দ্বিতীয় দিনে লোক সমাগম বেশি, পোশাককর্মীদের ভোগান্তি

‘রাস্তায় বেশিভাগই ছিল প্রাইভেট কার। তারপর কিছু মোটরসাইকেল। মাঝে-মধ্যে দুই-একটা রিকশা দেখা যাচ্ছিল। তখন সকাল ৯টা, যেহেতু অফিস আওয়ার ছিল তাই সব গাড়িকে না আটকিয়ে কিছু কিছু গাড়িকে থামানো হচ্ছিল। গাড়ির কাগজ দেখার পাশাপাশি তাদের বাইরে যাওয়ার অনুমতি আছে কি না তা দেখা হচ্ছিল।’
আজ বৃহস্পতিবার দ্য ডেইলি স্টার’র সংবাদদাতা শাহীন মোল্লাকে কথাগুলো বলছিলেন হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে কাউলা এলাকা থেকে নিজের মোটরসাইকেলে কারওয়ান বাজার আসা সেখানকার প্রিমিয়াম ব্যাংকের এক কর্মকর্তা এমরান হোসেন।
তিনি আরও বলেন, ‘খিলক্ষেত ওভারব্রিজের আগে শত শত মানুষ দেখেছি। অফিসে যাওয়ার জন্যে গাড়ির অপেক্ষা করছেন। অনেককে হেঁটে হেঁটে মহাখালীর দিকে যেতে দেখেছি। খিলক্ষেতের এক চেকপোস্টে যখনই গাড়ি স্লো করেছিলাম তখনই একদল মানুষ আমার দিকে ছুটে আসেন। তারা আমার মোটরসাইকেলে ওঠার জন্যে পীড়াপীড়ি করেন।’

‘এরপর বিজয় সরণিতে কিছু রিকশা দেখি। দেখি অনেক মানুষ হেঁটে হেঁটে যাচ্ছেন। তবে রাস্তায় মোটামুটি সংখ্যক মানুষ ছিলেন। গতকাল পহেলা বৈশাখে সরকারি ছুটি ছিল বলে মানুষ রাস্তায় তেমন বের হননি। আজকের চিত্র আলাদা,’ যোগ করেন এই ব্যাংক কর্মকর্তা।
ডেইলি স্টার’র আলোকচিত্রী পলাশ খান বলেন, আজ ভোরে সাভারের উলাইল বাসস্ট্যান্ডে পোশাককর্মীদের বাসে গাদাগাদি করে কর্মস্থলে যেতে দেখা গেছে। অনেককে রিকশা-ভ্যানে চড়ে কর্মস্থলে যেতে দেখা যায়। তারা বেশি টাকা ভাড়া দিয়ে কর্মস্থলে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন।
তিনি আরও জানিয়েছেন, সাভার থেকে ঢাকায় আসার পথে সকালে মহাসড়কে তেমন কোনো গাড়ি দেখা যায়নি। যেসব গাড়ি ঢাকায় প্রবেশ করছিল আমিনবাজার পার হওয়ার পর গাবতলীর চেকপোস্টে সেগুলোকে থামিয়ে ঢাকায় যাওয়ার ও ঢাকার বাইরে থাকার কারণ জানতে চাওয়া হয়।
‘এরপর, গাবতলীতে কোনো যান চলাচল দেখা যায়নি। মিরপুর রোডেও যান চলাচল কম। রাস্তায় মাঝে-মধ্যে দুই-চারজনকে গাড়ি বা রিকশার জন্যে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।’
‘তবে মিরপুর রোডে কয়েকটি হাসপাতালের সামনে রিকশা দেখা গেছে। রিকশা করে রোগীদের যাওয়া আসা করতে দেখা গেছে।’

আসাদ গেট, মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ ও ফার্মগেটে মাঝে-মধ্যে দুই-একটি প্রাইভেট কার ও মোটরসাইকেল ছাড়া যান চলাচল তেমন নেই’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কারওয়ান বাজারে লোকজনের ভিড় আছে। তবে শুকনো পণ্য ও পাইকারি দোকানে ভিড় নেই।’
‘শাহবাগে লোকজন একদমই নেই। সেখানে পুলিশ চেকপোস্ট রয়েছে। প্রেসক্লাবের আশপাশেও লোকজন দেখা যায়নি। পল্টন মোড়েও যানবাহনের সংখ্যা খুবই কম এবং বায়তুল মোকারমের সামনে যানবাহন নেই বললেই চলে,’ যোগ করেন তিনি।
গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আজ অফিস খোলা। তাই মানুষের চলাচল বেশি। ব্যাংক, জরুরিসেবাসহ অনেক প্রতিষ্ঠান খোলা থাকায় প্রাইভেট কার ও মাইক্রোবাস রাস্তায় আছে।’
‘চেকপোস্টে গাড়ি থামার কারণে সেখানে জটলা সৃষ্টি হয়’ উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘তবুও আমরা চেষ্টা করছি যাতে সবাই লকডাউনের বিধি মেনে চলাচল করেন তা নিশ্চিত করতে।’
ডেইলি স্টার’র সংবাদদাতা রাফিউল ইসলাম বলেছেন, ‘রাজধানীর শনির আখড়া থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত অন্তত পাঁচটি চেকপোস্ট দেখা গেছে। লোক ও যান চলাচল খুবই কম।’
‘সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পুলিশ সদস্যদের গাড়ি ও মোটরসাইকেল চালকদের পাস চেক করতে দেখা গেছে।

শফিকুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘কোনো যানবাহন না পেয়ে আমি সাইনবোর্ড এলাকা থেকে ভ্যানে চড়ে পুরান ঢাকায় যাচ্ছি আমার অসুস্থ ভাইকে দেখতে।’
তিনি জানিয়েছেন, শনির আখড়া থেকে গুলিস্তান আসার পথে রাস্তায় বেশ কয়েকটি রিকশাকে উল্টিয়ে রাখতে দেখা গেছে।
গুলিস্তান এলাকায় দায়িত্ব পালনরত এ পুলিশ কনস্টেবল ডেইলি স্টারকে বলেছেন, ‘গতকালকের চেয়ে আজকে লোক চলাচল বেশি।’
আরও পড়ুন:
‘সর্বাত্মক’ লকডাউনে ঢাকার চিত্র
সর্বশেষ সিদ্ধান্ত, লকডাউনে ব্যাংক খোলা ১০টা থেকে ১২.৩০ পর্যন্ত
লকডাউনে কাঁটাবন মার্কেটের পোষা প্রাণীদের কী হবে?
লকডাউনে কাউকে রাস্তাঘাটে দেখতে চাই না: আইজিপি
১৪ এপ্রিল থেকে এক সপ্তাহের জন্য আন্তর্জাতিক ফ্লাইট স্থগিত
১৪-২১ এপ্রিল: নতুন বিধি-নিষেধে যেভাবে চলার নির্দেশনা
১৪ এপ্রিল থেকে ৭ দিনের কঠোর লকডাউন: জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী
১৪ এপ্রিল থেকে এক সপ্তাহের সর্বাত্মক লকডাউনের চিন্তা: সেতুমন্ত্রী
Comments