মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি নরেন্দ্র মোদির শ্রদ্ধা
সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি এক টুইটে বলেন, জাতীয় স্মৃতিসৌধে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধকালীন নিজেদের উৎসর্গ করা বীরদের আত্মত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
ভারতের প্রধানমন্ত্রীর অফিশিয়াল টুইটারেও জাতীয় স্মৃতিসৌধে গিয়ে মোদির শ্রদ্ধা জানানোর কথা বলা হয়েছে।
রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নেমে আনুষ্ঠানিকতা শেষে প্রথমেই জাতীয় স্মৃতিসৌধে যান মোদি।
ঢাকা পৌঁছানোর পর নিজের ব্যক্তিগত টুইটে মোদি বলেন, ‘ঢাকা পৌঁছলাম। বিমানবন্দরে বিশেষ অভ্যর্থনা জানানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ। এই সফর আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও দৃঢ় করার ক্ষেত্রে অবদান রাখবে।’
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে যোগ দিতে দুই দিনের সরকারি সফরে আজ শুক্রবার সকাল ১১টার দিকে ঢাকায় এসে পৌঁছেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বিমানবন্দরে ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে নরেন্দ্র মোদিকে নিয়ে শেখ হাসিনা অভ্যর্থনা মঞ্চে পৌঁছালে তিন বাহিনীর সুসজ্জিত একটি দল সেসময় গার্ড অব অনার দেয়।
ঢাকার উদ্দেশে রওনার আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর অফিশিয়াল টুইটারে বলা হয়েছে, ঢাকার উদ্দেশে উড়োজাহাজে উঠেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বাংলাদেশ সফরকালে তিনি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন, যেগুলোর লক্ষ্য বন্ধুপ্রতিম প্রতিবেশী বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতা আরও এগিয়ে নেওয়া।
করোনাভাইরাস মহামারি শুরুর পর এটাই মোদির প্রথম বিদেশ সফর। সফরের প্রথম দিনের কর্মসূচি অনুযায়ী, বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে জাতীয় স্মৃতিসৌধে যাবেন মোদি। এরপর ধানমন্ডি-৩২ এ বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানাবেন তিনি। বিকেলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন হোটেল সোনারগাঁওয়ে তার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। পরে জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে সম্মানিত অতিথি হিসেবে ‘মুজিব চিরন্তন’ অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন মোদি।
এরপরে তিনি রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে বঙ্গবন্ধু-বাপু ডিজিটাল জাদুঘর পরিদর্শন করবেন।
আগামীকাল সফরের দ্বিতীয় দিন সকালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী সাতক্ষীরার যশোরেশ্বরী কালীমন্দির ও গোপালগঞ্জে ওড়াকান্দিতে প্রাণপুরুষ হরিচাঁদ ঠাকুরের মন্দিরে পরিদর্শন করবেন। এরপর বিকেলে ঢাকায় ফিরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিক আলোচনা করবেন নরেন্দ্র মোদি।
এই সফরে বিভিন্ন সমঝোতা স্মারক সই অনুষ্ঠানের পাশাপাশি ভার্চ্যুয়ালি যৌথভাবে বিভিন্ন প্রকল্প উদ্বোধনের কথা রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ভারতের সঙ্গে মেহেরপুরে সংযোগকারী স্বাধীনতা সড়ক, বঙ্গবন্ধু-বাপু ডিজিটাল জাদুঘর উদ্বোধন, চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রেলপথে একটি যাত্রীবাহী ট্রেনের প্রকল্পের বিষয়ে সমঝোতা।
মোদি বাংলাদেশের কাছে ১০৯টি অ্যাম্বুলেন্স হস্তান্তর করবেন। বাংলাদেশের জন্যে তিনি উপহার হিসেবে আনা অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ১২ লাখ ডোজ ভ্যাকসিনও হস্তান্তর করবেন। আগামীকাল সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের পর ঢাকা ছেড়ে যাবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বাংলাদেশের ১০ দিনব্যাপী আয়োজনের সূচনা হয়েছে গত ১৭ মার্চ জাতির জনকের জন্মদিনে। এর আগে মালদ্বীপের রাষ্ট্রপতি ইব্রাহিম মোহাম্মেদ সলিহ, শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে, নেপালের রাষ্ট্রপতি বিদ্যা দেবী ভাণ্ডারি ও ভুটানের প্রধানমন্ত্রী ডা. লোটে শেরিং এই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন।
আরও পড়ুন:
Comments