করছে। এটা লজ্জাজনক, এটা অপরাধ।'
তিনি জানান, লাসিওর সরকারি হাসপাতালের কার্যক্রম এখন বন্ধ। কারণ কর্মীরা কেউ কর্মক্ষেত্রে আসছেন না। নির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় না আসা পর্যন্ত এই আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
রাজনৈতিক বন্দিদের জন্য সহায়তা সংস্থা জানিয়েছে, গত ১ ফেব্রুয়ারি সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে দেশটির সরকারি কর্মকর্তা, জাতীয় নেতাদের, নির্বাচন কমিশনার, রাজনৈতিক কর্মী, বৌদ্ধ ভিক্ষু, লেখক ও বিক্ষোভকারীসহ ২৪১ জনকে রাজনৈতিক বন্দি হিসেবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সেনা অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে কয়েক হাজার মানুষ প্রতিদিন দেশটির বিভিন্ন শহরে রাস্তায় নামছে। বাসিন্দারা প্রতিদিন রাত আটটায় হাততালি দিয়ে, গাড়ির হর্ন ও হাড়ি-পাতিল বাজিয়ে সেনা অভ্যুত্থানের প্রতিবাদ জানাচ্ছেন।
Comments