সারাহ এভারার্ড হত্যা: লন্ডনে বিক্ষোভে গ্রেপ্তার ৪, পুলিশের ভূমিকার তীব্র সমালোচনা
লন্ডনে সারাহ এভারার্ড হত্যার প্রতিবাদ কর্মসূচিতে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশের বলপ্রয়োগের ঘটনায় যুক্তরাজ্যজুড়ে ব্যাপক সমালোচনা চলছে। কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া চার নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানায়, ৩৩ বছর বয়সী নারী সারাহ এভারার্ড গত ৩ মার্চ সন্ধ্যায় বাসায় ফেরার পথে নিখোঁজ হন। গত বুধবার লন্ডনের ৮০ কিলোমিটার দক্ষিণপূর্বে একটি জঙ্গলে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এভারার্ডকে হত্যার অভিযোগে ওয়েইন কোজেনস নামের এক পুলিশ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এ ঘটনার পরই দেশটিতে নারী নিরাপত্তা ও পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়।
স্থানীয় সময় গতকাল শনিবার রাতে এভারার্ড স্মরণে ও লন্ডন শহরে নারীর নিরাপদ চলাফেরা নিশ্চিত করার দাবিতে শহরের দক্ষিণাংশে ক্ল্যাপহ্যাম কমনের বাসস্ট্যান্ডে প্রদীপ প্রজ্জ্বালন কর্মসূচির আয়োজন করে নারীরা।
শনিবার রাতে ওই সমাবেশে প্রায় এক হাজার মানুষ জড়ো হন। অনেকেই সেসময় পুলিশের ব্যর্থতার কথা তুলে ধরে তীব্র নিন্দা জানান।
এক পর্যায়ে করোনাভাইরাস স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে প্রতিবাদকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়ার চেষ্টা করে লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশ। এসময় পুলিশের সঙ্গে প্রতিবাদকারীদের সংঘর্ষ বাধে। প্রত্যক্ষদর্শীরা রয়টার্সকে জানান, সমাবেশে অংশ নেওয়া কয়েকজন নারীকে পুলিশ টেনে দূরে সরিয়ে দিয়েছিল।
মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার হেলেন বল জানান, স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘনের জন্য চার নারী আন্দোলনকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ইউরোপজুড়ে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ ঘটনা নিয়ে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে।
পুলিশের ভূমিকার কড়া সমালোচনা করে লন্ডনের মেয়র সাদিক খান এক টুইটে জানান, পুলিশ কর্মকর্তারা যা করেছেন তা যথাযথ ছিল না, যৌক্তিকও ছিল না। পুলিশ কমিশনারের কাছে এর একটি তাৎক্ষণিক ব্যাখ্যা চেয়েছেন বলেও টুইটে জানিয়েছেন লেবার পার্টির নেতা সাদিক খান।
প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন জানান, রাস্তায় নারীদের নিরাপদ চলাচল ও নারীরা যাতে কোনো ধরনের হয়রানি বা নির্যাতনের শিকার না হন সেটি নিশ্চিত করতে তার পক্ষে যা কিছু করা সম্ভব, তিনি তা করবেন।
সারাহ এভারার্ডকে হত্যার অভিযোগে ৪৮ বছর বয়সী পুলিশ কর্মকর্তা ওয়েইন কোজেনসকে শনিবার সকালে লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টার ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। মঙ্গলবার এ বিষয়ে আবারও শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।
রয়টার্স জানিয়েছে, এর আগে সারাহ এভারার্ডের হত্যার প্রতিবাদে আনুষ্ঠানিক স্মরণসভা করতে চাওয়া হলেও মহামারীতে জনসমাগমে নিষেধাজ্ঞার কারণে লন্ডন পুলিশ তাদের অনুমতি দেয়নি।
Comments