লঞ্চ ডুবিয়ে দেওয়া কার্গো শনাক্তে নৌ-পুলিশ নিশ্চিত, কোস্টগার্ড বলছে সন্দেহভাজন
শীতলক্ষ্যায় অর্ধশতাধিক যাত্রীসহ লঞ্চকে ধাক্কা দিয়ে ডুবিয়ে দেওয়া কার্গো জাহাজ এমভি-এসকেএল-৩ শনাক্তের বিষয়ে কোস্টগার্ড ও নৌ-পুলিশের কাছ থেকে পরস্পরবিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেছে। নৌ-পুলিশ বলছে জাহাজের গায়ে লিখা নাম দেখে সেটিকে শনাক্ত করা হয়েছে। আর কোস্টগার্ড বলেছে, সন্দেহভাজন হিসেবে কার্গোটিকে আটক করে নৌ-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ার নয়ানগর গ্রাম সংলগ্ন মেঘনা নদীতে থেকে আটক করা হয় জাহাজটিকে।
ঢাকা কোস্টগার্ডের লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আমিনুল হক দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, গজারিয়ার মেঘনা নদীতে নিয়মিত টহল অভিযান পরিচালনা করছিল কোস্টগার্ডের সদস্যরা। এসময় স্থানীয় জেলেরা একটি কার্গো জাহাজ রঙ পরিবর্তন করে আজ সকাল থেকে নোঙর করে আছে বলে তাদের জানায়। এরপর জাহাজের ভেতর তল্লাশি চালানো হয়। সন্দেহভাজন জাহাজটি এবং এর ১৪ জন কর্মীকে আটক করে গজারিয়া নৌ-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
তবে, জাহাজটির ভেতরে কোনো নথিপত্র পাওয়া যায়নি বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘ভিডিও দেখে যা বুঝেছি এটি লঞ্চডুবির ঘটনার অভিযুক্ত জাহাজ। রঙ পরিবর্তন করেছে, তার মানে তারা লুকানোর চেষ্টা করছিল। আটকদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে নৌ-পুলিশ শতভাগ নিশ্চিত করতে পারবে জাহাজটি শনাক্তের ব্যাপারে।’
‘আমরা সন্দেহভাজন আটক করেছি, নৌ-পুলিশ নিশ্চিত করবে,’ যোগ করেন তিনি।
এদিকে নারায়ণগঞ্জ নৌ-পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহিদুল আলম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘কোস্টগার্ডের সদস্যরা আমাদেরকে নিশ্চিত করেছে এটি এসকেএল-৩ কার্গো জাহাজ।’
যোগাযোগ করা হলে গজারিয়া নৌ-পুলিশ স্টেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস সালাম জানান, নাম ও নাম্বার প্লেট দেখে জাহাজটিকে শনাক্ত করা হয়েছে। অন্য জায়গা থেকে রঙ করে এনে সেটিকে গজারিয়ার মেঘনা নদীতে নোঙর করে রাখা হয়েছিল।
গজারিয়া উপেজলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিয়াউল ইসলাম চৌধুরী জানান, গজারিয়া উপেজেলার আশেপাশে একটি শিপইয়ার্ডের ভেতরে জাহাজটি লুকিয়ে রাখা হয়েছিল। রঙ পরিবর্তন করে আজ বৃহস্পতিবার সকালে বাইরে আনা হয়।
‘রঙ পরিবর্তনের জন্য জাহাজটিকে আটক করতে দেরি লেগেছে,’ বলেন তিনি।
গত ৪ এপ্রিল সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে সৈয়দপুর কয়লাঘাট এলাকায় কার্গো জাহাজ ধাক্কা দিয়ে ‘সাবিত আল হাসান’ নামে লঞ্চটি ডুবিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়। এসময় সাঁতরে ১৫ থেকে ২০ জন তীরে উঠতে পারলেও নিখোঁজ ছিল ৩৬ জন। পরে রোববার রাত থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত ৩৪ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
Comments