স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই শেবাচিম হাসপাতালে

করোনার ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণেও বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বহির্বিভাগে রোগীদের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত যাচ্ছে না। ছবি: টিটু দাস

দক্ষিণাঞ্চলের সবচেয়ে বড় স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। স্বাস্থ্য সুরক্ষার জিনিসপত্র অবহেলায় অবস্থায় পড়ে আছে। অব্যবস্থাপনার জন্য অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধার অভাবকে দায়ী করছেন হাসপাতাল পরিচালনার সঙ্গে যুক্তরা।

দেশে করোনা সংক্রমণ যখন বেড়ে যাচ্ছে তখন স্বাস্থ্যবিধি না মানার কারণে দক্ষিণাঞ্চলের সবচেয়ে বড় এই হাসপাতালটির সেবাগ্রহিতারা ঝুঁকিতে পড়ছেন।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে শেবাচিম হাসপাতালের নীচ তলার আউটডোরে সরেজমিনে দেখা যায়, অন্তত কয়েক হাজার মানুষ ডাক্তার দেখাতে এসেছেন। তাদের অধিকাংশের মুখে মাস্ক ছিল না। ভিড়ের মধ্যে ন্যূনতম দূরত্ব বজায় রাখার উপায় নেই। ভেঙে পড়ে আছে স্যানিটেশনের সব উপকরণ।

খোদ করোনা ওয়ার্ডেরই এক রোগী জানান, এই ওয়ার্ড নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় না। পানির কল, বাথরুমের ফিটিংসগুলো নেই। সিঁড়িগুলো ভেঙে গেছে। ময়লা জঞ্জালে পরিপূর্ণ এই ওয়ার্ডে দেখভালের কেউ নেই।

করোনা ওয়ার্ডের ইনচার্জ ডা. মনিরুজ্জামান শাহীন জানান, ১৯৬৮ সালে প্রতিষ্ঠিত এই হাসপাতাল সে সময়ের অর্গানোগ্রামে চলছে। সে সময়ে ৩৬০টি বেডের জন্য ২২৪ জন চিকিৎসকের অনুমোদনের বিপরীতে এখন আছেন ১৩৬ জন। হাসপাতালের সিট সংখ্যা ১০০০ থেকে বাড়িয়ে ১১৫০ করা হলেও, লোকবল আগের মতোই রয়ে গেছে। ফলে কোনো কিছুই ঠিকভাবে ব্যবস্থাপনা করা যাচ্ছে না। এতে স্বাভাবিক পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম থেকে শুরু করে চিকিৎসা পর্যন্ত ব্যাহত হচ্ছে।

তিনি জানান, গত ১২ মার্চ হাসপাতালে করোনা রোগীর ছিল মাত্র ১৯ জন। এখন সেখানে আছেন ১০০ জন। করোনা নিয়ে প্রতিদিন গড়ে ২০ থেকে ২৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। এই অবস্থা চলতে থাকলে দুই-তিন দিন পর এখানে রোগী ভর্তি করা সম্ভব হবে না।

এই হাসপাতালে মাত্র ১২টি আইসিইউ বেড থাকলেও এগুলো পরিচালনার মতো লোকবল নেই বলে জানান তিনি।

ডা. মনিরুজ্জামান শাহীন জানান, এই হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. নাজমুলের তত্ত্বাবধানে আইসিইউ বেডগুলো আছে। এখানে পরিপূর্ণ আইসিইউ বিশেষজ্ঞ না থাকায় এই সুবিধা সব সময় দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।

হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. আবদুর রাজ্জাক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে আমরা গণপূর্ত বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছি। কিন্তু, তারা এখনও এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন তিন থেকে চার হাজার বহির্বিভাগের রোগী এবং ভর্তি থাকা প্রায় ১৫০০ রোগী স্বাস্থ্যসেবা নিচ্ছে এই হাসপাতাল থেকে। কিন্তু, প্রয়োজনীয় জনবল না থাকায় এ বিষয়ে কিছু করতে পারছি না। আমরা জনবলের স্বল্পতার বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।’

Comments

The Daily Star  | English

No price too high for mass deportations

US President-elect Donald Trump has doubled down on his campaign promise of the mass deportation of illegal immigrants, saying the cost of doing so will not be a deterrent.

4h ago