ভুয়া পরিচয়ে পাসপোর্ট তৈরির চেষ্টা, রোহিঙ্গা নারীসহ গ্রেপ্তার ২

নারায়ণগঞ্জের আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে ভুয়া পরিচয়ে বাংলাদেশি পাসপোর্ট তৈরির চেষ্টার অভিযোগে এক রোহিঙ্গা নারীসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব- ১১)।
আজ বুধবার বিকেলে র্যাব-১১ এর সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সিপিএসসি কোম্পানি কমান্ডার মো. জসিম উদ্দীন চৌধুরী এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, গোপন সংবাদেরভিত্তিতে গত ২ মার্চ বিকেলে সদর উপজেলা রঘুনাথপুর এলাকার পাসপোর্ট অফিসের সামনে অভিযান চালিয়ে রোহিঙ্গা নারীসহ দুজনকে আটক করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে একটি ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র, একটি ভুয়া জন্ম নিবন্ধন, একটি পাসপোর্টের আবেদন ফরম ও একটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।
আটক দুজন হলেন- বরিশাল বাসুদিপাড়া এলাকার মো. সুমন (৩২) এবং রোহিঙ্গা নারী নুর তাজ (১৮)। ওই নারী দীর্ঘদিন ধরে ঢাকার সবুজবাগ এলাকায় বাস করছিলেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ ও অনুসন্ধানে জানা যায়- নুর তাজ কক্সবাজারের টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে এসে তার সহযোগী পাসপোর্টের দালাল সুমনের সহযোগিতায় নারায়ণগঞ্জের আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে বিদেশ যেতে পাসপোর্টের আবেদন করেন।
নুর তাজের কাছ থেকে জব্দকৃত আলামত পর্যালোচনা করে জানা যায়, তার বাবা সাদিক বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস করছেন। নুর তাজ তার মা ও দুই ভাইয়ের সঙ্গে মুগদা এলাকায় চার বছর ধরে বাস করছেন। এর আগে, তারা জালকুড়ি এলাকায় বাস করতেন। রোহিঙ্গা হয়েও তিনি বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে পরিচয় দিয়ে তার মায়ের নামে জাতীয় পরিচয়পত্র, তার ভাই আনোয়ার হোসেনের নামে পাসপোর্ট তৈরি করেন। গত বছর নিজের জন্মসনদ তৈরি করে তার মায়ের জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে পাসপোর্ট তৈরি করছিলেন।
র্যাব জানায়, গ্রেপ্তার সুমন মতিঝিল এলাকায় ট্রাভেল এজেন্সিতে চাকরির আড়ালে পাসপোর্ট, জন্মসনদ ও জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরিতে সহায়তা করে তাদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নেয়।
কোম্পানি কমান্ডার জসিম উদ্দীন চৌধুরী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘ওরা কোনো রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ছিল না। এজন্য রোহিঙ্গা ক্যাম্পের তথ্য তালিকায় তাদের নাম নেই। তার বাবা বাংলাদেশ থেকে অস্ট্রেলিয়া গিয়েছে নাকি মিয়ানমার থেকে গিয়েছে সেটা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে তার ভাই আনোয়ার বরিশালের ঠিকানায় পাসপোর্ট করেছেন। শুরু থেকেই তারা মিথ্যা কথা বলে আসছিল। পরে এক পর্যায়ে তারা স্বীকার করে যে তারা রোহিঙ্গা। আরও জিজ্ঞাসাবাদ করলে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে।’
এ ঘটনায় র্যাবের এক সদস্য বাদী হয়ে ফতুল্লা থানায় দুজনের নামে মামলা করেছেন বলে জানান তিনি।
তিনি আরও জানান, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা যদি মনে করেন নুর তাজের মা ও ভাইদের গ্রেপ্তার করবে সেটা তিনি করতে পারেন। আইন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা তিনিই গ্রহণ করবেন।
Comments