তামিমের দুর্দান্ত থ্রোর পর ক্যাচ ফেললেন মুশফিক-মেহেদী
শুরুতে ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচের লাগাম মুঠোয় নিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক টম ল্যাথাম ও ডেভন কনওয়ে সেই চাপ আলগা করে ফেলেন। তাদের বড় জুটি দুশ্চিন্তা বাড়াচ্ছিল টাইগারদের। দুর্দান্ত থ্রোতে কনওয়েকে আউট করে জুটি ভেঙে দলকে ম্যাচে ফেরালেন অধিনায়ক তামিম ইকবাল। এরপর জোড়া শিকারের সুযোগ এসেছিল বাংলাদেশের সামনে। কিন্তু জিমি নিশামের সহজ ক্যাচ গ্লাভসে জমাতে পারেননি মুশফিকুর রহিম। পরে ল্যাথামের ক্যাচ ফেলে দেন শেখ মেহেদী হাসান।
মঙ্গলবার সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ক্রাইস্টচার্চের হ্যাগলি ওভালে মুখোমুখি হয়েছে দুদল। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে বাংলাদেশ তুলেছে ৬ উইকেটে ২৭১ রান। এই প্রতিবেদন লেখার সময়, ৩৭ ওভারে শেষে নিউজিল্যান্ডের রান ৪ উইকেটে ১৮২। উইকেটে আছেন ল্যাথাম ৫৯ ও নিশাম ৫ রানে। জয়ের জন্য ১৩ ওভারে তাদের চাই আরও ৯০ রান। আধুনিক ক্রিকেটে এই সমীকরণ মেলানো ব্যাটিংরত দলের জন্য কঠিন কিছু নয়। তাই অনেক সুযোগ নষ্ট করার আক্ষেপে পোড়ার বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে বাংলাদেশের।
কনওয়ে-ল্যাথামের চতুর্থ উইকেট জুটিতে পঞ্চাশ আসে ৭২ বলে, শতরান ১২৩ বলে। তেমন কোনো ঝুঁকি তারা নেননি, বাংলাদেশের বোলারদের সুযোগও দেননি সেভাবে। শেখ মেহেদী হাসান, মোস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদরা কিছু হাফ-চান্স তৈরি করেন বটে। কিন্তু তা উইকেট পাওয়ার জন্য যথেষ্ট হচ্ছিল না। অবশেষে তামিম দেখান চমক।
তাসকিনের করা ইনিংসের ৩৪তম ওভারের চতুর্থ বল মিড-অফে ঠেলে রান নিতে দৌড় দেন কনওয়ে। তামিম ছিলেন তৈরি। চটপট বল হাতে জমিয়ে করেন দারুণ এক থ্রো। সরাসরি তা গিয়ে লাগে স্টাম্পে। সঙ্গে সঙ্গেই আঙুল উঁচিয়ে তামিম ইঙ্গিত করেন, ক্রিজে পৌঁছাতে পারেননি কনওয়ে। পরে থার্ড আম্পায়ার টিভি রিপ্লে দেখে দেন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত।
৭৩ বলে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটি তুলে নেন বাঁহাতি কনওয়ে। তিনি সাজঘরে ফেরেন ৯৩ বলে ৭২ রান করে। তার ইনিংসে ছিল ৭ চার। তার বিদায়ে ভাঙে ১৪৩ বলে ১১৩ রানের জুটি। এরপর ক্যারিয়ারের ১৭তম হাফসেঞ্চুরির দেখা পান ল্যাথাম, মুখোমুখি হওয়া ৬৪তম বলে।
জুটি ভেঙে উজ্জীবিত হয়ে ওঠা বাংলাদেশের স্বস্তি মিইয়ে যেতে সময় লাগেনি। ৩৬তম ওভারের প্রথম বলে মুশফিক সুযোগ হাতছাড়া করেন। তাতে হতাশায় পুড়তে হয় পেসার তাসকিনকে। সবশেষ ২০১৯ বিশ্বকাপেও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে রানআউট মিস করেছিলেন উইকেটরক্ষক মুশি। রোমাঞ্চকর ম্যাচটা হেরেছিল বাংলাদেশ। ৩৭তম ওভারে ল্যাথামের ফিরতি লোপ্পা ক্যাচ অবিশ্বাস্যভাবে হাতে জমাতে পারেননি মেহেদী।
নিশাম জীবন পান ব্যক্তিগত ৩ রানে। ল্যাথাম বেঁচে যান ৫৮ রানে। স্বল্প সময়ের মধ্যে কিউই অধিনায়ক আরও তিনটি সুযোগ দিয়েছিলেন। সেগুলো কাজে লাগাতে বাংলাদেশের ফিল্ডারদের অসাধারণ কিছু করে দেখাতে হতো। তবে তারা পারেননি।
এর আগে মোস্তাফিজ-মেহেদীর নৈপুণ্যে দলীয় ৫৩ রানের মধ্যে ৩ উইকেট খোয়ায় স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড। মার্টিন গাপটিল ২০ রান করে পরাস্ত হন মোস্তাফিজের কাটারে। হেনরি নিকোলস ১৩ ও উইল ইয়াং ১ রান করে বোল্ড হন মেহেদীর ঘূর্ণিতে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে, নিউজিল্যান্ডের মাটিতে তাদের বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম জয়ের অপেক্ষা আরও বাড়ার সম্ভাবনা জোরালো।
Comments