কীর্তনখোলা নদীর পানিতে স্বাভাবিকের চেয়ে ৪ গুণ লবণাক্ততা

বরিশালের কীর্তনখোলা নদীর পানিতে অস্বাভাবিক মাত্রায় লবণাক্ততা দেখা দিয়েছে। হঠাৎ করে এ নদীর পানির লবণাক্ততা স্বাভাবিকের চেয়ে চার গুণের বেড়ে যাওয়ার কারণ জানা না গেলেও, সংশ্লিষ্টরা ধারণা করছেন উজান থেকে আসা পানিতে লবণাক্ততা বৃদ্ধি বা কম বৃষ্টিপাতের কারণে এটা হয়ে থাকতে পারে। এতে স্বাদু পানির প্রাণী হুমকির মুখে পড়তে পারে আশঙ্কা করছেন পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।

বরিশালের কীর্তনখোলা নদীর পানিতে অস্বাভাবিক মাত্রায় লবণাক্ততা দেখা দিয়েছে। হঠাৎ করে এ নদীর পানির লবণাক্ততা স্বাভাবিকের চেয়ে চার গুণের বেড়ে যাওয়ার কারণ জানা না গেলেও, সংশ্লিষ্টরা ধারণা করছেন উজান থেকে আসা পানিতে লবণাক্ততা বৃদ্ধি বা কম বৃষ্টিপাতের কারণে এটা হয়ে থাকতে পারে। এতে স্বাদু পানির প্রাণী হুমকির মুখে পড়তে পারে আশঙ্কা করছেন পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।

কীর্তনখোলা পাড়ের স্টেডিয়াম বস্তির বাসিন্দা বিথী আক্তার জানান, হঠাৎ করে গত বেশ কয়েকদিন ধরে কীর্তনখোলার পানি নোনতা লাগছে। এই নদীতে তারা এতদিন গোসল করলেও, অতিরিক্ত লবণাক্ততার কারণে এখন আর নামছেন না।

কীর্তনখোলার মাঝি মোসলেম জানান, গত এক মাস ধরে লবণাক্ততা বেড়েছে। আগে এই পানিতে তারা হাত-মুখ ধুলেও লবণাক্ততার কারণে এখন পানি মুখে তুলতে পারছেন না।

নদীর পূর্ব তীরের চরকাউয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম ছবি জানান, গত এক মাস ধরে পানিতে লবণাক্ততা বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি তিনি এলাকাবাসীর মুখে শুনেছেন।

১৬০ কিমি দীর্ঘ কীর্তনখোলা নদী বরিশালের শায়েস্তাবাদ থেকে শুরু হয়ে ঝালকাঠি জেলার গাবখানে গিয়ে পড়েছে।

পরিবেশ অধিদপ্তরের বরিশাল বিভাগীয় অফিসের সহকারী বায়োকেমিস্ট মুনতাসির রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, নদীর চরকাউয়া, লঞ্চঘাট ও দপদপিয়া পয়েন্টে গত ৭ মার্চ পানি পরীক্ষা করে ইলেকট্রিক্যাল কনডাকটিভিটি (ইসি) পাওয়া গেছে ১৩৬০ মাইক্রো সিমেন্স পার সেন্টিমিটার। যা স্বাভাবিক সময়ে ৩০০ থেকে ৪০০ মাইক্রো সিমেন্স পার সেন্টিমিটার পাওয়া যেত।

সাধারণত ইসি ১২০০ পর্যন্ত গ্রহণযোগ্য ধরা হয়ে থাকে বলে জানান তিনি।

পরিবেশ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক কামরুজ্জামান সরকার জানান, হঠাৎ পানিতে লবণাক্ততার বৃদ্ধি চিন্তার কারণ। দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হওয়া বা উজান থেকে আসা পানিতে লবণাক্ততা এর কারণ হতে পারে। এর ফলে স্বাদু পানির প্রাণী হুমকির মুখে পড়তে পারে। স্বাদু পানির মাছের ক্ষতি হলে জীবন জীবিকায় এর প্রভাব পড়বে।

তিনি বলেন, ‘এতে নদীর ওপর নির্ভরশীল মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তবে আমরা এখনই এর সুনির্দিষ্ট কারণ বলতে পারছি না। এ বিষয়ে আরও পরীক্ষা করে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।’

পরিবেশ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, গত বছর বলেশ্বর নদীতে হঠাৎ লবণাক্ততা বেড়ে গিয়েছিল। পরে দেখা যায়, শাখা নদী দিয়ে উজানের পানি আসায় বাধা তৈরি হওয়ায় এ অবস্থা তৈরি হয়েছিল। ওই বাধা অপসারণ করার পর পানির লবণাক্ততা স্বাভাবিক হয়ে আসে।

কীর্তনখোলার পানিতে লবণাক্ততা বৃদ্ধিতে উদ্বেগ জানিয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন। সংগঠনটির বরিশাল বিভাগের সভাপতি রফিকুল আলম জানান, শিগগির নদীর লবাণাক্ততা বৃদ্ধির কারণ জেনে তার সমাধান করা না হলে দক্ষিণাঞ্চলের জলজ বাস্তুতন্ত্রের ওপর খারাপ প্রভাব পড়বে। এর ফলে দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতিও হতে পারে।

Comments

The Daily Star  | English

Teesta floods bury arable land in sand, leaving farmers devastated

40 unions across 13 upazilas in Lalmonirhat, Kurigram, Rangpur, Gaibandha, and Nilphamari are part of the Teesta shoal region

1h ago