ভালো পিচের সংজ্ঞা কী, ইংলিশ সাংবাদিককে পাল্টা প্রশ্ন অশ্বিনের
আহমেদাবাদে দুই দিনে শেষ হওয়া টেস্ট ম্যাচের পিচ নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে। ক্রিকেট সংশ্লিষ্ট অনেকে অভিযোগের সুরে বলছেন, কেবল উইকেটের সাহায্য নিয়েই ঘরের মাটিতে ভারত একের পর এক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করছে। এমন পরিস্থিতিতে বেজায় চটেছেন অফ স্পিনার রবীচন্দ্রন অশ্বিন। এই ভারতীয় তারকা ইংল্যান্ডের এক সাংবাদিককে পাল্টা প্রশ্ন ছুঁড়ে ‘ভালো’ পিচের সংজ্ঞা জানতে চেয়েছেন।
নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে ভারত ও ইংল্যান্ডের মধ্যকার সবশেষ টেস্টটির ফয়সালা হয় পাঁচ সেশনের একটু বেশি সময়ে। অতি টার্নিং উইকেটে রীতিমতো নাভিশ্বাস ছুটে যায় ব্যাটসম্যানদের। স্পিন স্বর্গে মাত্র ৮৪২ বলের মধ্যে ফল হয়ে যাওয়া ম্যাচের উইকেট তাই সমালোচকদের কাঠগড়ায়।
ম্যাচশেষে ভারতীয় অধিনায়ক বিরাট কোহলি অবশ্য উইকেট নয়, বরং দুই দলের ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতাকে দায়ী করেন। পরবর্তীতে তার সঙ্গে সুর মেলান রোহিত শর্মা। ওই পিচে আগ্রাসী ব্যাটিং করা এই ওপেনার বলেন, উইকেট বিভীষিকাময় ছিল না। অশ্বিনেরও একই কথা, ২২ গজে কোনো সমস্যা নেই, প্রশ্ন তোলা উচিত খেলার মান নিয়ে।
শনিবার ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে টেস্টে ৪০১ উইকেটের অধিকারী এই ঘূর্ণি জাদুকরের কাছে এক ইংলিশ সাংবাদিক জানতে চান, আহমেদাবাদের পিচ কি ‘ভালো মানের টেস্ট উইকেট’ ছিল? সঙ্গে আরও একটি প্রশ্ন জুড়ে দেন তিনি, ‘ব্যাট-বলের লড়াই’ কি আদৌ হয়েছে সেখানে?
জবাব না দিয়ে অশ্বিন বলেন, ‘আমার একটা পাল্টা প্রশ্ন আছে। ভালো ক্রিকেট পিচের সংজ্ঞা কী?’
প্রশ্নকর্তা অশ্বিনের মুখ থেকেই উত্তর জানতে চাইলে ঝাঁঝাল সুরে তিনি জানান, ‘বোলাররা খেলায় জিততে চায়। রান পেতে ব্যাটসম্যানদের ভালো ব্যাটিং করা দরকার। এটা নিয়ে কোনো প্রশ্ন তোলার নেই। ভালো পিচ বলতে কী বোঝায়? কে এই সংজ্ঞা দিবে? প্রথম দিনে সিম, তারপর ভালোভাবে ব্যাট করো এবং শেষ দুই দিনে স্পিন? কে এ সমস্ত নিয়ম তৈরি করে? আমাদের এটা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।’
সেখানেই থেমে যাননি আহমেদাবাদে ৭৪ রানে ৭ উইকেট নেওয়া এই স্পিনার, ‘আপনারা প্রশ্ন তুলছেন যে, এটা টেস্টের জন্য ভালো উইকেট কিনা। কিন্তু আমি ইংল্যান্ড থেকে আসা কোনো খেলোয়াড়ের পিচ নিয়ে সমস্যা দেখছি না। তারা উন্নতি করতে চায়। দেখে মনে হচ্ছে, তারা প্রতিযোগিতা করতে চায়।’
গত বছর নিউজিল্যান্ডে সফরে গিয়ে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে নাস্তানাবুদ হয়েছিল ভারত। পেসবান্ধব উইকেটে প্রথম ম্যাচটি চতুর্থ দিনে গড়ালেও দ্বিতীয়টি শেষ হয়েছিল তিন দিনে।
ওই প্রসঙ্গ টেনে সমালোচকদের এক হাত নেন অশ্বিন, ‘কেন যেন যখন তারা উইকেট নিয়ে কথা বলে, তখন এটা আমার কাছে হাস্যকর মনে হয়। আমাদের গণমাধ্যমের সর্বত্র তাদেরকে উদ্ধৃত করা হয় এবং এটাই হলো ইস্যু। এমন উদাহরণ রয়েছে, যখন আমরা নিউজিল্যান্ডে গিয়ে দুই টেস্ট মিলিয়ে পাঁচ দিনের মধ্যে হেরে গেছি (কিন্তু অভিযোগ করিনি)। আবার, দক্ষিণ আফ্রিকায় গিয়ে কোহলি বলেছে, এখানে আমরা পিচ নিয়ে কথা বলতে আসিনি। হ্যাঁ, এভাবেই আমাদের ক্রিকেট খেলতে শেখানো হয়েছে।’
Comments