শীতলক্ষ্যায় লঞ্চডুবি: সেই কার্গো জাহাজের ৫ জন রিমান্ডে, ৯ জন কারাগারে

মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় মেঘনা নদী থেকে আটক করা হয়েছে এই জাহাজটিকে। ছবি: স্টার

শীতলক্ষ্যা নদীতে লঞ্চডুবে ৩৪ জন নিহতের ঘটনায় জব্দ করা কার্গো জাহাজের ১৪ কর্মীর পাঁচ জনকে রিমান্ডে ও নয় জনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

আজ শুক্রবার বিকালে তাদেরকে আদালতে হাজির করা হলে নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আহমেদ হুমায়ুন কবিরের আদালত এ নির্দেশ দেন।

নারায়ণগঞ্জ আদালত পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান দ্য ডেইলি স্টারকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, লঞ্চডুবির ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত ১৪ জনের মধ্যে পাঁচ জনের পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করে আদালতে পাঠায় পুলিশ। শুনানি শেষে আদালত প্রত্যেকের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন এবং বাকি নয় জনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

জাহাজের মাস্টার অহিদুর জামান (৫০), ইঞ্জিন ড্রাইভার মজনু মোল্লা (৩৮), সুকানী আনোয়ার মল্লিক (৪০), গ্রিজার হৃদয় হাওলাদার (২০) ও গ্রিজার মো. ফারহান মোল্লাকে (২৭) রিমান্ডে পাঠানো হয়েছে।

কারাগারে পাঠানো হয়েছে- লস্কর রাজীবুল ইসলাম (২৭), লস্কর মো. আব্দুল্লাহ (২০), লস্কর মো. নূরুল ইসলাম (৩৫), লস্কর মো. সাকিব সরদার (২০), লস্কর মো. আফসার (১৮), লস্কর মো. সাগর হোসেন (১৯), লস্কর আলিফ শেখ (১৯) ও বাবুর্চি আবুল বাশার শেখকে (৩৮)।

গত বৃহস্পতিবার দুপুরে মুন্সিগঞ্জ জেলার গজারিয়া এলাকায় মেঘনা নদী থেকে এমভি-এসকেএল-৩ নামের ওই কার্গো জাহাজটি এবং এর মাস্টার, ড্রাইভার, সুকানি ও লস্করসহ ১৪ জনকে আটক করে কোস্টগার্ড। পরে তাদেরকে নারায়ণগঞ্জ নৌ-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। মেঘনা নদী থেকে এনে সন্ধ্যা ৬টায় জাহাজটিকে সেন্ট্রাল খেয়াঘাট এলাকায় নোঙর করে রাখা হয়।

শুক্রবার দুপুরে ১৪ জনকে বিআইডব্লিউটিএ নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দরের উপ-পরিচালক বাবু লাল বৈদ্য’র করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখায় নৌ-পুলিশ।

নারায়ণগঞ্জ নৌ-থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘শীতলক্ষ্যায় লঞ্চ ডুবে নিহত ৩৪ জনের ঘটনায় বন্দর থানায় অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে করা মামলায় আটক ১৪ জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। আর জাহাজটিকে মামলার আলামত হিসেবে দেখানো হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘শীতলক্ষ্যায় নতুন করে কোনো মরদেহ পাওয়া যায়নি। তালিকায় যে দুজন নিখোঁজ ছিলেন, সেখানে একজনের নাম দুই বার উল্লেখ করা হয়। আর নিখোঁজ অপরজন হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়ে বাসায় ফিরেছেন। ফলে আমাদের তল্লাশি অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে।’

এর আগে, নারায়ণগঞ্জ নৌ-পুলিশ সুপার (এসপি) মিনা মাহমুদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘লঞ্চ ডুবে যাওয়ার সময় ১৪ জনই কার্গো জাহাজটিতে ছিলেন বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন। কার্গো জাহাজটিকে নরসিংদীর একটি ডকইয়ার্ড থেকে মেরামত করে মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ার দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। যাওয়ার পথেই সেটির সঙ্গে ধাক্কা লেগে লঞ্চটি ডুবে যায়।’

‘জাহাজটির সার্ভে সনদ ছিল না। ফলে সনদ ছাড়া নদীতে চলাচলে তাদের কোনো অনুমতি নেই। তারপরও তারা জাহাজ নিয়ে যাচ্ছিল,’ বলেন তিনি।

গত ৪ এপ্রিল সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে সৈয়দপুর কয়লাঘাট এলাকায় কার্গো জাহাজ ধাক্কা দিয়ে ‘সাবিত আল হাসান’ নামের লঞ্চটিকে ডুবিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়। এসময় সাঁতরে ১৫ থেকে ২০ জন তীরে উঠতে পারলেও নিখোঁজ ছিলেন ৩৬ জন। পরে রোববার রাত থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত ৩৪ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

আরও পড়ুন:

লঞ্চ ডুবিয়ে দেওয়া কার্গো শনাক্তে নৌ-পুলিশ নিশ্চিত, কোস্টগার্ড বলছে সন্দেহভাজন

নারায়ণগঞ্জে লঞ্চডুবি: ধাক্কা দেওয়া কার্গো জাহাজ আটক

শীতলক্ষ্যায় লঞ্চডুবিতে ৩৪ জন নিহতের ঘটনায় মামলা

অর্ধশতাধিক যাত্রী নিয়ে শীতলক্ষ্যায় লঞ্চডুবি

শীতলক্ষ্যায় লঞ্চডুবি: ৫ জনের মরদেহ উদ্ধার

নারায়ণগঞ্জ: ডুবে যাওয়া লঞ্চ এখনো তোলা যায়নি

শীতলক্ষ্যায় লঞ্চডুবি: নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৯, এখনো নিখোঁজ ৭

শীতলক্ষ্যায় লঞ্চডুবি: আরও ২২ জনের মরদেহ উদ্ধার, মোট ২৭

শীতলক্ষ্যায় লঞ্চডুবি: নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩৪, এখনো নিখোঁজ ২

শীতলক্ষ্যায় লঞ্চডুবির ঘটনায় নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি

Comments

The Daily Star  | English

JP central office vandalised, set ablaze

A group of unidentified people set fire to the central office of Jatiyo Party in Dhaka's Kakrail area this evening

1h ago