নিউজিল্যান্ড- ৩২, বাংলাদেশ- ০!

অকল্যান্ডে বৃষ্টির কারণে টি-টেনে পরিণত হওয়া ম্যাচ বাংলাদেশ হেরেছে ৬৫ রানের বড় ব্যবধানে। এদিন লড়াইয়ের কোন পরিস্থিতিই তৈরি করা যায়নি। মাত্র ১০ ওভারেই কিউইদের করা ১৪১ রানের জবাব দিতে নেমে লিটন দাসের দল অলআউট হয়ে গেছে ৭৬ রানে

নিউজিল্যান্ডে গিয়ে এই সফরের আগে স্বাগতিকদের বিপক্ষে সব সংস্করণ মিলিয়ে ২৬ ম্যাচ খেলেছিল বাংলাদেশ। হেরেছিল সবগুলোতেই। এবারও ইতিহাস বদলানো গেল না। ওয়ানডের পর টি-টোয়েন্টি সিরিজেও হোয়াইটওয়াশড বাংলাদেশ। কিউইদের দেশে দুদলের পরিসংখ্যানটা এখন তাই ৩২-০!

অকল্যান্ডে বৃষ্টির কারণে টি-টেনে পরিণত হওয়া ম্যাচ বাংলাদেশ হেরেছে  ৬৫  রানের বড় ব্যবধানে। এদিন লড়াইয়ের কোন পরিস্থিতিই তৈরি করা যায়নি। মাত্র ১০ ওভারেই কিউইদের করা ১৪১ রানের জবাব দিতে নেমে লিটন দাসের দল অলআউট হয়ে গেছে ৭৬  রানে। লেগ স্পিনার টড অ্যাস্টল মাত্র ২ ওভারেই ১৩ রান দিয়ে পেয়েছেন ৪ উইকেট! তবে নিউজিল্যান্ডের বড় জয়ের নায়ক ২৯ বলে ৭১ করা ফিন অ্যালেন আর ১৯ বলে ৪৪ করা মার্টিন গাপটিল।

এই ম্যাচে নিয়মিত অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ খেলেননি চোটের কারণে। চোটে আগেই ছিটকে গিয়েছিলেন মুশফিকুর রহিম। তামিম ইকবাল ব্যক্তিগত কারণে ওয়ানডে সিরিজের পরই ফিরে এসেছিলেন দেশে। ১৬ বছর পর তাই পাঁচ বড় তারকাকে ছাড়া নেমেছিল বাংলাদেশ।

তবে নতুন এই পথচলা হয়েছে দুঃস্বপ্নের মতোন!

এদিন খেলার অর্ধেকেই ম্যাচ নিউজিল্যান্ডের হাতে তুলে দেন বোলাররা। লক্ষ্য কঠিন হলেও লড়াই জমিয়ে বিনোদন দেওয়া যেত।  প্রায় অসম্ভবের কাছাকাছি রান তাড়ায় নেমে সৌম্য সরকার টিম সাউদিকে দুই চারে ভাল কিছুর আভাস দিয়েছিলেন। কিন্তু এরপর ওই ওভারেই দুই উইকেট নেই। পঞ্চম বল সৌম্যের প্যাডে লেগে উঠলে তা দারুণ ক্ষিপ্রতায় ছুটে গিয়ে হাতে জমান সাউদি, ব্যাট-প্যাড ক্যাচের রায় দিলেও যথেষ্ট রিপ্লে না দেখে টিভি আম্পায়ারের নেওয়া সিদ্ধান্তে বিতর্ক থেকেছে। কিন্তু কোন বিতর্ক নেই লিটনের বাজে বিদায়ে। অধিনায়ক হিসেবে বড় উপলক্ষ ছিল তার। কিন্তু প্রথম বলেই স্কুপ করতে গিয়ে হয়েছেন বোল্ড।

অ্যাডাম মিলনেকে দুই ছক্কায় উড়িয়েছিলেন নাঈম শেখ। কিন্তু এরপর কয়েকটি ডটবল দিয়ে চাপ বাড়িয়ে ফেলেন তিনি। আউট হয়েছেন ১৩ বলে ১৯ করে।

একাদশে ফিরে নিজেকে এবারও চেনাতে পারেননি নাজমুল হোসেন শান্ত। ৬ বল খেলে তার সংগ্রহ ৮ রান। মেরেছেন ১টি চার। আফিফ হোসেনও করেছেন সমান রান। চারের বদলে তিনি মেরেছেন একটি ছক্কা। ৬ষ্ঠ ওভারে তার বিদায়ে ৫২ রানেই ৬ উইকেট হারিয়ে ফেলে সফরকারীরা।

এরপর খেলার বাকি কিছু ছিল না। বাংলাদেশ ১০ ওভারের মধ্যেই গুটিয়ে যায় কীনা এমন শঙ্কাই বরং ঘিরে ধরেছিল। এই শঙ্কা শেষ ওভারে গিয়ে সত্যিও হয়েছে। তবে অলআউট না হলেও বিবর্ণ দশার আসতে যেত না কিছু।

এর আগে টস হেরে ব্যাটিং স্বর্গে নেমে খুনে হয়ে উঠেন মার্টিন গাপটিল আর ফিন অ্যালেন। তাদের বিস্ফোরক হতে দিয়ে বোলাররা ছিলেন সাদামাটা। ফিল্ডাররা ছিলেন উদার। তাদের হাত গলে বেরিয়েছে ৫টি ক্যাচ!

প্রথম ৪ ওভারেই ৫৫ করে ফেলে নিউজিল্যান্ড। ততক্ষণে ২টি ক্যাচ ফেলা সারা বাংলাদেশের।

যেই বল করতে আসছিলেন, মার খাওয়াই যেন ছিল নিয়তি। অবশ্য বুদ্ধি খাটিয়ে বোলিং বৈচিত্র্যও দেখা যায়নি। মাঠের আকৃতির কারণে ফিল্ডিং সাজাতেও হিমশিম খেতে দেখা যায় বাংলাদেশকে।

৬ষ্ঠ ওভারে বল করতে এসে শেখ মেহেদী আনেন প্রথম ব্রেক থ্রো। প্রথম তিন বলে ১৬ রান দেওয়ার পর তার চতুর্থ বলে ১৯ বলে ৫ ছক্কায় ৪৪ করে বিদায় নেন গাপটিল। উইকেট পেলেও ওই ওভারে মেহেদী দেন ২০ রান।

পরের ওভারে রুবেলের বলে ৪ মেরে মাত্র ১৮ বলে ফিফটি তুলে নেন অ্যালেন। ঠিক পরের বলেই ক্যাচ দিয়েছিলেন। লং অফ থেকে ছুটে এসে তা জমাতে পারেননি সৌম্য সরকার। অ্যালেন ক্যাচ দিলেন পরেও। আফিফ হোসেন বাউন্ডারি লাইনে একবার তাকে জীবন দিলেন। ৭১ রানের মাথায় শরিফুলের বলে সহজ ক্যাচ দিয়েও পার পান তিনি। এবার বোলার শরিফুল যথেষ্ট সময় পেয়েও বলের নিচে যেতে পারেননি।

শেষ পর্যন্ত ২৯ বলে ৭১ করা অ্যালেন ফেরেন তাসকিনের শেষ ওভারে। শর্ট থার্ডম্যান থেকে অনেকখানি পেছনে গিয়ে সেই ক্যাচ লুফেন বদলি ফিল্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ। তবে ততক্ষণে নিউজিল্যান্ডের রানের পাহাড়ে যাওয়ার কাজ হয়েই গেছে।

সেই পাহাড় ডিঙ্গাতে গিয়ে বাংলাদেশ কেবল প্রথম কয়েক বলই ম্যাচে ছিল।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

নিউজিল্যান্ড: ১০ ওভারে    ১৪১/৩  (গাপটিল ৪৪, অ্যালেন ৭১ , ফিলিপস ১৪, মিচেল ১০, চ্যাপম্যান ০  ; নাসুম ০/২৯ , তাসকিন ১/২৪, শরিফুল ১/২১, রুবেল ০/৩৩, শেখ মেহেদী ১/৩৪)

বাংলাদেশ:    ৯.৩ ওভারে ৭৬  (নাঈম ১৯, সৌম্য ১০, লিটন ০, শান্ত ৮, আফিফ ৮, মোসাদ্দেক ১৩, শেখ মেহেদী ০, শরিফুল ৬, তাসকিন ৫, রুবেল ৩* , নাসুম ৩  ; সাউদি ৩/১৫, মিলনে ১/২৪ , ফার্গুসেন ১/১৩ , অ্যাস্টেল ৪/১৩, ফিলিপস ১/১১)

ফল: নিউজিল্যান্ড ৬৫ রানে জয়ী। 

সিরিজ: নিউজিল্যান্ড ৩-০ তে জয়ী। 

Comments

The Daily Star  | English

Political parties want road map to polls

Leaders of major political parties yesterday asked Chief Adviser Professor Muhammad Yunus for a road map to the reforms and the next general election.

39m ago