অনলাইন দরপত্রের তথ্য ফাঁসের তথ্য বিবেচনায় নেয়নি ইবি কর্তৃপক্ষ

ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক। স্টার ফাইল ছবি

কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইনে দরপত্র (ই-জিপি) কেনাবেচার তথ্য ফাঁসের অভিযোগ ওঠার পরও দুটি ছাত্রী হল নির্মাণে ১০৮ কোটি টাকার দরপত্র খোলা হয়েছে।

আজ সোমবার দুপুরে নির্ধারিত সময়ে খোলা হয় ই-টেন্ডার অ্যাপস। ইবি’র পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের পরিচালক ও বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান ৫৩৭ কোটি টাকার মেগা প্রকল্পের পরিচালক এইচ এম আলী হাসান বিষয়টি দ্য ডেইলি স্টারকে নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি টেন্ডার ওপেন কমিটি (টিওসি) আছে। এই কমিটিই টেন্ডার খুলে থাকে। কমিটির সভাপতি তিনি নিজেই ও সদস্য-সচিব প্রকৌশল দপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী নাসিম রেজা।

এমএস-এমআরটি (জেভি) নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ১০৮ কোটি টাকার দুটি ছাত্রী হল নির্মাণের কাজ পেয়েছে বলে জানান তিনি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী মুন্সী সাইদ মো. তারেক জানান, এ প্রতিষ্ঠানটি সর্বনিম্ন দরদাতা হওয়ায় নিয়ম অনুযায়ী তারাই কাজটি পাবে।

তিনি জানান, মোট ১০টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান টেন্ডারে অংশ নেয়। এর মধ্যে একটি হলের জন্য চারটি ও অন্যটির জন্য ছয়টি দরপত্র জমা পড়ে। এদের মধ্যে এমএস-এমআরটি (জেভি) সর্বনিম্ন সাত দশমিক ৯৯ শতাংশ দরে দরপত্র দেওয়ায় তারা কাজটি পেয়েছে।

দরপত্র ক্রয় করে কাজ পাননি এমন বেশ কয়েকজন ঠিকাদার নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘যে কয়টি প্রতিষ্ঠান দরপত্রে অংশ নেয়, তাদের নাম আগেই ফাঁস হয়ে যায়। একটি মোবাইল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, প্রজেক্ট ডিরেক্টর ও প্রধান প্রকৌশলীকে সেল ফোন মেসেজ দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল।’

বিষয়টি নিয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী মুন্সী সাইদ মো. তারেক বলেন, ‘এ ধরনের নাম ফাঁস হয়ে যাওয়ায় টেন্ডার প্রক্রিয়ায় কোনো ক্ষতি হয়নি। কারণ কে কত শতাংশ দর দিয়ে দরপত্র জমা দিয়েছে, তা তো আর ফাঁস হয়নি।’

ইবি উপাচার্য শেখ আবদুস সালাম জানান, এ বিষয়ে কোনো ঠিকাদার তাদের কাছে লিখিত অভিযোগ দেননি।

তিনি বলেন, ‘কারো কোনো অভিযোগ থাকলে সেটি লিখিত আকারেই আসতে হবে এবং এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছেও জমা দিলে হবে না, দিতে হবে উচ্চ পর্যায়ে। কারণ ই-টেন্ডারের কোনো প্রক্রিয়া তাদের হাতে নেই। এটা নিয়ন্ত্রণ করে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) অধীনে সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট ইউনিট (সিপিটিইউ)।’

গত তিন-চার দিন ধরে একটি অজ্ঞাত মহল থেকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে দুটি ছাত্রী হল নির্মাণের ১০৮ কোটি টাকা কাজের ই-দরপত্রে অংশগ্রহণকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নাম ফাঁস করে দেওয়া হয়। এতে ১০টি প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ করা হয়। এ নিয়ে কাজে অংশগ্রহণকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়।

বিষয়টি জানার পর গত শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিজেই শিক্ষামন্ত্রী ও সিপিটিইউসহ সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরে জরুরিভাবে যোগাযোগ করেন।

উপাচার্য বলেন, ‘পুরো ই-জিপির সবকিছু আইএমইডির (পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ) নিয়ন্ত্রণে। এ বিষয়ে তিনি সেখানে কয়েক দফা কথা বলেছেন। সিপিটিইউর মহাপরিচালক সোহেলুর রহমান চৌধুরী তাকে আশ্বস্ত করেন। সিপিটিইউ থেকে ই-জিপির তথ্য ফাঁস হওয়া অসম্ভব ব্যাপার।’

উপাচার্য বলেন, ‘পুরো কাজটি নিয়ে একটি সিন্ডিকেট তৈরি হতে পারে, যারা নিজেদের মধ্যে এসব জানাজানি করে তথ্য ফাঁস করে থাকতে পারে।’

Comments

The Daily Star  | English
CAAB pilot licence irregularities Bangladesh

Regulator repeatedly ignored red flags

Time after time, the internal safety department of the Civil Aviation Authority of Bangladesh uncovered irregularities in pilot licencing and raised concerns about aviation safety, only to be overridden by the civil aviation’s higher authorities.

11h ago