রাজধানী ছাড়ছে মানুষ

শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌপথে যাত্রী ও গাড়ির বাড়তি চাপ

সোমবার ভোর থেকে মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়ায় ঢাকামুখী ও দক্ষিণাঞ্চলমুখী যাত্রীদের ভিড় বেড়েছে। ছবি: স্টার

আগামী ১৪ এপ্রিল থেকে ‘সর্বাত্মক লকডাউনের’ ঘোষণায় আজ সোমবার ভোর থেকে মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়ায় ঢাকামুখী ও দক্ষিণাঞ্চলমুখী যাত্রীদের ভিড় বেড়েছে। ফেরিতে শুধু জরুরি সেবার গাড়ি পার হওয়ার নির্দেশনা থাকলেও ফেরিগুলো সব ধরনের গাড়ি পার করছে। লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকায় যাত্রীদের বাড়তি চাপও পড়ছে ফেরিতে। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করেছে ট্রলার ও স্পিডবোট।

যাত্রীরা বলছেন, লকডাউনের সময় শহরে আয়ের উৎস বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এ সময় শহরে থেকে বাজার ও অন্যান্য খরচের টাকা জোগাড় কঠিন হয়ে যাবে। তাই শহর ছাড়ছেন অনেক মানুষ।

মোহাম্মদ আওলাদ হোসেন ঢাকার সাভারে একটি কারখানায় শ্রমিকের কাজ করতেন। তিনি জানান, লকডাউনের কারণে মালিক বেতন বুঝিয়ে দিয়ে চাকরি থেকে বাদ দিয়েছেন। এখন স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে গ্রামের বাড়ি শরীয়তপুরে চলে যাচ্ছেন তিনি। 

তিনি বলেন, 'বাধ্য হয়ে সংক্রমণ ঝুঁকি নিয়েই ট্রলারে যাচ্ছি। শিমুলিয়াঘাট থেকে বাংলাবাজার ঘাট পর্যন্ত ১০০ টাকা ভাড়া নিচ্ছে।'

মো. নাহিদ হোসেন জানান, ছয় দিন আগে ঢাকার মোহাম্মদপুরের একটি হোটেলের কাজ থেকে ছাঁটাই করা হয়েছে তাকে।

তিনি বলেন, '১৪ এপ্রিল থেকে লকডাউন। ঢাকায় এখন কোনও কাজ নেই। তাই বরিশাল নিজ বাড়িতে চলে যাচ্ছি। স্পিডবোটে ৩০০ টাকা ভাড়া নিচ্ছে।'

মাওয়া ট্রাফিক পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. হিলাল উদ্দিন জানান, সোমবার সকাল সাড়ে ১১টায় সাত শতাধিক গাড়ি ছিল পার হওয়ার অপেক্ষায়। এর মধ্যে প্রাইভেটকার, পিকআপ ও মালবাহী গাড়ির সংখ্যাই বেশি। সর্বাত্মক লকডাউনের ঘোষণায় ঢাকা ছাড়ছেন হাজারো মানুষ। শিমুলিয়া ও বাংলাবাজার ঘাটে সকাল সাড়ে ১১টা পর্যন্ত এক হাজার গাড়ি পারের অপেক্ষায় ছিল। ফেরিতে গাড়ি পারাপারের বিষয়টি বিআইডব্লিউটিসি দেখে।

মাওয়া নৌ-পুলিশের অফিসার ইনচার্জ সিরাজুল কবীর জানান, নৌ-পুলিশের স্বল্প সংখ্যক জনবল দিয়ে ট্রলার ও স্পিডবোটে যাত্রী পরিবহণ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়।

যোগাযোগ করা হলে বিআইডব্লিউটিসি শিমুলিয়া ঘাটের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মোহাম্মদ ফয়সাল দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, নৌরুটে ১৪টি ফেরি চলাচল করছে। সকালে যাত্রী ও যানবাহনের উভয়মুখী চাপ ছিল। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দুপুরের পর তুলনামূলক গাড়ির চাপ কমেছে। শুধু বাস ছাড়া সব ধরনের গাড়িই পার হচ্ছে।

তিনি জানান, ঢাকা ছেড়ে অনেক যাত্রী শিমুলিয়াঘাটে এসে ভিড় করছেন। ঘরবাড়ি ছেড়ে আসা মানুষদের নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব না। সার্বিক পরিস্থিতি অনুযায়ী ফেরির সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

বিআইডব্লিউটিসি শিমুলিয়া ঘাটের উপমহাব্যবস্থাপক মো. শফিকুল ইসলাম জানান, পদ্মাপারের জন্য শিমুলিয়া ঘাটে গাড়ির চাপ আসলে সেগুলো আটকিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা নেই। নির্দেশনা হলো পণ্যবাহী গাড়ি, অ্যাম্বুলেন্স পার করার। কিন্তু পুলিশ ব্যারিকেড ভেঙ্গে ফেরির কাছে এসে পড়লে আমাদের কিছু করার থাকে না। এ কারণে ফেরিগুলোতে যাত্রীদের উপস্থিতি বেশি।

Comments

The Daily Star  | English

No price too high for mass deportations

US President-elect Donald Trump has doubled down on his campaign promise of the mass deportation of illegal immigrants, saying the cost of doing so will not be a deterrent.

5h ago