চিঠির ‘ভুল ব্যাখ্যা’য় বিসিবির সমালোচনায় সাকিব

Shakib Al Hasan
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

গত মাসে সাকিব আল হাসানকে কেন্দ্র করে ফের সরগরম হয়ে ওঠে বাংলাদেশের ক্রিকেট অঙ্গন। আইপিএলে অংশ নিতে জাতীয় দলের হয়ে শ্রীলঙ্কা সফরে টেস্ট খেলতে না যাওয়ার জন্য ছুটির আবেদন করে আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দেন তিনি। তার ছুটি মঞ্জুর করার পরও বিতর্ক উসকে দেয় খোদ বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। বোর্ড প্রধান নাজমুল হাসান পাপন দাবি করেন, আরও তিন বছর আগে থেকে টেস্ট খেলতে চাচ্ছিলেন না সাকিব। তার আগে বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা প্রধান আকরাম খানও জানান বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের এই সংস্করণে খেলতে অনাগ্রহের কথা।

নানা ধরনের তত্ত্ব-গুঞ্জন চললেও দেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন সাকিব এতদিন ছিলেন নিশ্চুপ। অবশেষে তিনি মুখ খুলেছেন, ‘টেস্ট খেলা-না খেলা’ নিয়ে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছেন। শুধু তা-ই নয়, শনিবার রাতে আরও অনেক ইস্যুতে তিনি কথা বলেছেন একটি অনলাইন সংবাদমাধ্যমের ফেসবুক লাইভ অনুষ্ঠানে। তার চুম্বক অংশ তুলে ধরা হলো দ্য ডেইলি স্টারের পাঠকদের জন্য।

‘প্রথমত, সময়মতো (দুই টেস্টের শ্রীলঙ্কা) সিরিজ হলে এই প্রশ্নই উঠত না, এই পরিস্থিতিই তৈরি হতো না (গত বছর অনুষ্ঠিত হওয়ার সূচি ছিল)। করোনা মহামারীর কারণে সব ওলটপালট হয়ে গিয়েছে। দ্বিতীয়ত, ম্যাচগুলো টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ হিসেবে আমরা খেলছি। আমাদের আছেই এই দুটি ম্যাচ। সত্যি কথা বলতে, আমরা আছিই পয়েন্ট তালিকার তলানিতে। এমন না যে এই দুইটা ম্যাচ জিতলে আমরা ফাইনাল খেলব। খুব বেশি একটা কিছু যে হবে আমার মনে হয় না।

আমরা বেশ কিছু ক্রিকেটার অনেকদিন ধরে খেলছি। এটা একটা সুযোগ হতে পারে নতুনদের তৈরি করার জন্য। আমি বেশ কিছুদিন ধরেই টেস্টের বাইরে ছিলাম। মাত্র একটা টেস্ট খেলেছিলাম (ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে), সেখানে গিয়েই চোটে পড়েছিলাম। যেকারণে পরেরটা খেলতে পারিনি। সবশেষ যে সাত-আটটা টেস্ট বাংলাদেশ খেলেছে, আমাকে ছাড়াই খেলেছে। আমার মনে হয় যে, খুব একটা ক্ষতি হবে না। বরং ভালো হতে পারে। দুই-একজন ক্রিকেটার তৈরি হতে পারে। নতুন খেলোয়াড়দের দেখার সুযোগ হতে পারে।

ভারতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আছে এই বছরের শেষের দিকে, অক্টোবরে। যেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, আমাদের অনেক কিছু অর্জনের সুযোগ আছে। আমার মনে হয়, এই দুইটা টেস্টে সেই সুযোগ নেই। অবশ্যই দল হিসেবে যদি দুইটা টেস্ট জিতি আমরা, তাহলে অনেক ভালো। কিন্তু যদি বড় চিত্রটা দেখেন, আমি নিজেকে প্রস্তুত করি সেগুলোর জন্য, যেখানে আমাদের বড় কিছু অর্জনের সুযোগ আছে। এটাই যে পুরোপুরি সঠিক হবে, তা আমি বলছি না। কিন্তু এটা আমাকে সাহায্য করে। তো এজন্য সিদ্ধান্ত নেওয়া (শ্রীলঙ্কায় না যাওয়ার)।

আর বারবার শুধু কথা হচ্ছে, আমি টেস্ট খেলতে চাই না। আমি নিশ্চিত, বিসিবিকে আমি যখন চিঠি দিয়েছি, যারাই বলছে যে, আমি টেস্ট খেলতে চাই না বা টেস্ট খেলব না, তারা চিঠিটা পড়েনি। এটা হচ্ছে একদম বড় কথা। আমি আমার চিঠিতে কোথাও উল্লেখ করিনি যে, আমি টেস্ট খেলতে চাই না। আমি শুধু উল্লেখ করেছি, আমি বিশ্বকাপ প্রস্তুতির জন্য এই সময়টাতে আইপিএল খেলতে চাই। এটাই বলেছি।

আমার ধারণা, বিশেষ করে, আকরাম ভাই বারবার বলেছেন, আমি খেলতে চাই না, খেলতে চাই না। আগের দিনও তিনি একটা সাক্ষাৎকারে বলেছেন। আমার ধারণা, উনি চিঠিটি পড়েননি। আমি পাপন ভাইকে ধন্যবাদ দিতে চাই। আর যা-ই হোক, উনি সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে আমি মনে করি। একজন খেলোয়াড়দের এই স্বাধীনতা থাকা উচিত। বোর্ড কিংবা বোর্ড প্রধান যদি কোনো ক্রিকেটারকে এভাবে পেছনে থেকে সাহায্য করে, তাহলে ক্রিকেটারের আত্মবিশ্বাস বাড়ে। পরে জাতীয় দলের প্রতিনিধিত্ব করার সময় ক্রিকেটারদের দায়বদ্ধতাও বেড়ে যায়, ভালো কিছু করার জন্য। সেকারণে পাপন ভাইকে অবশ্যই ধন্যবাদ দিতে হয়।

আমার ধারণা, এরপর থেকে মানুষের কাছে বিষয়টা স্পষ্ট হবে যে, এটা কেবল টেস্টের জন্য নয়। এই সময়ে যদি ওয়ানডেও থাকত... আমি বলেছি যে, এই সময়ে আমি আইপিএলে খেলতে চাই। আমি জানতে পারব, যে মাঠে আমি এখন খেলছি, সেই মাঠে চার মাস (মূলত ছয়) পর বিশ্বকাপ আছে। তাই বাংলাদেশ দলের কথা বিবেচনা করলে, আমি বাকিদের চেয়ে বাড়তি সুবিধা পাব। আর সেটা দলকেও সাহায্য করবে। কারণ, আমি আমার অভিজ্ঞতা বাকিদের সঙ্গে ভাগাভাগি করতে পারব।’

Comments

The Daily Star  | English

JP central office vandalised, set ablaze

A group of unidentified people set fire to the central office of Jatiyo Party in Dhaka's Kakrail area this evening

1h ago