গাজীপুরে কৃষকের স্বপ্ন চিটায় পরিণত হয়েছে
গাজীপুরের বোরো আবাদে ধানের পরিবর্তে জমিতে চিটা দেখা দিয়েছে। ফলে, কৃষকের স্বপ্ন এখন চিটায় পরিণত হয়েছে। তারা জানিয়েছেন, গত এক সপ্তাহ আগে থেকে বেশিরভাগ জমিতে এই পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে।
এর ফলে উৎপাদন খরচ ওঠাতে পারবেন না বলেও দাবি করেছেন অনেক কৃষক। ইতোমধ্যে তাদের কেউ কেউ ক্ষতিপূরণ চেয়ে বিভিন্ন দপ্তরে আবেদনও করছেন।
কৃষি বিভাগ বলছে, বিরূপ জলবায়ুর কারণে হিটস্ট্রোক হওয়ায় এমনটি দেখা দিয়েছে। তবে ক্ষয়ক্ষতি খুব বেশি নয় বলে দাবী করেন কৃষি কর্মকর্তারা।
পরিস্থিতি মোকাবিলায় জমিতে এ মুহূর্তে তিন ইঞ্চি পরিমাণ পানি সংরক্ষণের পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার সোনাকর গ্রামের মো. কাজী আলম জানান, তিনি এ বছর ১০ একর জমিতে বোরো আবাদ করেন। বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) থেকে বীজ সংগ্রহ করে আবাদ করেন। বোরো থেকে উৎপাদিত ধান ‘বীজ’ হিসেবে করপোরেশন দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, গত রোববার থেকে তার জমিতে ধানের পরিবর্তে চিটা বের হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, প্রতি একর বোরো আবাদে ৩৩ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে। খরচের অর্ধেক টাকাও ওঠানো সম্ভব হবে না।
এছাড়া, ধান গাছ মাড়াইয়ের পর গবাদি পশু খেতে চাইবে না বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
আরেক কৃষক আব্দুল হালিম জানান, ধানগুলো চিটা হয়ে বের হচ্ছে। যে আশা নিয়ে বোরো চাষ করেছিলাম, তার আর পূর্ণ হলো না। ধান মাড়াইয়ের মজুরির টাকাও ঋণ করে নিতে হবে।
শ্রীপুর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর উপজেলায় এক হাজার দুইশ ৫৫ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। বিরূপ আবহাওয়ার কারণে হিটস্ট্রোকে ৭৫ হেক্টর জমির আবাদ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
গাজীপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মো. মাহবুব আলম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘অতি তাপমাত্রার কারণে বোরো ফলনে এমনটি হয়েছে। এটি জেলার প্রায় সকল এলাকাতেই হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রার ফলে ফুলের রেণু নষ্ট হয়, পরাগায়ন হয় না। তবে, এ অবস্থায় জমিতে তিন ইঞ্চি পরিমাণ পানি জমা করে রাখতে পারলে বাকি ফসল ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করা যাবে। কৃষি বিভাগের লোকজন মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের এসব পরামর্শ দিচ্ছেন।’
Comments