আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে পৌরভবনে হামলা করা হয়: কাদের মির্জা

আবদুল কাদের মির্জা। ছবি: সংগৃহীত

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোটভাই বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা বলেছেন, ‘আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে মঙ্গলবার রাতে পৌরসভা ভবনে গুলি ও বোমা হামলা করা হয়েছে।’

আজ বুধবার দুপুরে বসুরহাট পৌরসভা কার্যালয়ে এ অভিযোগ করেন আবদুল কাদের মির্জা।

তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে মঙ্গলবার রাতে পৌরসভা ভবনে গুলি ও বোমা হামলা করা হয়েছে। নেতা-কর্মীদের ভালোবাসা ও ত্যাগের বিনিময়ে ওই হামলা থেকে আমি অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গেছি। কিন্তু, আমার ৩০ নেতা-কর্মী গুলিতে আহত হয়েছেন। আহতদের ১৫ জনকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে এবং বাকিদের কোম্পানীগঞ্জ ও ঢাকাসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে।’

এ হামলার জন্য তিনি নোয়াখালী-৪ আসনের সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী ও ফেনী-২ আসনের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী এবং কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলকে দায়ী করেছেন।

তিনি বলেন, ‘আলাউদ্দিন একজন সিএনজি চালক। তাকে বিনা কারণে বাদল ও তার লোকজন পাখির মত গুলি করে হত্যা করেছে। ৩১ ডিসেম্বর থেকে আমি নোয়াখালী ও ফেনী আওয়ামী লীগের অপরাজনীতি, দুর্নীতি, নিয়োগ বাণিজ্য, টেন্ডার বাণিজ্যসহ বিভিন্ন অনিয়মের বিরুদ্ধে কথা বলে আসছি। আমার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আমি এসব অন্যায় ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলেই যাব। কারণ আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতি করি এবং তার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নীতির রাজনীতি করি। যেদিন থেকে আমি সত্য কথা বলা শুরু করেছি সেদিন থেকেই একরাম ও নিজাম হাজারীর লোকজন আমাকে হত্যার হুমকি দিয়েছেন। মৃত্যু আমাকে প্রতিনিয়ত তাড়া করে বেড়াচ্ছে। কিন্তু, আমি মৃত্যুকে ভয় করি না।’

তিনি আরও বলেন, ‘মঙ্গলবার রাতে আমিসহ আমার সমর্থকের ওপর গুলি ও বোমা হামলা ছিল পূর্ব পরিকল্পিত। হামলার আগে একটি সভা হয়। ওই সভায় এ হামলার পরিকল্পনা করা হয়। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে পৌরসভা কার্যালয়ের ৩য় তলায় বিশ্রাম কক্ষে সবাইকে নিয়ে কথা বলার সময় মিজানুর রহমান বাদলের নেতৃত্বে তিন শতাধিক অবৈধ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী পৌরসভার চারপাশ থেকে ঘেরাও করে আমাকে হত্যার উদ্দেশে আমার কক্ষকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এ সময় আমার নেতা-কর্মীরা মেঝেতে শুয়ে আমাকে গুলির হাত থেকে রক্ষা করে। ঘণ্টাব্যাপী এ তাণ্ডব চলাকালীন পুলিশ নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেন। আমার ওপর হামলা করতে বাদল ও তার সমর্থকদের পুলিশ সুযোগ করে দিয়েছে।’

আলা উদ্দিন ও সাংবাদিক মুজাক্কিরের হত্যাকারীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার তদন্ত ও ঢাকা থেকে বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানান কাদের মির্জা। আলা উদ্দিন ও সাংবাদিক মুজাক্কির হত্যাকাণ্ড নিয়ে যেন পুলিশ জজ মিয়া নাটক সাজাতে না পারে সে ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।

আবদুল কাদের মির্জা বলেন, ‘মঙ্গলবার রাতের হামলার পর আমার নেতা-কর্মীদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। তিনি নিজেও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। গুলি হামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।’

তবে, কাদের মির্জার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মিজানুর রহমান বাদল। তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমার প্রতিবাদ সভা চলাকালীন মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কাদের মির্জার নির্দেশে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিবাদ সমাবেশে বোমা হামলা চালিয়েছে কাদের মির্জার ক্যাডার বাহিনী। কাল রাতে বসুরহাট পৌরভবনে যে হামলার ঘটনা ঘটেছে তার সঙ্গে আমি জড়িত নই। আমি তখন ফেনীর লালপুর এলাকায় ছিলাম। তাই কাদের মির্জার অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।’

হামলার অভিযোগ নিয়ে নোয়াখালী-৪ আসনের সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী মন্তব্য জানতে তার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। এ কারণে একরামুল করিম চৌধুরীর মন্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।

কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি মীর জাহিদুল হক রনি মঙ্গলবার রাতের গুলি হামলার ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে কাদের মির্জা ও বাদলের সমর্থকরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। গুলির শব্দ শুনে আমি পুলিশ নিয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের দু’পক্ষের সংঘর্ষের সময় তারা পুলিশকে উদ্দেশে বোমাও নিক্ষেপ করে।’

আরও পড়ুন:

Comments

The Daily Star  | English

JP central office vandalised, set ablaze

A group of unidentified people set fire to the central office of Jatiyo Party in Dhaka's Kakrail area this evening

1h ago