রৌমারীতে তহশিলদার ও সার্ভেয়ারের সহায়তায় পুকুর দখলের অভিযোগ

কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার রৌমারী সদর ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা (তহশিলদার) ও উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ারের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে যাদুরচর ইউনিয়ন পরিষদের একটি পুকুরের একাংশ দখলে সহযোগিতার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
Roumari.jpg
সোমবার গভীর রাতে একটি চক্র পুকুর পাড়ের একাংশে টিনের ঘর তৈরি করে। ছবি: স্টার

কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার রৌমারী সদর ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা (তহশিলদার) ও উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ারের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে যাদুরচর ইউনিয়ন পরিষদের একটি পুকুরের একাংশ দখলে সহযোগিতার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ ঘটনায় তহশিলদার সাহাদত হোসেন ও সার্ভেয়ার আব্দুল আউয়ালসহ সাত জনের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন যাদুরচর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান সরবেশ আলী।

এর আগে, পুকুরটি অবৈধ দখলের আশঙ্কায় সোমবার থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন ইউপি চেয়ারম্যান।

লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, রৌমারী উপজেলার যাদুরচর মৌজার অন্তর্ভুক্ত যাদুরচর ইউনিয়ন পরিষদের নামে দলিলকৃত ও ভোগ-দখল করা পুকুরের একটি অংশ আরএস রেকর্ডে ১ নম্বর খতিয়ানভুক্ত হয়। যার আরএস দাগ নং ৩৬৪৬ ও জমির পরিমাণ ৩০ শতাংশ। গত সোমবার গভীর রাতে হঠাৎ করে একটি চক্র জমিটিতে অনুপ্রবেশ করে পুকুর পাড়ের একাংশে টিনের ঘর তৈরি করে। এসময় ইউনিয়ন পরিষদের দায়িত্বে থাকা আট জন গ্রাম পুলিশ অনুপ্রবেশকারীদের ঘর তুলতে বাধা দিলে তারা হুমকি দেয় এবং গ্রাম পুলিশদের চলে যেতে বাধ্য করে।

গ্রাম পুলিশ সদস্য সোনা মিয়া দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘সোমবার রাতে অবৈধভাবে ঘর তুলতে বাধা দিতে গেলে তারা আমাদের হুমকি দেয় এবং জোর করে পুকুরপাড়ে চারটি টিনের ঘর তোলে। বিষয়টি তাৎক্ষনিক ইউপি চেয়ারম্যানকে জানানো হয়।’

যাদুরচর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সরবেশ আলী বলেন, ‘ইউনিয়ন পরিষদের নামে কবলাকৃত ও ভোগদখলীয় জমিতে নির্মিত পুকুরটি প্রতি বছর ইজারা দেওয়া হয়। স্থানীয় কয়েকজন অবৈধভাবে ওই জমিতে ঘর তুলেছেন।’

‘বিষয়টি জেলা প্রশাসক, ইউএনওসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে,’ বলেন তিনি।

তার অভিযোগ, এতে রৌমারী সদর ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা সাহাদত হোসেন ও উপজেলা ভূমি সার্ভেয়ার আব্দুল আউয়ালের প্রত্যক্ষ মদদ আছে।

তিনি বলেন, ‘কোনো প্রকার যাচাই-বাছাই ও মাঠ জরিপ ছাড়াই ওই দুই ভূমি কর্মকর্তা ইউনিয়ন পরিষদের দলিলকৃত ও দখলকৃত পুকুরের একাংশ অবৈধ পন্থায় ঘুষের টাকার বিনিময়ে ভূমিহীনদের বন্দোবস্ত দিয়েছেন বলে আমি জেনেছি।’

পুকুরপাড়ের একটি ঘরের মালিকানা দাবি করা মোশাররফ হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, তারা সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ভূমি বন্দোবস্তু পেয়ে পুকুরের একাংশে ঘর তুলেছেন।

এ ঘটনায় ভূমি কর্মকর্তাদের ঘুষ দিতে হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি কোনো উত্তর দেননি।

সার্ভেয়ার আব্দুল আউয়াল বলেন, ‘ইউনিয়ন পরিষদের পুকুর ১ নম্বর খাস খতিয়ানভুক্ত হওয়ায় জমিটি ভূমিহীনদের বন্দোবস্ত দেওয়া হয়েছে। প্রকৃত ভূমিহীনদের ভূমি বন্দোবস্ত দেওয়া হয়েছে।’

এতে কোনো ঘুষের লেনদেন হয়নি বলেও দাবি করেন তিনি।

অভিযুক্ত ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা সাহাদত হোসেন ঘুষের অভিযোগকে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন দাবি করে বলেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী ভূমিহীনদের ভূমি বন্দোবস্ত দেওয়া হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ইউপি চেয়ারম্যানের অভিযোগটি সঠিক নয়।’

যোগাযোগ করা হলে রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল ইমরান বলেন, ‘অবৈধভাবে ভূমিহীনদের ইউনিয়ন পরিষদের ভূমি বন্দোবস্ত দিয়ে থাকলে তা তদন্ত করে বাতিল করা হবে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Comments

The Daily Star  | English
Govt buckles up

Govt publishes preliminary list of those killed in July-August protests

The interim government today published a preliminary list of 726 people who died during the student-led mass protests in July and August.

42m ago