আমাদের অনেকেই গুলিবিদ্ধ হয়েছেন: কাদের মির্জা
‘আমাদের অনেকেই গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তাদের অনেকে বাড়িতে আছেন। আমি তাদেরকে দেখার জন্য বাড়িতে গিয়েছি, খোঁজখবর নিয়েছি। তাছাড়া, আমাদের এক কর্মী মারা গেছেন। তার পরিবারের সঙ্গে দেখা করে এসেছি’— কথাগুলো বলছিলেন বসুরহাট পৌরসভার মেয়র ও সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোটভাই আবদুল কাদের মির্জা।
আজ শুক্রবার সকালে নিজ দলের নিহত কর্মীর পরিবারের সদস্য ও আহত কর্মীদের সঙ্গে দেখা করে আসার পর তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
কাদের মির্জা বলেন, ‘এখানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি মোটামুটি ভালো। আমি তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই। আমি চাই, কোম্পানিগঞ্জ থেকে অস্ত্রের রাজনীতি বন্ধ হোক। সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হোক।’
‘আর এখানে সাংবাদিক বুরহান উদ্দিন মুজাক্কির ও কর্মী আলাউদ্দিনকে হত্যা করা হয়েছে। সাত-আট জায়গায় আমার ওপর হামলা হয়েছে। আমার কর্মীদের ওপর হামলা হয়েছে। আমি চাচ্ছি, সরকার এর সুষ্ঠু তদন্ত করুক। আমরা যাতে ন্যায়বিচার পাই সেটা নিশ্চিত করুক।’
‘সুষ্ঠু তদন্তে যদি আমি বা আমার কোনো অনুসারীর অন্যায় থাকে তাহলে আমাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক,’ যোগ করেন তিনি।
এদিকে, রাতভর গুঞ্জন ছিল কাদের মির্জাকে গ্রেপ্তার করা হতে পারে। কিন্তু, তেমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। গত মঙ্গলবার রাতে মেয়র কাদের মির্জা ও কোম্পানীগঞ্জ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ৫০ জন আহত হন।
স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, আজ সকালে কাদের মির্জা বসুরহাট পৌর ভবন থেকে বের হয়ে তাদের অনেকের বাড়িতে গিয়ে দেখা করেন। তারপর তিনি সকাল ১১টার দিকে পৌরভবনে আসেন।
কাদের মির্জা সাধারণত পৌরভবনেই থাকেন। তিনতলা ভবনের দোতলায় অফিস। এর ওপরের তলায় উনি থাকেন।
সূত্র আরও জানিয়েছে, আজ সকালে কাদের মির্জা পায়ে হেঁটে কয়েকটি রাস্তা ঘুরেছেন। এরপর গাড়ি নিয়ে তার অনুসারীদের যারা গুলিবিদ্ধ হয়েছেন তাদের বাড়িতে গিয়ে চিকিৎসার খোঁজখবর নিয়েছেন।
বসুরহাট পৌরভবনে পুলিশের অবস্থান সম্পর্কে সূত্র জানিয়েছে, পুলিশ সেখানে মঙ্গলবার থেকেই অবস্থান করছে। সেখানে ৩০০ র বেশি পুলিশ রয়েছে এবং র্যাবের দুটি দল টহল দিচ্ছে।
আজ দুপুর ১টার দিকে এসপি মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘মিজানুর রহমান বাদল গ্রেপ্তারের পর থেকে কিছুটা উত্তেজনা ছিল। কিন্তু, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কঠোর হওয়ায় পরিস্থিতি এখন শান্ত আছে। তারা টহল দিচ্ছেন।’
স্থানীয়রা ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন, গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে মিজানুর রহমান বাদলকে যখন গ্রেপ্তার দেখানো হয় তখন তার লোকজন উপজেলা পরিষদের সামনে জড়ো হলে কিছুটা উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। কিন্তু, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
‘বসুরহাট পৌরভবনে কোনো পুলিশ নেই’ উল্লেখ করে তারা জানিয়েছেন, পৌরভবনের পূর্বপাশে বঙ্গবন্ধু চত্বরে ১০০ থেকে ১৫০ পুলিশ সদস্য তাঁবু টাঙিয়ে অবস্থান করছেন। তারা মঙ্গলবার রাত থেকেই সেখানে অবস্থান করছেন।
এ বিষয়ে এসপি আলমগীর হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘পৌরভবনে যেন হামলা না হয় এ কারণেই পুলিশ টহল দিচ্ছে। সেখানে যেন কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটতে পারে। কিন্তু, মির্জাকে গ্রেপ্তার বা বেষ্টনী করে রাখার জন্যে পুলিশ সেখানে রয়েছে বিষয়টি এমন নয়।’
‘পুলিশ মঙ্গলবার রাত থেকে সেখানে অবস্থান করছে,’ যোগ করেন তিনি।
আরও পড়ুন:
প্রধানমন্ত্রী আমাকে শান্ত থাকতে বলেছেন, তাই শান্ত আছি: কাদের মির্জা
কাদের মির্জার প্রতিদ্বন্দ্বী বাদল গ্রেপ্তার
কোম্পানীগঞ্জে আ. লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ, ওসিসহ আহত অর্ধশত
কাদের মির্জা-বাদল গ্রুপের সংঘর্ষ: বসুরহাটে ১৪৪ ধারা, আটক ২৭
কোম্পানীগঞ্জে সংঘর্ষ: ৬৪৪ জনের বিরুদ্ধে বাদলের মামলা, আসামি নন কাদের মির্জা
অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে বলায় জাতীয়ভাবে আমাকে উন্মাদ বলা হয়: কাদের মির্জা
আল্লাহর গজব পড়বে, আমি ঈমানদার: কাদের মির্জা
আপনার মন্ত্রণালয়ের সব খবর জানি, সব বলে দেব: ওবায়দুল কাদেরের উদ্দেশে কাদের মির্জা
অনেক বিপদে আছি, চাপে আছি, রাতে আমার ঘুম হয় না: কাদের মির্জা
আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে পৌরভবনে হামলা করা হয়: কাদের মির্জা
Comments