ব্রিটিশ-বাংলাদেশি লুসিকে সম্মাননা-স্মার্টকার্ড দিলো বরিশাল জেলা প্রশাসন
বরিশালে বসবাসকারী ব্রিটিশ ও বাংলাদেশি নাগরিক, দ্য ডেইলি স্টারের ‘আনসাং ওমেন’ পদকপ্রাপ্ত লুসি হেলেন ফ্রান্সিস হোল্টকে (৯০) সম্মাননা জানিয়েছে বরিশালের জেলা প্রশাসন। আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষ্যে গতকাল সোমবার দুপরে সম্মাননা ক্রেস্টের সঙ্গে তার হাতে বয়স্ক ভাতা ও জাতীয় পরিচয়পত্রের স্মার্টকার্ড তুলে দেওয়া হয়।
জেলা সার্কিট হাউসের সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে লুসির হাতে ১৮ মাসের বয়স্ক ভাতা বাবদ মোট নয় হাজার টাকা তুলে দেন বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার মো. সাইফুল হাসান বাদল। সেসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বরিশারের জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার ও সমাজসেবা বিভাগের উপপরিচালক আল মামুন তালুকদার, প্রবশন অফিসার সজ্জাদ পারভেজ প্রমুখ।
সে সময় সম্মাননা, ভাতা ও স্মার্টকার্ড পেয়ে আনন্দে ‘নাচ ময়ুরি নাচ’ গান গেয়ে ওঠেন লুসি।
জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার জেলা প্রশাসনের পক্ষে লুসিকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন। পরে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য আরও চার নারীকে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।
১৯৩০ সালের ১৬ ডিসেম্বর যুক্তরাজ্যে জন্মগ্রহণ করেন লুসি হেলেন ফ্রান্সিস হোল্ট। একজন মিশনারি হিসেবে তিনি ১৯৬০ সালে বাংলাদেশে এসে আর্তমানবতার সেবায় নিজেকে নিয়োগ করেন। ১৯৭১ সালে তিনি যশোরের ফাতেমা হাসপাতালে মুক্তিযোদ্ধাসহ সাধারণ মানুষকে চিকিৎসা সহায়তা দেন। পরবর্তীতে তিনি অক্সফোর্ড মিশনে এসে শিক্ষকতার পাশাপাশি সবাজসেবামূলক কাজে আত্মনিয়োগ করেন।
দ্য ডেইলি স্টার ও আইপিডিসি ফিন্যান্সের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘আনসাং ওমেন: নেশন বিল্ডার্স অ্যাওয়ার্ডস ২০১৮’ পদক পেয়েছিলেন লুসি হেলেন ফ্রান্সিস হোল্ট।
লুসিকে বিভিন্ন সময়ে চিঠি লিখেছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ রেহানা। লুসি এ দেশের সমাজ ও সংস্কৃতিকে ভালোবেসে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পাওয়ার আশা পোষণ করে আবেদন করলে ২০১৮ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি তাকে নাগরিকত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। পরে ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে আনুষ্ঠানিক নাগরিকত্ব প্রদান করেন।
২০০৪ সালে কর্মজীবন থেকে অবসর নিয়ে বরিশাল শহরের অক্সফোর্ড মিশনে থেকে যান লুসি। বর্তমানে শারীরিকভাবে তিনি কিছুটা অসুস্থ। মৃত্যুর পরে বাংলাদেশের মাটিতেই আশ্রয় নেওয়ার ইচ্ছে পোষণ করেছেন লুসি।
আরও পড়ুন:
Comments