বাইডেন ক্ষমতায় আসার পর উত্তর কোরিয়ার প্রথম অস্ত্র পরীক্ষা
জো বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম অস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছে উত্তর কোরিয়া। আজ বুধবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানায়, তিন মার্কিন কর্মকর্তা উত্তর কোরিয়ার অস্ত্র পরীক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গত রোববার সকালে উত্তর কোরিয়ার নিক্ষেপ করা দুটি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করেছে দক্ষিণ কোরিয়ার সেনাবাহিনী। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় পরে এটি সাংবাদিকদের জানায়।
মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ‘আমাদের সামরিক বাহিনী যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতায় ক্ষেপণাস্ত্রগুলো পর্যবেক্ষণ করছে ও মিসাইলগুলো শনাক্ত করেছে।
ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর সুনির্দিষ্ট বিশেষত্ব নিয়েও বিশ্লেষণ করছে বলে মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক গত সপ্তাহে একেবারে তলানিতে গিয়ে ঠেকার পরই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করলো উত্তর কোরিয়া।
এক মার্কিন কর্মকর্তা সিএনএনকে জানান, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নয়, উত্তর কোরিয়া স্বল্প-পরিসরের প্রজেক্টাইলস, সম্ভবত আর্টিলারি বা ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে। এটি বাইডেন প্রশাসনের কাছে তেমন গুরুতর লঙ্ঘন নয় এবং এটি পিয়ংইয়ংয়ের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক এগিয়ে নিতে যুক্তরাষ্ট্রকে আটকাবে না।
সিএনএন জানিয়েছে, এই পরীক্ষাটি ব্যাপকভাবে প্রত্যাশিত ছিল। কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞরা দীর্ঘদিন ধরেই ধারণা করেছিলেন যে, উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন এই অঞ্চলে দেশটির গুরুত্ব সম্পর্কে বাইডেন প্রশাসনের কাছে একটি বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করবেন।
মঙ্গলবার কূটনীতির ভবিষ্যতের প্রচেষ্টার কথা উল্লেখ করে ওই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘এই সপ্তাহের শেষে যা কার্যক্রম চলেছে তাতে আমাদের দিক থেকে এই দরজাটি (কূটনীতি) বন্ধ করার মতো না।’
মঙ্গলবার এই পরীক্ষার বিষয়ে জানতে চাইলে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা (এটা থেকে) শিখেছি যে (পিয়ংইয়ংয়ের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কে) খুব বেশি কিছু পরিবর্তিত হয়নি।’
তবে, প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উত্তর কোরিয়ার এমন কর্মকাণ্ডের গুরুত্বকে অস্বীকার করলেও তারা আবারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে, ওই অঞ্চলে মার্কিন বাহিনী সর্বদা প্রস্তুত ও অতিরিক্ত সতর্ক অবস্থায় আছে।
এক শীর্ষ কর্মকর্তা সিএনএনকে বলেন, ‘এই গ্রহে উত্তর কোরিয়ার ওপরেই আমাদের সবচেয়ে বেশি নজরদারি রয়েছে। আমাদের বাহিনী সর্বদা প্রস্তুত ও অতিরিক্ত সতর্ক আছে।’
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘উত্তর কোরিয়ার পক্ষে বিভিন্ন সিস্টেমের পরীক্ষা করা সাধারণ বিষয়... আমরা প্রকাশ্যে এ ধরনের পরীক্ষায় সাড়া দিই না। এটি এমন একটি ব্যবস্থা যা জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের রেজ্যুলেশনের আওতাভুক্ত নয়। উত্তর কোরিয়া যেভাবে পরীক্ষা চালায় এটি তার একটি স্বাভাবিক অংশ। আমরা বিশ্বাস করি না যে, এই পরিস্থিতিতে এই বিষয়গুলো নিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে দেওয়া আমাদের পক্ষে লাভজনক হবে। তাই কোরিয়ান উপদ্বীপে আমরা “স্বাভাবিক” কার্যক্রম হিসেবেই এই ক্রিয়াকলাপগুলো বিবেচনা করছি।’
অস্ত্র পরীক্ষার সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে উত্তর কোরিয়া তুলনামূলকভাবে নীরব রয়েছে। এর আগে দেশটির সামরিক ক্ষমতা বা যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরোধের ক্ষমতা নিয়ে কথা বললেও এখন সেটি থেকে বিরত আছে।
অন্যদিকে, আমেরিকার আঞ্চলিক মিত্র দেশ দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানও একইভাবে নীরব আছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার আইনপ্রণেতা হা তায়ে-কেউং এক ফেসবুক পোস্টে জানান, অতীতে যেমন ছিল তেমনভাবে এ উৎক্ষেপন নিয়ে ঘোষণা না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
Comments