কনওয়ে-মিচলের সেঞ্চুরিতে নিউজিল্যান্ডের বিশাল পুঁজি
বেসিন রিজার্ভের সহায়ক কন্ডিশনে দারুণ বল করলেন তাসকিন আহমেদ আর রুবেল হোসেন। তবে আবারও ফিল্ডারদের হাত ফসকে বেরুলো ক্যাচ, হাতছাড়া হলো রান আউটের সুযোগ।প্রথম দিকে দ্রুত ৩ উইকেট ফেলে নিউজিল্যান্ডকে চেপে ধরেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু ডেভন কনওয়ের আর ড্যারেল মিচলের দুর্দান্ত দুই সেঞ্চুরিতে ঠিকই বিশাল পুঁজি পেয়ে গেছে স্বাগতিকরা।
শুক্রবার ওয়েলিংটনে বাংলাদেশের ৫০তম স্বাধীনতা দিবসের দিন আগে ব্যাট করে ৬ উইকেটে ৩১৮ রান করেছে নিউজিল্যান্ড। কনওয়ে করেন ১১০ বলে ১২৬, মিচেল ৯২ বলে অপরাজিত থাকেন ১০০ রান করে।
আগেই সিরিজ হারা তামিম ইকবালের দলের সামনে হোয়াইটওয়াশ এড়াতে এবং ওয়ানডে সুপার লিগে মূল্যবান ১০টি পয়েন্ট পেতে কঠিন চ্যালেঞ্জ।
টস হেরে পেসের ঝাঁজে নিউজিল্যান্ডকে কাঁপালেন তাসকিন আহমেদ আর রুবেল হোসেন। দারুণ সব ডেলিভারিতে ব্যাটসম্যানদের পরাস্ত করেও উইকেটটা কেবল মিলছিল না। আবারও যে হাত ফসকে বেরুলো ক্যাচ। হেনরি নিকোলসের ক্যাচ একবার ছাড়লেন মাহমুদউল্লাহ, পরে ফের সহজ ক্যাচ ছেড়ে দিলেন মুশফিকুর রহিম। দুবারই অভাগা বোলারের নাম তাসকিন।
অষ্ঠম ওভারে গিয়ে বাংলাদেশ পায় প্রথম সাফল্য। তাসকিনের বেরিয়ে যাওয়া ডেলিভারিতে ব্যাট ছুঁইয়ে গালিতে লিটন দাসের হারে ক্যাচ দেন ধুঁকতে থাকা নিকোলস।
পরের ওভারেই রুবেল হোসেনের আঘাত। একাদশে এসেই নিজের সামর্থ্যের প্রমাণ দেওয়া এই পেসার মার্টিন গাপটিলকে মিড অনে লিটনের দ্বিতীয় ক্যাচে পরিণত করেন।
এই ওভার পর আবার রুবেল। চোট কাটিয়ে ফেরা অভিজ্ঞ রস টেইলর রুবেলের বাড়তি বাউন্সের বলে উইকেটের পেছনে সহজ ক্যাচে নেন বিদায়। ৫৭ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলে কিউইরা।
এরপর বাংলাদেশ চাপ বাড়াচ্ছিল। কিন্তু আগের দিনের মতো দাঁড়িয়ে যান ডেভন কনওয়ে। অধিনায়ক টম ল্যাথামের সঙ্গে আবার বাধেন জুটি। জুটি পেরিয়ে যায় ৫০। নিউজিল্যান্ড দেয় বিপর্যয় সামাল।
আগের দিনের মতই বিপদজনক হওয়ার আভাস দিচ্ছিলেন ল্যাথাম। বল হাতে নিয়েই তাকে ফেরান সৌম্য সরকার। তবে তাতে বড় কৃতিত্ব পাওনা থাকবে মেহেদী হাসান মিরাজেরও। ল্যাথামের দেওয়া ক্যাচ পয়েন্ট লাফিয়ে চিতার ক্ষিপ্রতায় হাতে জমান তিনি। সৌম্য তার স্পেলে রান আটকে দেওয়ার কাজটা করে যাচ্ছিলেন দারুণভাবে। প্রথম ৬ ওভার বল করে দেন মাত্র ২২ রান, সঙ্গে ল্যাথামের উইকেট। পরের দুই ওভারে দিয়েছেন আরও ১৫ রান।
কিন্তু এরপর আর জুটিই ভাঙ্গা যাচ্ছিল না। ড্যারেল মিচেলকে রান আউটে ফেরানোর সুযোগ হাতছাড়া করেন বদলি ফিল্ডার আফিফ হোসেন। কনওয়ে ছুটেন সেঞ্চুরির দিকে। জুটি পেরিয়ে যায় শতরান। বাংলাদেশের সম্ভাবনা অনেকটা ফিকে করে দিতে এগুতে থাকেন তারা। হাতে উইকেট থাকায় স্লগ ওভারে ঝড় তোলাও সহজ হয়ে যায়।
৯৫ বলে তাসকিনকে বাউন্ডারিতে পাঠিয়ে ওয়ানডেতে প্রথম তিন অঙ্কের দেখা পেয়ে যান কনওয়ে। এর আগেই ফিফটি তুলে ফেলেন মিচেল। এই মিচেলকেও জীবন দেন মাহমুদউল্লাহ। আবারও বোলার তাসকিন। এবার ৬৩ রানে থাকা মিচেলের সহজ ক্যাচ শর্ট আউটসাইড অফে ছেড়ে দেন অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটার। জীবন পাওয়া মিচেল পরে অপরাজিত থাকেন ঠিক ১০০ রানে।
পঞ্চম উইকেটে ১৫৯ রানের জুটির পর অবশেষে উইকেট পায় বাংলাদেশ। ৪৮তম ওভারে মোস্তাফিজকে ছক্কা মারতে গিয়ে ডিপ মিডউইকেটে ক্যাচ দেন ১২৬ করা কনওয়ে। মিচেল আর আউটই হননি।
শেষ ওভারের আগে সেঞ্চুরি থেকে মিচেল ছিলেন ১৭ রান দূরে। মোস্তাফিজকে পিটিয়ে তা তুলে নেন তিনি। অবশ্য অবদান আছে মুশফিকেরও। শেষ বলে বল ধরতে না পেরে তাকে রান আউটের সহজ সুযোগ হাতছাড়া করেন বাংলাদেশের কিপার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
নিউজিল্যান্ড: ৫০ ওভারে ৩১৮/৬ (গাপটিল ২৬ , নিকোলস ১৮, কনওয়ে ১২৬, টেইলর ৭, ল্যাথাম ১৮, মিচেল ১০০* , নিশাম ৪ , স্যান্টনার ১* ; মোস্তাফিজ ১/৮৭, তাসকিন ১/৫২, রুবেল ৩/৭০, শেখ মেহেদী ০/৪৬, মিরাজ ০/২৩, সৌম্য ১/৩৭)
Comments