বেয়ারস্টোর ঝড় থামিয়ে মুম্বাইর দারুণ জয়
নাগালে থাকা লক্ষ্য তাড়ায় বিস্ফোরক শুরু এনেছিলেন জনি বেয়ারস্টো। তার সঙ্গে তাল দেন ডেভিড ওয়ার্নারও। তবে বেয়ারস্টোর বিদায়ের পরই বদলাতে থাকে ছবি। দারুণ বোলিং-ফিল্ডিংয়ে অল্প পুঁজি নিয়েও সানরাইজার্স হায়দরবাদকে আটকে দিয়েছে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স।
শনিবার চেন্নাইতে আইপিএলের ম্যাচে সানরাইজার্সকে ১৩ রানে হারিয়েছে মুম্বাই। আগে ব্যাট করে মুম্বাইর করা ১৫০ রানের জবাবে ১৩৭ রানে গুটিয়ে গেছে ওয়ার্নাররা। তিন ম্যাচে মুম্বাইর এটি দ্বিতীয় জয়। সমান ম্যাচে সবগুলোই হারল সানরাইজার্স।
রান তাড়ায় উড়ন্ত শুরু পায় সানরাইজার্স। নেমেই ঝড় তুলেন জনি বেয়ারস্টো। ১৫১ রানের লক্ষ্যে ওভারপ্রতি ১০ রান করে আনতে থাকেন বেয়ারস্টো-ওয়ার্নার। চাহিদার তুলনায় যা অনেক বেশি। তখন ম্যাচ হেলে পড়ে সানরাইজার্সের দিকেই।
তৃতীয় ওভারে ট্রেন্ট বোল্টের কাছ থেকেই বেয়ারস্টো তুলেন ১৮ রান। ১৬ বলেই তিনি ছাড়িয়ে গিয়েছিলেন ৪০। কিন্তু ৮ম ওভারে ছন্দপতন। ক্রুনাল পান্ডিয়াকে ব্যাকফুটে গিয়ে পুল করতে গিয়েছিলেন। বেশি পেছনে চলে যাওয়ায় তার পা ভেঙ্গে ফেলে স্টাম্প। ২২ বলে ৩ চার, ৪ ছক্কায় হিট উইকেটে থামে তার ৪৩ রানের ঝড়।
ওই উইকেটের পরই যেন খানিকটা এলোমেলো সানরাইজার্স। তিনে নামা মানিষ পান্ডে রাহুল চাহারের স্পিনে মিস টাইমিংয়ে ধরা দেন মিড অফে। সব সামলে ওয়ার্নার ছিলেন ভরসা। হার্দিক পান্ডিয়ার ক্ষিপ্র থ্রো তাকেও কেড়ে নিলে ম্যাচে ফেরে মুম্বাই। তরুণ বিরাট সিং এর অভিষেক শর্মাও ফেরেন তড়িঘড়ি। ১০৪ রানে ৫ উইকেট হারায় ওয়ার্নারের দল।
আব্দুল সামাদকে নিয়ে বিজয় শঙ্কর ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছিলেন। তাদের প্রতিরোধও ভাঙ্গেন হার্দিক। আরেকটি দুর্দান্ত থ্রোতে সামাদকে বিদায় করেন তিনি। এক বল পরই রশিদ খানকে এলবিডব্লিউতে কাবু করেন বোল্ট। বিজয়ের একার পক্ষে আর বেশিদূর আগানো যায়নি। ১৯তম ওভারে বিজয় থামতেই ম্যাচের গতিপথ নিয়ে দোলাচলও মিটে যায় শেষ ওভারে আরও ২ উইকেট নিয়ে সানরাইজার্সকে মুড়ে দেন বোল্ট। শুরুতে মার খাওয়া বোল্ট পরে নেন ২৮ রানে ৩ উইকেট। ৪ ওভারের কোটা পূরণ করে মাত্র ১৯ রানে ৩ উইকেট নিয়ে অবশ্যই মুম্বাইর সেরা বোলার রাহুল চাহার।
টস জিতে ব্যাট করতে নেমে মুম্বাইর শুরুটা হয় ভালো। অধিনায়ক রোহিত শর্মা জমে যান, তাল মেলান কুইন্টেক ডি ককও। খুব একটা বিস্ফোরক না হলেও রান আসছিল জুতসই গতিতেই। কিন্তু সপ্তম ওভারে রোহিতের আউটের পর উলটো পথে হাঁটা শুরু। বিজয় শঙ্করের বলে ২৫ বলে ৩২ রান করে ক্যাচ দেন মুম্বাই অধিনায়ক। ৫৫ রানে প্রথম উইকেট হারায় মুম্বাই।
অন্য দিকে উইকেটের ধরণের বিচারে বেশ কিছুটা সময় নিচ্ছিলেন ডি কক। পুষিয়ে দেওয়ার দাবি যখন, তখনই নেন বিদায়। ৩০ বলে ৪০ করা ডি কক বিদায় নেন মুজিব উর রহমানের অফ স্পিনে। এসব জায়গা থেকে যিনি টেনে নিয়ে যেতেন, সেই সূর্যকুমার ফেরত যান তারও আগে। ৬ বলে ১০ রান করে বোলার বিজয়কেই ক্যাচ দিয়ে ফেরেন।
এরপর আগের আসর মাত করা ইশান কিশান বিস্ময়কর ব্যাট করেন। কোনভাবেই স্বচ্ছন্দ মনে হয়নি তাকে। থিতু হতে গিয়ে মাঝের ওভারে নষ্ট করেন ২১ বল। তা থেকে কেবল ১২ রান করে তিনি ক্যাচ দেন মুজিবের বলে। হার্দিক পান্ডিয়াও পারেননি ঝড় তুললে।
সব চাপ গিয়ে পড়ে কাইরন পোলার্ডের উপর। ক্রুনাল পান্ডিয়াকে একপাশে রেখে শেষটা করেছেন তিনিই। শেষ ওভারে ১৭রান সহ ২২ বলে ৩৫ করে মুম্বাইকে নিয়ে যান দেড়শো ঘরে। সেই পুঁজিই পরে হয়েছে নিরাপদ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স: ২০ ওভারে ১৫০/৫ (ডি কক ৪০, রোহিত ৩২, সূর্যকুমার ১০, ইশান ১২, পোলার্ড ৩৫*, হার্দিক ৭, ক্রুনাল ৩*; ভুবনেশ্বর ০/৪৫, খলল ১/২৪, মুজিব ২/২৯, অভিষেক ০/৫, বিজয় ২/২৯, রশিদ ০/২২)
সানরাইজার্স হায়দরাবাদ: ১৯.৪ ওভারে ১৩৭ (ওয়ার্নার ৩৬, বেয়ারস্টো ৪৩, মানিষ ২, বিরাট ১১, বিজয় ২৮, অভিষেক ২, সামাদ ৭, রশিদ ০, ভুবনেশ্বর ১, মুজিব ১*, খলিল ১; ট্রেন্ট ৩/২৮ , বুমরাহ ০/৫ , মিল্নে ০/৩৩ , ক্রুনাল ১/৩০, চাহার ৩/১৯, পোলার্ড ০/১০)
ফল: মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স ১৩ রানে জয়ী।
Comments