সহিংসতার সময় পুলিশ জীবন রক্ষায় গুলি ছুড়েছিল: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

Home Minister-1.jpg
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল| ফাইল ফটো

দেশে হেফাজতে ইসলামের সহিংসতার সময় ‘পুলিশ জীবন রক্ষায় বাধ্য হয়ে গুলি ছুড়েছিল’ বলে জাতীয় সংসদকে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

তিনি জাতীয় সংসদে বলেছেন, গত ২৬ মার্চ থেকে ২৮ মার্চ দেশের সহিংসতা ও হামলার ঘটনায় হেফাজতে ইসলামের যারা জড়িত সবাইকে চিহ্নিত করা হয়েছে। সবাইকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে।

‘ইতোমধ্যে ২২ জনকে আটক করা হয়েছে’ উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘সহিংসতার সময় পুলিশ জীবন রক্ষায় বাধ্য হয়ে গুলি ছুড়েছিল।’

হেফাজতের এই ঘটনায় মোট ১৭ জন মারা গেছেন বলেও জাতীয় সংসদকে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

আজ রোববার সংসদে ৩০০ বিধিতে দেওয়া এক বিবৃতিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘২৬ মার্চ স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী পালনের কর্মসূচি নেওয়া হয়। এর মধ্যে মসজিদে মসজিদে আওয়ামী লীগের দোয়া মাহফিলের কর্মসূচিও ছিল। বায়তুল মোকাররমে নামাজ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীরা ছোটাছুটি শুরু করেন। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা যেখানে বসে ছিলেন তারা সেদিকে আসতে থাকেন। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সরে গেলেও দেখা যায় বৃষ্টির মতো ইট নিক্ষেপ করা হচ্ছে।’

‘সারা দেশে তারা গুজব ছড়িয়েছে, মুসল্লিদের ওপর আক্রমণ করা হয়েছে। এই গুজবকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রামের হাটহাজারী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিলেটসহ বিভিন্ন জায়গায় সহিংসতা হয়েছে,’ যোগ করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, ‘হাটহাজারীতে হেফাজতে ইসলামের কর্মীরা থানা ভবন আক্রমণ করে। জীবন রক্ষায় বাধ্য হয়ে পুলিশ গুলি ছুড়ে। সেদিন চার জন মৃত্যুবরণ করে। ব্রাহ্মণবাড়িয়াতেও একই ঘটনা ঘটেছিল। মাদ্রাসা থেকে বেরিয়ে এসে ছাত্ররা বিভিন্ন জায়গায় ভাঙচুর শুরু করে। সেখানে একজন মৃত্যুবরণ করে। ছয় শ থেক সাত শ মাদ্রাসা সেখানে আছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া একটি রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। তারা পুলিশ,  থানা, পুলিশ লাইন, ডিসির অফিসে হামলা চালায়। অরাজক পরিস্থিতিতে পুলিশ বিজিবি গুলি করে। ২৭ মার্চ এখানে সাত জনের মৃত্যু হয়। ২৮ মার্চের সহিংসতায় আরও পাঁচ জন মারা যায়। মোট মৃত্যুবরণ করে ১৭ জন।’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘একটি ছবিতে দেখা গেছে নরসিংদীতে একজন ঘোড়ায় চড়ে এসেছিল, তাকে ধরা হয়েছে। পিস্তল উঁচু করে ফায়ার করছেন একজন। সবাইকে চিহ্নিত করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘গতকাল সোনারগাঁ উপজেলায় তাণ্ডব দেখা গেছে। সোনারগাঁও উপজেলার একটি বেসরকারি হোটেলে হেফাজতের কেন্দ্রীয় নেতা মামুনুল হক এক নারীকে নিয়ে অবস্থান করছিলেন। ওই নারী কে তা তিনি টেলিভিশনে নিজের মুখে স্বীকার করেছেন। তিনি তার স্ত্রী নন। এ বিষয়ে আরও ঘটনা জেনে সবাইকে জানানো হবে।’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ওই ঘটনার পর দেখলাম ওই রিসোর্টের ওপর আক্রমণ। কেনো এই আক্রমণ আমার জানা নেই। সেখানে বিদেশি কয়েকজন ছিলেন। পুলিশ ও বিজিবি গিয়ে তাদের রক্ষা করেছেন।’

আসাদুজ্জামান খান আরও বলেন, ‘হঠাৎ করে এই ধরনের তাণ্ডব কেনো, নিশ্চয়ই এর কোনো উদ্দেশ্য রয়েছে। আমরা তদন্ত করে দেখছি। যারাই তাণ্ডব করে থাকুক তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা গ্রহণ করেছি।’

আরও পড়ুন:

হেফাজতের তাণ্ডব: ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা

হেফাজতে ইসলাম ইসলামবিরোধী, জঙ্গি ও স্বাধীনতাবিরোধী: শেখ সেলিম

‘রণক্ষেত্র’ ব্রাহ্মণবাড়িয়া

এবার হেফাজতের সেই তাণ্ডবের তদন্ত শুরু

হেফাজতের তাণ্ডব শক্ত হাতে মোকাবিলার আহ্বান

‘হেফাজতের তাণ্ডব ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগ’

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঘটনা তদন্তে ৩ সদস্যের কমিটি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ভূমি অফিস, গণগ্রন্থাগার, আলাউদ্দিন খাঁ সঙ্গীতাঙ্গনে আগুন

Comments

The Daily Star  | English

Cops gathering info on polls candidates

Based on the findings, law enforcers will assess security needs in each constituency and identify candidates who may pose risks.

13h ago