লালমনিরহাটে সাংবাদিক নির্যাতনকারী বিজিবি সদস্যদের শাস্তি দাবি
লালমনিরহাটে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যদের হাতে সাংবাদিক নির্যাতন ও মামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন স্থানীয় সাংবাদিকরা। আজ দুপুরে লালমনিরহাট প্রেসক্লাবের উদ্যোগে শহরের মিশন মোড় এলাকায় মানববন্ধন করা হয়।
মানববন্ধন থেকে দৈনিক জনকণ্ঠ ও বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) লালমনিরহাট প্রতিনিধি জাহাঙ্গীর আলম শাহীনের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং তাকে দড়ি দিয়ে বেঁধে নির্যাতনে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়।
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে বিজিবি কুলাঘাট ক্যাম্পের টহল দলের সদস্যরা জাহাঙ্গীরকে মারধর করে মাদক মামলা দিয়ে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। শুক্রবার দুপুরে তাকে আদালতে হাজির করা হলে, সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আফাজ উদ্দিন জামিন মঞ্জুর করেন। জাহাঙ্গীরকে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
মানববন্ধনে সাংবাদিকরা অভিযোগ করে বলেন, বিজিবি এক বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার দেখিয়ে সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মাদক মামলা দিয়েছে। এই অভিযোগ আদৌ সঠিক নয়। পেশাগত কর্তব্যের সঙ্গে জাহাঙ্গীর আপোষ না করায় ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন।
তার বলেন, ‘শুধু তাই নয়, আইন লঙ্ঘন করে সাংবাদিককে দড়ি দিয়ে বেঁধে নির্যাতন করা হয়েছে। তাকে নির্যাতনের ছবি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে তার সম্মানহানি করা হয়েছে।’
প্রথম আলোর লালমনিরহাট প্রতিনিধি আব্দুর রব সুজন বলেন, ‘এ ঘটনার একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। সাংবাদিক জাহাঙ্গীরের সঙ্গে যা হয়েছে তা নিছক সাধারণ ঘটনা নয়। এটি সাংবাদিকতার ওপর বড় ধরনের হুমকি।’
নির্যাতনের শিকার সাংবাদিক জাহাঙ্গীর বলেন, ‘বিজিবির কুলাঘাট ক্যাম্পের কমান্ডার হাবিলদার আনোয়ার হোসেন পরিকল্পিতভাবে আমার ওপর প্রতিশোধ নিয়েছেন। দুই সপ্তাহ আগে চোরাচালান সংক্রান্ত আমার একটি তথ্যের ভিত্তিতে হাবিলদার আনোয়ার হোসেনকে বিভাগীয় শাস্তি ভোগ করতে হয়েছে। এ কারণে আমার ওপর তার আক্রোশ ছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার ওপর চরম শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়েছে। আমার পেশা নিয়ে অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করা হয়েছে। আমি এখনও অসুস্থ বোধ করছি। আমাকে রশি দিয়ে বেঁধে এক বোতল ফেনসিডিল সামনে রেখে কুলাঘাট বিজিবি ক্যাম্পে ছবি তোলা হয়। এই ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে দিয়ে আমার পরিবারের সম্মানহানি করা হয়েছে।’
এ ব্যাপারে লালমনিরহাট ১৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল এস এম তৌহিদুল আলম আজ দুপুরে সাংবাদিকদের বলেন, ‘সাংবাদিককে বেঁধে ফেনসিডিলসহ ছবি বিজিবি সদস্য তুলেনি। এ ছবি কে তুলেছে এবং কিভাবে ফেসবুকে ছড়িয়েছে, সে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’
আরও পড়ুন:
Comments