বগুড়ায় ‘শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু’: গিনেস বুকে রেকর্ডের অপেক্ষা

বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি। ছবি: মোস্তফা সবুজ/ স্টার

বগুড়ার শেরপুর উপজেলার বালেন্দা গ্রামে এক শ বিঘা জমিতে দুই জাতের ধান লাগিয়ে তৈরি করা হয়েছে বঙ্গবন্ধুর সবচেয়ে বড় প্রতিকৃতি।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে এই পুরো প্রকল্পের ভাবনা, নকশা এবং বাস্তবায়ন করেছে এক্সপ্রেসিভ কমিউনিকেশনস লিমিটেড। আর অর্থায়ন করেছে ন্যাশনাল এগ্রিকেয়ার গ্রুপ।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, খালি চোখে বোঝা না গেলেও বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি দেখতে অনেকেই ভিড় করছেন। ড্রোন দিয়ে ছবি তুললে পুরো চিত্র বোঝা যাচ্ছে।

বালেন্দা গ্রামের কৃষক শাহীনুর সরকার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘এমন কাজ আমাদের এলাকায় হবে আমরা কেউ আগে চিন্তা করতে পারিনি। এটি দেখার জন্য অনেক মানুষ এখানে আসছেন। ধান দিয়ে এমন একজন মহামানবের ছবি তৈরি করায় আমরা গর্বিত।’

গত ২৯ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগের জনপ্রতিনিধিরা প্রকল্পটির উদ্বোধন করেন।

কর্তৃপক্ষের দাবি, সারাবিশ্বে শস্য দিয়ে তৈরি কোনো একক ব্যক্তির এটিই সবচেয়ে বড় ছবি। তাই গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। সব কিছু ঠিক থাকলে এই শস্যচিত্রটি বিশ্ব রেকর্ডের তালিকায় যুক্ত হবে।

বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি। ছবি: মোস্তফা সবুজ/ স্টার

প্রকল্পটির ব্যবস্থাপক এবং ন্যাশনাল এগ্রিকেয়ারের কর্মকর্তা কৃষিবিদ আসাদুজ্জামান ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু যেহেতু একজন কৃষকবান্ধব নেতা ছিলেন, তাই তার জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে তাকে সন্মান জানানোর জন্যই মূলত এই শিল্পকর্মটি করা হচ্ছে। পাশাপাশি এই শস্যচিত্রটি যাতে গিনেস বুকে জায়গা করে নিতে পারে, সেই চেষ্টা করা হচ্ছে। গিনেস কর্তৃপক্ষের সব শর্ত মেনে আমরা এক শ বিঘা জমিতে এই শিল্প কর্মটি করেছি।’

প্রকল্পটির উপব্যবস্থাপক আহসান কবির বলেন, ‘এ মাসের মাঝামাঝি সময়ে শস্যচিত্রটি পূর্ণাঙ্গ রূপ পাবে। সেই তথ্য-উপাত্ত আমরা গিনেস কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাব। গত ডিসেম্বরে প্রকল্পটির প্রাথমিক কাজ শুরু হয়। মূলত দুই রঙের ধান দিয়ে করা হচ্ছে এই শিল্পকর্মটি। এজন্য চীন থেকে আনা হয়েছে বেগুনি রঙের হাইব্রিড জাতের ধান এফ-১। ন্যাশনাল এগ্রিকেয়ারের সবুজ রঙের ধানটির নাম জনকরাজ।’

তিনি আরও বলেন, ‘গত ১ থেকে ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত স্থানীয় ১৪০ নারী শ্রমিক ধানের চারা রোপণ করেছেন। এর আগে বগুড়ার বিভিন্ন স্কুল-কলেজের এক শ শিক্ষার্থী ও বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোরের (বিএনসিসি) সদস্যরা শুকনো জমিতে প্রায় এক হাজার দুই শ খুঁটি পুঁতে প্রতিকৃতিটির লে-আউট করেন।’

প্রকল্পের কর্মকর্তারা বলেন, এই ১০০ বিঘা জমি কৃষকদের কাছ থেকে উপযুক্ত মূল্য দিয়ে সাত মাসের জন্য লিজ নেওয়া হয়েছে। এই ফসল উঠে গেলে কৃষকরা আবার তাদের জমি ফেরত পাবেন।

আহসান কবির বলেন, ‘আশেপাশের গ্রামের কৃষকদের কাছ থেকে নভেম্বর থেকে মে মাসের জন্য প্রতি বিঘা জমি নেওয়া হয়েছে আট হাজার ৯০০ টাকা দরে।’

পার্শ্ববর্তী ইতালি গ্রামের কৃষক হেলাল উদ্দিন এই প্রকল্পে এক সেশনের জন্য ৫৩ শতাংশ জমি দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘৫৩ শতাংশ জমি এক ফসলের জন্য বর্গা দিলে ১০ হাজার টাকার বেশি পেতাম না। সেখানে এখন পেয়েছি ১৪ হাজার টাকার বেশি।’

Comments

The Daily Star  | English

JP central office vandalised, set ablaze

A group of unidentified people set fire to the central office of Jatiyo Party in Dhaka's Kakrail area this evening

1h ago