বিছনাকান্দিতে অবৈধ পাথর উত্তোলন: যৌথ অভিযানে ৫০ বোমা মেশিন ধ্বংস
উচ্চ আদালত ও খনিজ সম্পদ ব্যুরোর নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও সিলেটের গোয়াইনঘাটের বিছনাকান্দিতে চলতে থাকা অবৈধ পাথর উত্তোলন বন্ধে যৌথ অভিযান চালিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৬টা পর্যন্ত টানা ছয় ঘণ্টার অভিযানে ৫০টি বোমা মেশিন যা পাথর উত্তোলনে ব্যবহৃত যন্ত্র সেগুলো ধ্বংস করা হয়েছে।
দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য জানিয়েছেন পরিবেশ অধিদপ্তর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক মোহাম্মদ এমরান হোসেন।
তিনি বলেন, ‘বিছনাকান্দির অবস্থা খুবই খারাপ। কোন কোন জায়গায় ১৫০-২০০ ফুট গভীর গর্ত করে পাথর উত্তোলন চলছিল। আজ বিছনাকান্দির সব দিকেই ধারাবাহিকভাবে অভিযান চালিয়েছি।
এমরান হোসেন আরো বলেন, ‘অভিযানের সময় আমরা খেয়াল করেছি আমাদের অভিযানের খবর পেয়ে পাথর উত্তোলনকারীরা বস্তায় মুড়িয়ে বোমা মেশিন মাটির নিচে গর্তচাপা দিয়ে রেখে দিয়েছে। পরে এরকম গর্তচাপা দেয়া ২০টি মেশিনসহ মোট ৫০টি মেশিন জব্দ করে তা ধ্বংস করেছি।’
বোমা মেশিন ব্যবহার করে পাথর উত্তোলনের ঘটনায় পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান তিনি।
সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার বিছনাকান্দি ও জাফলং, কোম্পানীগহ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ ও কানাইঘাটে লোভাছড়া এলাকায় অবৈধ পাথর উত্তোলন কর্মকাণ্ড চলছে বিগত কয়েক দশক ধরে।
এ সকল এলাকায় পাথর উত্তোলনে গত তিন বছরে অন্তত ৭৬ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে বলে গত বছরের জানুয়ারিতে এক প্রতিবেদনে প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)।
এরপর গত এপ্রিল থেকে সিলেট জেলার সকল এলাকায় পাথর উত্তোলণে নিষেধাজ্ঞা জারি করে খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো। এছাড়া উচ্চ আদালতেরও কিছু নির্দেশনায় গত এপ্রিল থেকে পাথর উত্তোলন বন্ধ ছিল অনেকাংশে।
এছাড়াও ২০১৪ সালে বেলার একটি রিটের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৫ সালে সিলেটের সব পাথর কোয়ারি থেকে যান্ত্রিক উপায়ে পাথর উত্তোলন নিষিদ্ধ করে উচ্চ আদালত।
তবে সম্প্রতি উচ্চ আদালতের নির্দেশনার অজুহাতে আবারও সিলেটের পাথরের জন্য চিহ্নিত এ সব এলাকা থেকে ব্যাপকভাবে পাথর উত্তোলন শুরু করেছে পাথর ব্যবসায়ীরা।
Comments