অ্যাতলেতিকোর সঙ্গে পয়েন্টের ব্যবধান ১-এ নামাল বার্সা
বল দখল আর আক্রমণে আধিপত্য দেখিয়েও গোল পাচ্ছিল না বার্সেলোনা। তাতে অ্যাতলেতিকো মাদ্রিদের সঙ্গে তাদের পয়েন্টের ব্যবধান কমানোর সুযোগ হাতছাড়া হওয়ার শঙ্কা জেগেছিল। কিন্তু ওসমান দেম্বেলে হোঁচট খেতে দিলেন না কাতালানদের। শেষ মুহূর্তে লক্ষ্যভেদ করে দলকে বাঁধভাঙা উল্লাসে মাতালেন তিনি। ফলে আরও জমে উঠল স্প্যানিশ লা লিগার শিরোপা নিয়ে ত্রিমুখী লড়াই।
সোমবার রাতে ঘরের মাঠে ১-০ গোলে রিয়াল ভায়াদোলিদকে হারিয়েছে বার্সা। নির্ধারিত সময়ের শেষ মিনিটে ব্যবধান গড়ে দেন ফরাসি ফরোয়ার্ড দেম্বেলে। তবে ভায়াদোলিদকে হারাতে রীতিমতো ঘাম ছুটে গেছে রোনাল্ড কোমানের শিষ্যদের। পয়েন্ট তালিকার ১৬ নম্বরে থাকা দলটি ক্যাম্প ন্যুতে উপহার দিয়েছে জমজমাট লড়াই। কিন্তু ৭৯তম মিনিটে দশ জনে পরিণত হওয়ার পর তারা আর পেরে ওঠেনি শেষ পর্যন্ত।
লিগের ২৯ রাউন্ড শেষে শীর্ষে থাকা অ্যাতলেতিকোর অর্জন ৬৬ পয়েন্ট। দিয়েগো সিমিওনের দলের চেয়ে মাত্র এক পয়েন্টে পিছিয়ে আছে বার্সেলোনা। দুইয়ে উঠে আসা দলটির পয়েন্ট ৬৫। তিনে নেমে যাওয়া বর্তমান চ্যাম্পিয়ন রিয়াল মাদ্রিদের পয়েন্ট ৬৩।
পুরো ম্যাচে ২৫টি শট নেয় বার্সেলোনা। যার মধ্যে লক্ষ্যে ছিল দশটি। অন্যদিকে, ভায়াদোলিদের সাতটি শটের দুটি ছিল লক্ষ্যে। ম্যাচের প্রথম ভালো সুযোগটি তৈরি করে তারাই। নবম মিনিটে কেনান কোদ্রোর হেড ক্রসবারে বাধা পেলে হতাশ হতে হয় তাদের। বার্সা গোলরক্ষক মার্ক-আন্দ্রে টের স্টেগেনকে প্রথমার্ধের বাকি সময়েও ব্যতিব্যস্ত রাখে অতিথিরা।
বল পায়ে রেখেও ভায়াদোলিদের রক্ষণে প্রত্যাশিত ভীতি ছড়াতে পারছিল না বার্সেলোনা। প্রথমার্ধে লিওনেল মেসি-আঁতোয়ান গ্রিজমানরা ছিলেন নির্বিষ। তবে বিরতির কিছু আগে পেদ্রি গোল প্রায় পেয়েই গিয়েছিলেন। তার দূরপাল্লার গড়ানো শট ভায়াদোলিদের গোলরক্ষক জর্দি মাসিপের হাত ছুঁয়ে পোস্টে লেগে ফিরে আসে।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুটাও হয় জমজমাট, আক্রমণের বিপরীতে দেখা মেলে পাল্টা আক্রমণের। ৫৫তম মিনিটে ক্লেঁমো লংলের ডি-বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া শট সহজেই লুফে নেন মাসিপ। দুই মিনিট পর সফরকারীদের লুকাস ওলাজার কোণাকুণি শট পোস্ট ঘেঁষে বাইরে চলে যায়। ৫৯তম মিনিটে মেসির পাসে ডি-বক্সের ভেতর থেকে দেম্বেলের নেওয়া শট অসাধারণ দক্ষতায় ফেরান মাসিপ। ফিরতি বলে গ্রিজমানের হেড খুব কাছ দিয়ে হয় লক্ষ্যভ্রষ্ট।
ধীরে ধীরে খেলার পুরো নিয়ন্ত্রণ নিতে শুরু করে বার্সেলোনা। তবে ভায়াদোলিদের জমাট রক্ষণ ভাঙতে বেগ পেতে হচ্ছিল তাদের। তাই দূর থেকে বেশ কিছু চেষ্টা চালায় তারা। ৭১তম মিনিটে দেম্বেলের পাসে দূর থেকে শট নেন মেসি। তবে বল বাঁ দিকের জাল ঘেঁষে চলে যায়। আট মিনিট পর রেফারির বিতর্কিত সিদ্ধান্তের শিকার হন ভায়াদোলিদের অস্কার প্লানো। দেম্বেলেকে ফাউল করায় তাকে সরাসরি দেখানো হয় লাল কার্ড।
অবশেষে ৯০তম মিনিটে জালের ঠিকানা খুঁজে পায় বার্সেলোনা। ডান প্রান্ত থেকে ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ংয়ের ক্রসে মাথা ছোঁয়ান রোনালদ আরাউহো। তাতে বল পেয়ে যান পেছনে ফাঁকায় দাঁড়িয়ে থাকা দেম্বেলে। বাঁ পায়ের ভলিতে কাছের পোস্টে মাসিপকে পরাস্ত করেন তিনি। ভায়াদোলিদ গোলরক্ষকের পায়ে লেগেও বল কাঁপায় জাল।
পরের রাউন্ডে আগামী শনিবার রাতে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়ালের মাঠে আতিথ্য নেবে বার্সেলোনা। পরদিন রিয়াল বেতিসের মাঠে খেলতে নামবে অ্যাতলেতিকো। প্রতিটি ম্যাচের ফলই শিরোপা জেতার অভিযানে থাকা তিন ক্লাবের জন্য মহাগুরুত্বপূর্ণ।
Comments