ট্রাক্টরচাপায় নিহত ১, জীবননগরের ইউএনওকে ধাওয়া, অবরুদ্ধ

চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে ট্রাক্টরের ধাক্কায় এক ব্যক্তি নিহত ও তার আট বছরের শিশু সন্তানের পা ভেঙ্গে যাওয়ার ঘটনায় বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কে ধাওয়া ও ইটপাটকেল ছুড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এসময় প্রায় ঘণ্টাখানেক জীবননগরের ইউএনও এসএম মুনিম লিংকনকে অবরুদ্ধ করে রাখা হলে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে।
আজ মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে জীবননগর উপজেলার কাটাপোল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, দুপুরে সাইকেলে করে ছেলেকে নিয়ে কাটাপোল গ্রামের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলেন ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলার বাথানগাছি গ্রামের ওহিদুল বিশ্বাস।
বিপরীত দিক থেকে আসা মাটিভর্তি একটি লাইসেন্সবিহীন ট্রাক্টর তার সাইকেলটিকে চাপা দেয়। ঘটনাস্থলেই নিহত হন ওহিদুল। পা ভেঙ্গে যায় ছেলে ইয়াসিন আলীর। উত্তেজিত জনতা ট্রাক্টরটি আটকে রাখে। খবর পেয়ে জীবননগরের ইউএনও এসএম মুনিম লিংকন পুলিশের একটি দল নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে উত্তেজিত জনতাকে শান্ত করার চেষ্টা করেন। এক পর্যায়ে জব্দকৃত ট্রাক্টরটি ছেড়ে দিতে বললে ক্ষুব্ধ জনতা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ পুলিশকে ধাওয়া দেয় এবং ইটপাটকেল ছোড়ে।
সন্ধ্যায় ইউএনও এসএম মুনিম লিংকন দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, ঘটনাস্থলে কয়েকশ বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী তাকে ঘিরে ধরে এবং একপর্যায়ে হামলা চালায়।
তিনি বলেন, ‘আমি প্রাণ বাঁচতে দৌড় দিলে বিক্ষুব্ধরা আমাকে লক্ষ্য করে ইট নিক্ষেপ শুরু করে।’
ইউএনও তার মাথায় একটি ইটের টুকরো লাগে বলে জানান।
তিনি এ সময় উপজেলার হাসদহ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রবিউল ইসলামের সাথে পার্শ্ববর্তী একটি বাড়িতে আশ্রয় নেন। সেখানেও হামলা চালানো হয় বলে তিনি জানান।
জীবননগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান, ইউএনওকে উদ্ধার করে পুলিশ পাহারায় উপজেলা চেয়ারম্যানের গাড়িতে জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাসভবনে পৌঁছে দেয়া হয়।
ওসি জানান ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এই ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরকারি কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগ এনে এলাকার অজ্ঞাত লোকজনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছেন।
এ ঘটনায় নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে ট্রাক্টর চালক ও হেল্পারের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা করেছেন। তবে ঘটনার পর থেকেই তারা পলাতক।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য জানান, এলাকায় অবৈধভাবে মাটি কাটা হচ্ছে। সেই মাটি এসব লাইসেন্সবিহীন ট্রাক্টর, নসিমন, করিমনে করে বহন করা হয়। কিন্তু প্রশাসনকে জানিয়েও কোন লাভ হয়নি।
Comments