মেসির পাস থেকে পাওয়া সে গোল কবরেও নিয়ে যেতে চান তিনি

ম্যাচের বয়স তখন ৮৩ মিনিট। পেদ্রির কাছ থেকে বল পেয়ে ডান প্রান্তে থাকা ইলিয়াশ মোরিবাকে পাস দেন লিওনেল মেসি। বল ধরে এক খেলোয়াড়কে কাটিয়ে কিছুটা বাঁ দিকে সরে এসে জায়গা বানিয়ে জোরালো এক শট নেন এ তরুণ। বল জড়ায় জালে। সিনিয়র ক্যারিয়ারের প্রথম গোল যা আসে প্রিয় খেলোয়াড় মেসির পাস থেকে। নিজেকেই যেন বিশ্বাস করতে পারছেন না এ গিনির বংশোদ্ভূত এ স্প্যানিশ তরুণ। মৃত্যুর পর গোলটি নিজের কবরেও নিয়ে যেতে যান তিনি।
বার্সেলোনার সিনিয়র দলে ক্যারিয়ারের প্রথম ম্যাচে মেসির সঙ্গে খেলার সুযোগ মেলায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছিলেন মোরিবা। আর্জেন্টাইন তারকার সঙ্গে ছবি তুলে সামাজিক মাধ্যমে নিজের উচ্ছ্বাসের কথা জানিয়েছিলেন। মেসিকে আদর্শ মেনে বড় হয়েছেন তা জানিয়েছেন গণমাধ্যমকে। সেই মেসিই যখন সিনিয়র দলে নিজের প্রথম গোলের যোগানদাতা হন, তখন উচ্ছ্বাসটা বাঁধভাঙা হওয়াই স্বাভাবিক। মোরিবার তার কোনো কিছুই গোপন করেননি।
ম্যাচ শেষে বার্সা টিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কিছুটা আবেগি হয়ে পড়েন মোরিবা। মেসির পাস থেকে পাওয়া ক্যারিয়ারের প্রথম গোলটি নিজের কবরে নিয়ে যেতে চাইলেন এ তরুণ, 'লিও (মেসি) আমাকে একটি ভালো পাস দেয় এবং আমি নিজেও জানি না কীভাবে কাটিয়ে বাঁ দিকে শট নিলাম। ধন্যবাদ ঈশ্বরকে সেটা ভিতরে ঢুকে যায়। আমি এটা কখনোই ভুলে যাব না এবং এটা আমি আমার কবরে নিয়ে যাব।'
অথচ বয়সটা মাত্র ১৮ বছর ৪৬ দিন। এ বয়সেই সিনিয়র দলে জায়গা পেয়েছেন। নিজের তৃতীয় ম্যাচে গুরুত্বপূর্ণ একটি গোলও করলেন। তার পেছনে সিনিয়র খেলোয়াড় অনেক অবদান রয়েছে বলে জানান গিনিতে জন্ম নেওয়া এ তরুণ, 'এটা একটি প্রতিযোগিতার জায়গা এবং এখানে আপনি তরুণ না-কি না সেটা ভাবার কোনো জায়গা নেই। যদি আপনি ভালো খেলেন তাহলে আপনি দলে জায়গা পাবেন। সিনিয়র খেলোয়াড়রা আমাকে সাহায্য করেছে এবং উপদেশ দিয়েছে। লিও আমাকে ওই জায়গায় যতোটা পারি ততোটাই জায়গা নিয়ে শট করার কথা বলেছে।'
২০১০ সালে লা মাসিয়ার যোগ দেন মোরিবা। তখন থেকেই পরিচর্যাটা বার্সার এ একাডেমীতেই পাচ্ছেন এ তরুণ। তাই নিজের প্রথম গোলটি নিজের বাবা ও লা মাসিয়াকে উৎসর্গ করেছেন মোরিবা, 'আমি আমার গোলটি আমার বাবা ও এবং লা মাসিয়াকে উৎসর্গ করতে চাই, যেখান থেকে আমি অনেক কিছু শিখতে পেরেছি।' পাশাপাশি লিগে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়ও ঝরে তার কণ্ঠে, 'লা লিগা আমাদের জন্য শেষ হয়ে যায়নি। আমরা শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাব। এটাই আমাদের দিয়েনে, যা লা মাসিয়াতে আমাদের শিখিয়েছে।'
মোরিবার এমন দারুণ অবদানে খুশি তার কোচ রোনাল্ড কোমানও। তরুণ শিষ্যকে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন তিনি, 'ইলিয়াশ (মোরিবা) কঠিন ম্যাচে একটি গোল করেছে। তার দ্বিতীয় গোলটিতেই ম্যাচটি নিষ্পত্তি হয়েছে। যখনই মোরিবা মাঠে নামে তখন ই সে আমাদের বেশি কিছু দেয়। ইলিয়াশ তরুণ কিন্তু শারীরিকভাবে বেশ শক্তিশালী। সে প্রথম দলে আরও সুযোগ পাবে।'
Comments