ক্রোতোনেকে গুঁড়িয়ে ইব্রার রেকর্ডের আরও কাছে রোনালদো

ronaldo ibra
ছবি: টুইটার

কেবল ক্রোতোনের বিপক্ষে গোল করাই বাকি ছিল। ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো সেই শূন্যস্থান পূরণ করে ফেললেন। চমৎকার দুটো হেডে আট মিনিটের ব্যবধানে দুবার কাঁপালেন দলটির জাল। তাতেই গড়া হয়ে গেল দারুণ একটি কীর্তি। বর্তমানে ইতালিয়ান সিরি আতে খেলা সবগুলো দলের বিপক্ষে গোল করার স্বাদ নেওয়া হয়ে গেল পর্তুগিজ তারকার।

২০১৮ সালের বিশ্বকাপের পর রিয়াল মাদ্রিদ ছেড়ে জুভেন্টাসে পাড়ি জমান রোনালদো। গোলক্ষুধা সঙ্গে করেই গায়ে জড়ান তুরিনের বুড়িদের জার্সি। এরপর ক্ষুধা নিবারণে একের পর এক প্রতিপক্ষকে গুঁড়িয়ে দেওয়া। ২০১৮-১৯ মৌসুমে থিতু হতে খানিকটা সময় লাগায় সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৪৩ ম্যাচে ২৮ গোল নিয়ে তুষ্ট থাকতে হয় তাকে।

পরের মৌসুমের শুরুতেও ‘গোলমেশিন’ রোনালদোকে পাওয়া যায়নি। তবে মৌসুমের দ্বিতীয়ার্ধে বিপক্ষ দলগুলোর জন্য মূর্তিমান আতঙ্ক হিসেবে আবির্ভূত হন তিনি। এক পর্যায়ে তার সিরি আর সর্বোচ্চ গোলদাতা হওয়ার ও ইউরোপিয়ান গোল্ডেন শ্যু জেতার ক্ষীণ সম্ভাবনাও উঁকি দিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত লিগে তিনি থামেন ৩১ গোল করে।

এবারের ২০২০-২১ মৌসুমেও দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলেছেন ৩৫ বছর বয়সী রোনালদো। সোমবার রাতে লিগে তার জোড়া গোলে ক্রোতোনেকে লিগের ম্যাচে ৩-০ গোলে হারিয়েছে শিরোপাধারী জুভেন্টাস। অসাধারণ নৈপুণ্যে তিনি উঠে গেছেন আসরের সর্বোচ্চ গোলদাতাদের তালিকার শীর্ষে। ১৯ ম্যাচে তার গোল ১৮টি। পেছনে পড়ে যাওয়া ইন্টার মিলান স্ট্রাইকার রোমেলু লুকাকুর নামের পাশে রয়েছে ১৭ গোল।

নিজেদের মাঠ আলিয়াঞ্জ স্টেডিয়ামে ক্রোতোনের বিপক্ষে গোল উদযাপন করে একটি চক্র পূরণ করেছেন রোনালদো। চলতি মৌসুমে ইতালির শীর্ষ লিগে খেলছে এমন কোনো ক্লাব তার বিপক্ষে জাল অক্ষত রাখতে পারেনি। তবে একটু আক্ষেপ হয়তো থাকতে পারে সিআর সেভেনের। জুভেন্টাসে নাম লেখানোর পর থেকে সিরি আতে যতগুলো ক্লাবের মুখোমুখি হয়েছেন, একটি বাদে সবগুলোর গোলরক্ষককেই ফাঁকি দিতে পেরেছেন।

সেই দলটির নাম? চিয়েভো ভেরোনা। ২০১৮-১৯ মৌসুমে সিরি বিতে অবনমন হয়েছিল তাদের। এখনও তারা ইতালির পেশাদার ফুটবলের দ্বিতীয় স্তরেই খেলছে।

রোনালদোকে হাতছানি দিচ্ছে দারুণ একটি রেকর্ড। যা নিজের করে নিতে হলে তাকে পেরিয়ে যেতে হবে ‘যাযাবর’ জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচকে। সুইডেনের এই স্ট্রাইকার ইউরোপের বিভিন্ন লিগ মিলিয়ে ৭৯টি ক্লাবের বিপক্ষে গোল করেছেন। যা এই শতাব্দীতে রেকর্ড।

বর্তমানে ইতালির আরেক পরাশক্তি এসি মিলানের হয়ে খেলা ইব্রা অতীতে মাতিয়েছেন ডাচ লিগ, স্প্যানিশ লা লিগা, ফরাসি লিগ ওয়ান ও ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ। সিরি আতেও তার আগের পারফরম্যান্স ঈর্ষান্বিত করবে যেকোনো ফুটবলারকে। ২০০৪ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে এসি মিলান, তাদের শহর প্রতিদ্বন্দ্বী ইন্টার মিলান ও ইতালির সফলতম ক্লাব জুভেন্টাসে খেলার অভিজ্ঞতা পেয়ে গিয়েছিলেন তিনি।

জুভদের হয়ে নতুন চ্যালেঞ্জ গ্রহণের আগে রোনালদোও নজর কাড়েন পর্তুগিজ লিগ, প্রিমিয়ার লিগ ও লা লিগায়। স্পেনে রিয়ালের হয়ে তো রীতিমতো অবিশ্বাস্য ছিলেন তিনি। লস ব্লাঙ্কোসদের ইতিহাসের সর্বোচ্চ গোলদাতা লিগে ৪৫০ গোল করেছিলেন মাত্র ৪৩৮ ম্যাচে! সবমিলিয়ে বিভিন্ন লিগে ৭৮টি ক্লাবের গোলপোস্ট ভেদ করেছেন তিনি।

ইব্রাহিমোভিচের চেয়ে ন্যূনতম ব্যবধানে পিছিয়ে থাকলেও শিগগিরই যে তা রোনালদোর পক্ষে ঘুচিয়ে ফেলা সম্ভব হচ্ছে না, তা বলাই বাহুল্য। সিরি আর সবগুলো দলের রক্ষণদেয়াল ফুটো করায় অন্তত আগামী মৌসুম পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকতে হবে তাকে। ততদিনে ৩৯ বছর বয়সী ইব্রা আবার ব্যবধান বাড়িয়ে না নিলেই হয়!

Comments

The Daily Star  | English

Govt decides to ban AL until completion of ICT trial

Law Adviser Prof Asif Nazrul said this at a press briefing after a special meeting of the advisory council tonight

1h ago