স্কুলছাত্রীকে অপহরণের অভিযোগ: ৪ দিনেও মামলা নেয়নি পুলিশ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় নবম শ্রেণীর এক স্কুল ছাত্রীকে অপহরণের চার দিন পেরিয়ে গেলেও মামলা নেয়নি পুলিশ। এ ছাড়া, ওই ছাত্রীকে এখন পর্যন্ত উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।
স্কুলছাত্রীর মায়ের অভিযোগ, বাঞ্ছারামপুর মডেল থানায় তাদের জমা দেওয়া লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ গত শুক্রবার রাতে রাসেল আহাম্মেদ (২৫) নামের এক যুবককে আটক করেও ছেড়ে দিয়েছে। এরপর থেকে আসামিপক্ষের লোকজনের হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের কারণে তিনি এখন এলাকা ছাড়া।
তবে পুলিশ বলছে, রাসেল তাদের সঙ্গে কথা বলতে এসেছিলেন, তাই তাকে আটক করা হয়নি। তবে অপহৃত ছাত্রীকে উদ্ধার করে দিতে রাসেলকে চাপ দেওয়া হয়েছে।
থানায় জমা দেওয়া অভিযোগে বলা হয়, ওই উপজেলার তেজখালী ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্রীকে গত ৩ মার্চ বাড়ির পাশের মুদি দোকানে পণ্য কিনতে গেলে একই গ্রামের সুলতান মিয়ার ছেলে রায়হান ও তার সহযোগীরা মাইক্রোবাসে করে তুলে নিয়ে যায়। পরদিন স্কুলছাত্রীর মা বাদী হয়ে ছয় জনকে আসামি করে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
ছাত্রীর মা বলেন, ‘থানার এসআই মনিরুল ইসলাম গত শুক্রবার রাতে গ্রামে গিয়ে অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত রাসেল আহাম্মদকে আটক করে গাড়িতে তুলেন। কিন্তু পুলিশের এই কর্মকর্তা রাসেলকে থানায় না নিয়ে পথিমধ্যে ছেড়ে দেন।’
এ বিষয়ে উপ-পরিদর্শক (এসআই) মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘অভিযোগে রাসেলের নাম রয়েছে এটা সত্য। সেদিন রাসেল আমাদের সঙ্গে কথা বলতে এসেছিলেন, তাই তাকে আমরা আটক করিনি। তবে তাকে চাপ দিয়েছি মেয়েটিকে উদ্ধার করে দিতে। রাসেল এখন ঢাকায় আছেন। ঢাকা থেকে তিনি নিয়মিত আমার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন।’
‘যেহেতু রাসেলকে আটক করিনি, তাই ছেড়ে দেওয়ার প্রশ্ন আসে না’, বলেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।
বাঞ্ছারামপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজু আহাম্মেদ বলেন, ‘অভিযোগ পেয়ে এসআই মনিরকে পাঠিয়েছিলাম। তবে কাউকে আটক করে ছেড়ে দেওয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই।’
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘এ ঘটনা জানার পর রায়হানের পরিবারের সদস্যদের মাধ্যমে তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছি। আমরা রায়হান এবং ওই মেয়েটিকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছি।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মেয়েটির পরিবার থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পর থেকে রায়হানের মা-বাবা এলাকা থেকে গা-ঢাকা দিয়েছেন।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে রায়হানের বড় ভাই কালা মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমরা রায়হানকে ফিরিয়ে আনতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। কিন্তু আমাদেরকে সেই সুযোগ দিতে হবে।’
‘আমি ও আমার স্ত্রী এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত না থাকলেও আমাদেরকে কেন মামলায় ফাঁসানো হলো’, প্রশ্ন করেন তিনি।
Comments