অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন সাময়িকভাবে রপ্তানি বন্ধ করেছে ভারত

অক্সোফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিনের সব ধরনের রপ্তানি সাময়িকভাবে বন্ধ করেছে ভারত। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্রের বরাত দিয়ে আজ বৃহস্পতিবার বিবিসির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতে করোনার সংত্রমণ বেড়ে যাওয়ায় শিগগির তাদের অভ্যন্তরীণ চাহিদা বাড়ার সম্ভাবনা থেকেই ভারত ভ্যাকসিন রপ্তানি সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। নিজস্ব জনগণকে অগ্রাধিকার দিতে ভারতের ভ্যাকসিন প্রয়োজন।
বিবিসি জানিয়েছে, দেশটিতে আগামী ১ এপ্রিল থেকে ৪৫ বছরের বেশি বয়সীরা ভ্যাকসিন নিতে পারবেন। ভারতীয় কর্মকর্তারা বলছেন, এতে করে দেশের অভ্যন্তরে ভ্যাকসিনের চাহিদা বাড়বে। তবে, কর্মকর্তারা ভ্যাকসিন রপ্তানি বন্ধকে ‘সাময়িক’ বলেও উল্লেখ করেছেন।
ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র বিবিসিকে জানায়, ‘রপ্তানি বন্ধ একটি সাময়িক উদ্যোগ। এখন দেশীয় চাহিদাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।’
তারা জানান, এপ্রিল পর্যন্ত ভ্যাকসিন সরবরাহের ওপর চাপ তৈরির সম্ভাবনা আছে। তবে, মে’তে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে পারে। ততদিনে দেশটিতে কমপক্ষে আরও একটি নতুন ভ্যাকসিনকে জরুরি অনুমোদন দেওয়া হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
ভ্যাকসিন রপ্তানি স্থগিত হওয়ার প্রভাব কোভ্যাক্স স্কিমের আওতায় থাকা প্রায় ১৯০টি দেশের ওপর পড়তে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) নেতৃত্বে পরিচালিত কোভ্যাক্স স্কিমের লক্ষ্য হলো সব দেশগুলোর মধ্যে ভ্যাকসিনগুলোর সুষ্ঠু বণ্টন নিশ্চিত করা।
অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিনটি ভারতে উৎপাদিত হচ্ছে ‘কোভিশিল্ড’ নামে। ভারত এ পর্যন্ত ৭৬টি দেশে ছয় কোটিরও বেশি ডোজ ভ্যাকসিন রপ্তানি করেছে, যার বেশিরভাগই অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার। সম্প্রতি ভারতের বৃহত্তম ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া যুক্তরাজ্য ও ব্রাজিলসহ বেশ কয়েকটি দেশে অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের চালান পৌঁছাতে দেরি করে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার থেকে ভারত আর কোনো দেশে ভ্যাকসিন রপ্তানি করেনি।
মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র রয়টার্সকে জানায়, ‘আপাতত কিছু সময়ের জন্যে হলেও অন্য সব কিছু পিছিয়ে গেছে। ভারতের পরিস্থিতি স্থিতিশীল না হওয়া পর্যন্ত রপ্তানি বন্ধ থাকবে।’
তবে, এই সিদ্ধান্ত সম্পর্কে ভারত সরকার বা সেরাম ইনস্টিটিউটের পক্ষ থেকে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
গত ৫ নভেম্বর বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের মাধ্যমে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তিন কোটি ডোজ ভ্যাকসিন কেনার চুক্তি করেছে বাংলাদেশ সরকার। জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে দুই চালানে সেই চুক্তির ৭০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন ইতোমধ্যে বাংলাদেশে পৌঁছেছে। এর আগে, ভারত থেকে উপহার হিসেবে বাংলাদেশকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ২০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। যা গত ২১ জানুয়ারি বাংলাদেশে এসে পৌঁছেছে।
আরও পড়ুন:
করোনার টিকা: বিদেশিদের নিবন্ধন শুরু ১৭ মার্চ
গতি হারিয়েছে করোনা টিকাদান কর্মসূচি
সেরাম থেকে আরও ৪ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন কিনতে চায় বাংলাদেশ: রয়টার্স
মাসের শেষ দিকে কোভ্যাক্সের ১.৩১ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন পাব: স্বাস্থ্য সচিব
ঢাকায় পৌঁছাল ৫০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন
দ্বিতীয় চালানে দেশে এলো ২০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন
বাংলাদেশে বেসরকারিভাবে বিক্রির ভ্যাকসিন দিতে দেরি করছে সেরাম: রয়টার্স
বেসরকারিভাবেও ভ্যাকসিন বিক্রি করবে বেক্সিমকো: রয়টার্স
ভারতের চেয়ে ৪৭ শতাংশ বেশি দামে ভ্যাকসিন কিনবে বাংলাদেশ: রয়টার্স
ভ্যাকসিন নিয়ে দ্বিধা ও বিতর্ক কেন?
অক্সফোর্ড ভ্যাকসিনের কারণে রক্ত জমাট বাঁধা এবং আমাদের যত ভ্রান্তি!
অক্সফোর্ড ভ্যাকসিন কতটা সুরক্ষা নিশ্চিত করে?
ভ্যাকসিন নিলেও করোনায় আক্রান্তের সম্ভাবনা থাকে?
ভারতে করোনার নতুন স্ট্রেইন, বাংলাদেশে সতর্কতা জরুরি
৪ সপ্তাহের পার্থক্যে দ্বিতীয় ডোজে ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা ৫৩ শতাংশ, ১২ সপ্তাহে ৮৩ শতাংশ
ভ্যাকসিন নেওয়া এবং না নেওয়া, মানুষ চিহ্নিত হবে দুই দলে
করোনার নতুন স্ট্রেইন শনাক্ত হয় না বাংলাদেশের পিসিআর পরীক্ষায়
মত-দ্বিমত ‘করোনাভাইরাসে দ্বিতীয়বার আক্রান্তের সম্ভাবনা নেই?’
ভ্যাকসিন কবে পাব এবং অক্সফোর্ড ভ্যাকসিনের ‘ভুল ডোজ’র আশাবাদ
যুক্তরাজ্যের স্ট্রেইন দেশে শনাক্ত: ‘দেরিতে জানিয়ে নিজের পায়ে নিজেই কুড়াল মারছি’
করোনার নতুন স্ট্রেইন: করছি কী, করণীয় কী
করোনাভাইরাসের নতুন স্ট্রেইনে ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা ‘কিছুটা কমতে পারে’
Comments