টেক্সাসে নিহত ৬ জনের বাড়ি পাবনার দোহারপাড়ায় শোকের মাতম
যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে ছয় বাংলাদেশির মৃত্যুর ঘটনায় পাবনার দোহারপাড়া গ্রামে নিহতদের গ্রামের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। পরিবারটির সবার নিহত হওয়ার সংবাদ গণমাধ্যমে প্রকাশের পর স্বজনদের সান্ত্বনা দিতে দোহারপাড়ায় ছুটে যান অনেকই।
শোকে মুহ্যমান স্বজনদের কেউই মানতে পারছে না যে, দুই ছেলে বাকি চার জনকে হত্যার পর নিজেরা আত্মহত্যা করেছে। আকস্মিক এই ঘটনায় বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছে সবাই। সুষ্ঠু তদন্ত ও নিহতদের মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনার দাবি জানান তারা।
সোমবার টেক্সাসের আল্যান শহরে বসবাসরত ছয় সদস্যের বাংলাদেশি পরিবারটির সবার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। দুই ছেলে পরিবারের বাকি চার জনকে হত্যার পর নিজেরা আত্মহত্যা করেছে বলে পুলিশের বরাত দিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়েছে।
নিহতরা হলেন— আলতাফুন্নেসা (৭৭), তার মেয়ে আইরিন ইসলাম (৫৬), জামাতা তৌহিদুল ইসলাম (৫৪), দুই নাতী তানভির তৌহিদ (২১), ফারবিন তৌহিদ (১৯) এবং নাতনী, ফারহানা তৌহিদ। ঘটনা শোনার পর এখন শোকে স্তব্ধ দোহারপারা এলাকা।
মঙ্গলবার সকালে নিহতের বাড়ি দোহারপাড়াতে গিয়ে দেখা যায়, শোকে মুহ্যমান ওই স্বজনদের যারা সান্ত্বনা দিতে এসেছেন তারাও অশ্রুসিক্ত।
নিহত আলতাফুন্নেসার ছেলে আবুল কালাম আজাদ হিরন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, তার মা, একমাত্র বোন, বোনের স্বামী, এবং দুই ভাগ্নে এবং এক ভাগ্নির মরদেহ পাওয়া গেছে। সবাই একটি সুখী পরিবার ছিল, পরিবারে কোন অশান্তিও ছিল না। তারপরও কেন এমন ঘটনা ঘটল তা ভেবে পাচ্ছে না পুরো পরিবার।
সর্বশেষ গত শুক্রবার মা ও বোনের সঙ্গে রাতে ফোনে কথা হয়। গত ১ এপ্রিল তার মায়ের দেশে আসার কথা ছিল। উড়োজাহাজের টিকিটও কাটা ছিল। ঈদে দেশে থকার কথা ছিল। কিন্তু যার সঙ্গে তার আসার কথা ছিল তিনি করোনার কারণে দেশে না ফিরবার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় টিকিট বাতিল করা হয়।
মায়ের আসা নিশ্চিত হওয়ায় আমার ভাগ্নে নিউইয়র্ক থেকে এসে নানীর সাথে কিছুটা সময় কাটাচ্ছিল, পরিবারে কোন অশান্তি ছিল না, আকস্মিক কেন এমনটি ঘটল তা আমরা কেই বুঝে উঠতে পারছি না, বলেন হিরন।
তবে, দুই ভাগ্নে পরিবারের চারজনকে হত্যার পর নিজেরা আত্মহত্যা করেছে বলে গণমাধ্যমে যে খবর প্রকাশ হয়েছে তা পরিবারের কেউ বিশ্বাস করতে পারছে না বলে জানান তিনি।
আলতাফুন্নেসার আরেক ছেলে আরিফুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, এই শোক শেষ হবার নয়। আমরা সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি।
তিনি আরও জানান, প্রায় দুই দশক আগে আমার বোন তার স্বামীসহ আমেরিকার নিউইয়র্কে যায়। পরে অন্যরা যায়। সারা জীবন আমাদের এ শোক বয়ে বেড়াতে হবে।
আরও পড়ুন:
Comments