মিয়ানমারে সেনা-সংবিধান পুড়িয়ে বিক্ষোভ
মিয়ানমারে সেনাবাহিনী প্রণীত সংবিধান পুড়িয়েছে সেনাবিরোধী বিক্ষোভকারীরা।
রয়টার্স জানায়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখা গেছে, সেনাবাহিনী প্রণীত প্রতীকী সংবিধান পুড়িয়ে সেনা সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে ছবি ও ভিডিও প্রকাশ করছেন বিক্ষোভকারীরা। কয়েকটি পোস্টে দেখা গেছে, জনসভা ও বাড়িতেও সংবিধান পোড়ানো হচ্ছে। একজন আন্দোলনকর্মী একে ‘সংবিধানে আগুন দেওয়ার অনুষ্ঠান’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
দেশটিতে সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর স্বায়ত্তশাসনের দীর্ঘদিনের দাবিতে সু চির দলের আইনপ্রণেতারা একটি ফেডারেল গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তারা ২০০৮ সালে সেনাবাহিনীর প্রণীত সংবিধান বাতিল করারও ঘোষণা দিয়েছিলেন। তবে, মিয়ানমারে সামরিক বাহিনী দীর্ঘদিন ধরে এই ফেডারেল ব্যবস্থার ধারণাটিকে প্রত্যাখ্যান করেছে।
ডিভিবি নিউজ জানিয়েছে, মিয়ানমারের অন্যতম শক্তিশালী বিদ্রোহী দল কাচিন ইন্ডিপেন্ডেন্স আর্মি (কেআইএ) এর সঙ্গে সেনাবাহিনীর সংঘর্ষে কমপক্ষে ২০ সেনা নিহত ও চারটি সামরিক ট্রাক ধ্বংস হয়েছে।
২০ বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে প্রথমবারের মতো মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোকে লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালিয়েছে। এতে কয়েক হাজার গ্রামবাসী তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে গেছে। অনেকে প্রতিবেশি দেশ থাইল্যান্ডে আশ্রয় নিয়েছে।
রয়টার্স তাৎক্ষণিকভাবে খবরটি যাচাই করতে পারেনি। এ বিষয়ে জানতে সামরিক সরকারের এক মুখপাত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।
এদিকে, সামরিক সরকারের বিরোধিতাকারী, বিশেষত গণতন্ত্র প্রচারকারী ও সীমান্তবর্তী অঞ্চলে সংখ্যালঘু বাহিনীর বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছে দেশটিতে ক্ষমতাসীন সেনা সরকার।
বৃহস্পতিবার ভোর থেকে বেশ কয়েকটি শহরে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে জানা যায়। মনিওয়া শহরে পুলিশ গুলি গুলিতে দু'জন আহত হয়েছে।
অ্যাসিসটেন্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনারস (এএপিপি) জানায়, সেনা অভ্যুত্থানের পর দেশটিতে এখন পর্যন্ত পুলিশের গুলিতে কমপক্ষে ৫৩৬ জন নিহত হয়েছে।
বুধবার মিয়ানমারের অন্যতম মিত্র দেশ চীনকে অভ্যুত্থানের জন্য দায়ীদের জবাবদিহি করতে নিজস্ব প্রভাব ব্যবহারের আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
নিরাপত্তা পরিষদ মিয়ানমারের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ ও বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতার নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিলেও চীন, রাশিয়া, ভারত ও ভিয়েতনামের বিরোধিতার কারণে সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখলের বিরুদ্ধে নিন্দা কিংবা ব্যবস্থা নেওয়া হুমকি দিয়ে কঠোর ভাষায় এখন পর্যন্ত কিছু বলতে পারেনি।
আরও পড়ুন-
Comments