খাদ্য, বাসস্থান ও টিকায় প্রাধান্য দিচ্ছে সরকার: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বলেছেন, সরকার এখন চলমান উন্নয়ন এজেন্ডাগুলোর পাশাপাশি কোভিড-১৯ মহামারির এই কঠিন সময়ে জনগণের জীবিকা, খাদ্য, বাসস্থান ও টিকাদান কর্মসূচিকে প্রাধান্য দিচ্ছে।
ছবি: পিআইডি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বলেছেন, সরকার এখন চলমান উন্নয়ন এজেন্ডাগুলোর পাশাপাশি কোভিড-১৯ মহামারির এই কঠিন সময়ে জনগণের জীবিকা, খাদ্য, বাসস্থান ও টিকাদান কর্মসূচিকে প্রাধান্য দিচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে জনগণ যেন কোনো ধরনের আর্থিক কষ্ট ছাড়াই স্বচ্ছন্দে তাদের জীবন অতিবাহিত করতে পারে সে জন্য তাদের খাদ্য, বাসস্থান ও চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করাই আমাদের প্রধান ভাবনা।’

প্রধানমন্ত্রী আজ রাজধানীর শের-এ-বাংলা নগরের জাতীয় অর্থনীতি পরিষদ (এনইসি) এর সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সভায় সভাপতিত্বকালে এ কথা বলেন। তিনি গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি সভায় যোগ দেন।

কোভিড-১৯ মহামারির কারণে বিশ্বব্যাপী চলমান অস্বাভাবিক পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সকল উন্নয়ন কর্মকাণ্ড এখনই বাস্তবায়ন করা জরুরি নয়, আর তাই, এগুলোর চেয়ে তার সরকার জনগণের খাদ্য, বাসস্থান ও টিকা নিশ্চিত করার প্রতি অধিকতর জোর দিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ইতোমধ্যে যে তহবিল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, তা দিয়েই আপনাদের (মন্ত্রণালয় ও বিভাগ) উন্নয়ন কর্মকাণ্ডগুলো চালিয়ে যেতে হবে। এই মুহূর্তে কোনো অতিরিক্ত তহবিল বরাদ্দের প্রয়োজন নেই।’

এনইসির বৈঠকে আজ চলতি ২০২০-২০২১ অর্থবছরের জন্য সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) বরাদ্দ তিন দশমিক ২৬ শতাংশ কমিয়ে এক লাখ ৯৭ হাজার ৬৪৩ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

ওই বৈঠকে সরকারপ্রধান বলেন, প্রথম রাউন্ডের টিকাদান কর্মসূচি চলছে এবং দেশের প্রায় ১৭ কোটি মানুষের জন্য ভ্যাকসিন কিনতে হবে।

শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানগুলো কর্মীদের পাশাপাশি গ্রামাঞ্চলে অন্যান্য পেশায় যারা সরাসরি মানুষের সঙ্গে কাজ করে, তাদেরও সরকার ভ্যাকসিনেশনের আওতায় আনতে চায় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি মনে করি, টিকাদান কর্মসূচির জন্য আরও অর্থ বরাদ্দের প্রয়োজন।’

গত বছরের ৫ নভেম্বর এবং এর পরপর ১৩ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সরকার, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লি. এবং ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট (এসআইআই)-এর মধ্যে স্বাক্ষরিত ত্রিপাক্ষিক সমঝোতা স্মারক (এমওইউ)-এর অংশ হিসেবে বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত ৯০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন পেয়েছে।

বাংলাদেশ অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা উদ্ভাবিত এসআইআই উৎপাদিত তিন কোটি ডোজ ভ্যাকসিন কিনেছে। এছাড়াও, ভারত সরকার উপহার হিসেবে আরও ২০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন পাঠিয়েছে।

পাশাপাশি, বাংলাদেশ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নেতৃত্বাধীন কোভ্যাক্স প্রোগ্রাম এবং ভ্যাকসিন অ্যালাইয়েন্স-এর আওতায় আরও ভ্যাকসিন পাবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার করোনা ভাইরাসের কারণে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি থেকে দেশকে টেনে তুলছে। দেশকে একটি উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত করতে আন্তরিকভাবে কাজ করায় সকল স্তরের মানুষের প্রতি তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, চলমান মহামারি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে সক্ষম দেশে। তবে, এই ভাইরাসটি কোথাও কোথাও রূপান্তরিত হয়ে আরও শক্তিশালী হিসেবে দেখা দিয়েছে। তাই, আমাদেরকে এটা থেকে দেশ ও জনগণকে রক্ষা করতে হবে।

কোভিড-১৯ এর অভিঘাত মোকাবিলায় সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, এসব প্রচেষ্টাই দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রেখেছে এবং এ জন্যই বাংলাদেশ বিশ্বের দরবারে একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। এসময় তিনি চলমান উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে আরও সতর্ক ও মিতব্যয়ী হওয়ার জন্য বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদের মাথায় রাখতে হবে যে, বাংলাদেশ এখন একটি উন্নয়নশীল দেশ। তাই, আমরা অন্য কোনো দেশের সহায়তা চাইতে পারি না বরং আত্মসম্মান বজায় রেখে নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে আমাদের দেশ এগিয়ে যাবে।’

Comments

The Daily Star  | English

Over 5,500 held in one week

At least 738 more people were arrested in the capital and several other districts in 36 hours till 6:00pm yesterday in connection with the recent violence across the country.

13h ago