লকডাউন কার্যকরে মাঠে প্রশাসন, নানান ‘অজুহাতে’ বাইরে মানুষ
খুলনায় করোনার সংক্রমণের হার আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে। তবে, ‘সর্বাত্মক’ লকডাউন মানছেন না সাধারণ মানুষ। লকডাউন কার্যকরে পুরো জেলায় ম্যাজিস্ট্রেট ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা মাঠে থাকলেও নানা ‘অজুহাতে’ বাইরে বের হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারি বেশি থাকায় মানুষের উপস্থিতি কম ছিল। কিন্তু, নগরীর ছোট সড়ক, গলি ও বাজারগুলোতে ছিল মানুষের অবাধ চলাচল। যা দেখে বোঝার উপায় ছিল না যে লকডাউন চলছে।
আজ শুক্রবার লকডাউনের তৃতীয় দিনে নগরীর দৌলতপুর, খালিশপুর, ফুলবাড়িগেট, বয়রা বাজারসহ বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে দেখা গেছে- গত দুই দিনের তুলনায় মানুষের উপস্থিতি ছিল বেশি। ফুলবাড়ি গেটে মানুষ অবাধে অটোরিকশা, ভ্যান ও সিএনজিতে ঘোরাফেরা করছে। সেখানে অনেক দোকানপাটও খোলা ছিল। যদিও প্রশাসন সেগুলো বন্ধ করে দেয়। নগরের দৌলতপুর বাজারেও মানুষের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। তারা অবাধে কেনাকাটা করছিল। সেখানে ফুটপাতের অধিকাংশ দোকান আজ খোলা ছিল।
শহরের মার্কেট ও বিপণিবিতানগুলো আজও বন্ধ ছিল। তবে, লকডাউনের আওতামুক্ত খাবারের দোকান, ওষুধের দোকান ও বাজার খোলা ছিল। শহরে যানবাহন ও মানুষের চলাচল কম থাকলেও শহরের প্রধান বাজারগুলোর দৃশ্য ছিল একেবারে ভিন্ন। সেখানে রীতিমতো উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। বাজারে অনেকের মুখে মাস্ক ছিল না। বিকেলে ফলের দোকান এবং ইফতারির বাজারে মানুষের সমাগম বাড়ে।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, খুলনায় লকডাউনের তিন দিনে বিধিনিষেধ অমান্য করায় ২০৮ জনকে জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। অভিযানে সাধারণ মানুষকে মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহবান জানানো হয়। একইসঙ্গে স্বাস্থ্যবিধি না মানলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার প্রচারণা চালানো হয়।
খুলনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, লকডাউন কার্যকর করতে প্রশাসন কঠোর অবস্থানে আছে। ম্যাজিস্ট্রেটরা সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বাইরে অভিযান চালাচ্ছেন। কেউ অপ্রয়োজনে বাইরে বের হলে তাদের জরিমানা করা হচ্ছে। মানুষকে সচেতন করার বিষয়ে কোনো ত্রুটি রাখা হচ্ছে না।
এদিকে, খুলনায় আশঙ্কাজনক হারে আক্রান্তের সংখ্যা ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। গত ১৫ দিনের সরকারি হিসাব অনুযায়ী, জেলায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৫৯০ জন এবং মারা গেছেন আট জন। অর্থাৎ প্রতিদিন গড়ে ৪০ জন করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন।
খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে একশ শয্যার করোনা ইউনিটে ভর্তি আছেন প্রায় অর্ধশতাধিক করোনা রোগী এবং আইসিইউতে চিকিৎসাধীন সাত জন।
আরও পড়ুন:
সর্বশেষ সিদ্ধান্ত, লকডাউনে ব্যাংক খোলা ১০টা থেকে ১২.৩০ পর্যন্ত
লকডাউনে কাঁটাবন মার্কেটের পোষা প্রাণীদের কী হবে?
লকডাউনে কাউকে রাস্তাঘাটে দেখতে চাই না: আইজিপি
১৪ এপ্রিল থেকে এক সপ্তাহের জন্য আন্তর্জাতিক ফ্লাইট স্থগিত
১৪-২১ এপ্রিল: নতুন বিধি-নিষেধে যেভাবে চলার নির্দেশনা
১৪ এপ্রিল থেকে ৭ দিনের কঠোর লকডাউন: জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী
১৪ এপ্রিল থেকে এক সপ্তাহের সর্বাত্মক লকডাউনের চিন্তা: সেতুমন্ত্রী
Comments