চাঁপাইনবাবগঞ্জে দেখা গেল উত্তুরে হনুমান
চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের শাহীবাগ এলাকার একটি আম বাগানে আজ সোমবার সকালে একটি উত্তুরে হনুমান দেখা গেছে। সকাল থেকে শাহীবাগ এলাকায় সার্কিট হাউস সংলগ্ন আম বাগানে একটি গাছের উঁচু ডালে সেটিকে বসে থাকতে দেখা যায়। হনুমানটি দেখতে শিশু, কিশোরসহ বিভিন্ন বয়সী মানুষ সেখানে ভিড় করেন।
দুপুর ১২টার দিকে খবর পেয়ে সরেজমিনে সেখানে গিয়ে উৎসুক মানুষের ভিড়ের কারণে হনুমানটিকে আম গাছের উঁচু স্থানে একটি ডালে পাতার আড়ালে বসে থাকতে দেখা যায়। ভীত হনুমানটি মাঝে-মধ্যে এদিক ওদিক চেয়ে দেখছিল।
স্থানীয় যুবক কায়সার ইমাম জানান, সকালে স্থানীয়রা হনুমানটি দেখে ভিড় করেন। সেটি কয়েকবার স্থান পরিবর্তন করে। কিছু কলা দেওয়া হলে হনুমানটি কলাগুলো খায়।
তবে শিশু-কিশোররা বিরক্ত করায় হনুমানটি ভীত হয়ে আছে বলে জানান তিনি।
এ জেলায় প্রায়ই হনুমান ও বানর দেখা যায়। স্থানীদের ধারণা এগুলো দলছুট হয়ে পার্শ্ববর্তী ভারত থেকে আসে। চাঁপাইনবাবগঞ্জের সঙ্গে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দুই জেলার প্রায় ১২২ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে।
উইকিপিডিয়ার তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে উত্তুরে হনুমান, চশমাপরা হনুমান ও মুখপোড়া হনুমান এই তিন প্রজাতির হনুমান দেখা যায়। এদের দেহের রং ফ্যাকাসে-কমলা এবং নিচের দিকে কিছুটা হালকা। মাটিতে থাকা অবস্থায় এরা সাধারণত লেজ বাঁকিয়ে শরীরের ওপর দিকে রাখে। প্রাপ্ত বয়স্কদের ভ্রুর পিছনে ললাটের ওপর চুল থাকে। মাথাসহ দেহের দৈর্ঘ্য ৫১ থেকে ১০৮ সেন্টিমিটার এবং লেজ ৭২ থেকে ১০৯ সেন্টিমিটার লম্বা হয়। পুরুষ হনুমানের ওজন ৯ থেকে ২১ কেজি ও স্ত্রী হনুমানের হনুমানের ওজন ৮ থেকে ১৮ কেজি হয়ে থাকে। এরা ফল, কাণ্ড ও গাছের পাতা খায়।
আমাদের দেশে এরা অতি বিপন্ন এবং এদের সংখ্যা ক্রমশই কমছে। বাংলাদেশ ছাড়াও ভারতে এদের দেখা যায়। এরা সাধারণত বনে-জঙ্গলে দলবদ্ধ হয়ে থাকে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের পরিবেশবাদী সংগঠন সেভ দ্য নেচারের সমন্বয়ক ফয়সাল মাহমুদ জানান, জেলায় প্রায়শই হনুমান ও বানর দেখা যায়। এরা মূলত ভারত থেকে সীমান্ত অতিক্রম করে আসে। হয়ত দলছুট হয়ে বিচ্ছিন্ন হওয়ার কারণে নির্দিষ্ট এলাকা ছেড়ে এই দিকে চলে এসেছে। এই প্রজাতিগুলো মূলত আবাসন সংকট ও খাদ্যাভাবের কারণে ক্রমান্বয়ে কমে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘এই জেলায় আগে বানর ছিল, এখন বিলুপ্ত হয়ে গেছে। আমরা বাবুডাইংকে বন্যপ্রাণীর অভয়াশ্রমের দাবি করে আসছি অনেকদিন থেকে। এখানে অভয়াশ্রম থাকলে এদের সেখানে নিরাপদে রাখলে বংশ বিস্তার হতো, বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা পেতো।’
‘বনের প্রাণীকে বনেই রাখতে হবে, কোনো চিড়িয়াখানায় বন্দি করে রাখা যাবে না’, বলেন ফয়সাল।
Comments