‘বুড়ো’ বলে সুয়ারেজকে বিদায় দিয়েছিল বার্সেলোনা

রাজসিক বিদায় তো দূরে থাক, উরুগুয়ের এই স্ট্রাইকার তখন রীতিমতো অসম্মানিত হয়েছিলেন। বার্সেলোনা ছাড়ার প্রায় ছয় মাস পর এমন দাবি করে মুখ খুলেছেন তিনি।
suarez atletico
ছবি: টুইটার

ক্লাবের ইতিহাসের তৃতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতা তিনি। লিওনেল মেসির সঙ্গে তার জুটি প্রতিপক্ষের বুকে কাঁপন ধরিয়েছে অসংখ্যবার। অথচ লুইস সুয়ারেজ ন্যু ক্যাম্প থেকে বিদায় নিয়েছিলেন চাপা কষ্ট নিয়ে, অশ্রুসিক্ত চোখে! রাজসিক বিদায় তো দূরে থাক, উরুগুয়ের এই স্ট্রাইকার তখন রীতিমতো অসম্মানিত হয়েছিলেন। বার্সেলোনা ছাড়ার প্রায় ছয় মাস পর এমন দাবি করে মুখ খুলেছেন তিনি।

রোনাল্ড কোমান বার্সার দায়িত্ব নেওয়ার পর বিদায় বলে দেওয়া হয় সুয়ারেজকে। নেদারল্যান্ডসের এই কোচের পরিকল্পনায় না থাকায় একরকম বাধ্য হয়েই দল ছাড়তে হয় তাকে। গত সেপ্টেম্বরে নতুন ঠিকানা হিসেবে তিনি বেছে নেন স্পেনের আরেক পরাশক্তি অ্যাতলেতিকো মাদ্রিদকে।

কঠিন সেসব সময়ের স্মৃতি এখনও সুয়ারেজের মনে জ্বলজ্বলে। তাকে আগেভাগেই বাতিলের খাতায় ফেলে দেওয়া হয়েছিল বলে ফুটবল সাময়িকী ‘ফ্রান্স ফুটবল’কে জানিয়েছেন তিনি, ‘যে বিষয়টা আমাকে বিরক্ত করেছিল, তা হলো, তারা আমাকে বলেছিল আমি বুড়ো হয়ে গেছি এবং একটি বড় দলের আক্রমণভাগের নেতৃত্ব দিয়ে সর্বোচ্চ পর্যায়ে খেলার সামর্থ্য আর আমার নেই। এটা আমার একদমই পছন্দ হয়নি।’

‘যদি বার্সার মতো একটি ক্লাবের হয়ে তিন বা চার মৌসুমে আমি কিছু না করতাম, তাহলে ব্যাপারটা আমার বোধগম্য হতো। কিন্তু বার্সার হয়ে প্রতি মৌসুমে আমি ২০ গোলের বেশি করেছি। আমার পরিসংখ্যান বরাবরই ভালো ছিল। কেবল মেসির চেয়ে আমি পিছিয়ে ছিলাম।’

২০১৪ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত কাতালানদের জার্সিতে আলো ছড়ান সুয়ারেজ। সব ধরনের প্রতিযোগিতা মিলিয়ে তিনি করেন ১৯৮ গোল। অ্যাতলেতিকোর হয়েও জাল খুঁজে নেওয়ার অভ্যাস জারি রেখেছেন তিনি। চলমান লা লিগায় ১৬ গোল নিয়ে মেসির সঙ্গে যৌথভাবে সর্বোচ্চ গোলদাতাদের তালিকার শীর্ষে আছেন তিনি।

সুয়ারেজের অ্যাতলেতিকো লিগের পয়েন্ট তালিকাতেও রয়েছে সবার উপরে। অন্যদিকে, উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে যাওয়া বার্সেলোনা আছে পয়েন্ট তালিকার তিনে। দলটির বর্তমান স্কোয়াডের অনেকেই আশানুরূপ পারফর্ম করছেন না বলে মনে করছেন সুয়ারেজ। অথচ গোলের পর গোল করেও তাকে বিদায় নিতে হয়েছিল অসম্মানের পাত্র হয়ে, ‘আমরা এখন দেখতে পাই যে, বার্সার হয়ে খেলা সহজ নয়। অনেক খেলোয়াড়ই সেই মানে অনুসারে খেলছে না, যে প্রত্যাশায় তাদেরকে দলে নেওয়া হয়েছিল। আর আমি ছয় বছর বার্সায় থেকে একটি নির্দিষ্ট মান বজায় রেখেছিলাম এবং আমার কাছে যে চাহিদা ছিল, সেটা পূরণ করেছিলাম।’

‘বার্সার পরিস্থিতি পরিবর্তিত হয়ে গেছে এবং ক্লাবের পরিবর্তন দরকার। আমি এটা মানছি। কিন্তু যেভাবে বিষয়টা ঘটেছে (আমাকে বিদায় দেওয়া হয়েছে), সেটা আমাকে বিরক্ত করেছে। আমি মনে করি, আমার কিছুটা সম্মান প্রাপ্য ছিল।’

বার্সেলোনা কর্তৃপক্ষের আচরণে জেদ চেপে গিয়েছিল সুয়ারেজের মনে। তাই দেখিয়ে দেওয়ার তাড়না অ্যাতলেতিকোতে যোগ দেওয়ার শুরু থেকেই লালন করছেন তিনি, ‘এটা এমন একটা সিদ্ধান্ত ছিল, যেটার বিরোধিতা করা আমার পক্ষে সম্ভব ছিল না। আমার মনে হয়েছিল, আমাকে আর বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে না। তাই আমার আত্মসম্মানের সঙ্গে আমি নিজেকেই বলেছিলাম যে, আমি দেখিয়ে দিব আমার যোগ্যতা কী। অ্যাতলেতিকোতে যাওয়ার কারণ ছিল এটাই। তারা এমন একটা দল, যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারে এবং আমাকে আগ্রহী করেছিল।’

Comments

The Daily Star  | English

DMCH doctors threaten strike after assault on colleague

A doctor at Dhaka Medical College Hospital (DMCH) was allegedly assaulted yesterday after the death of a private university student there, with some of his peers accusing the physicians of neglecting their duty in his treatment

6h ago