অক্সিজেন সিলিন্ডার পিঠে বেঁধে মাকে নিয়ে হাসপাতালে

অক্সিজেন সিলিন্ডার পিঠে বেঁধে মোটরসাইকেলে মাকে নিয়ে ঝালকাঠির নলছিটি থেকে বরিশালের শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসেন ব্যাংক কর্মকর্তা জিয়াউল হাসান। ১৭ এপ্রিল ২০২১। ছবি: সংগৃহীত

করোনায় আক্রান্ত মাকে বাঁচাতে অ্যাম্বুলেন্স না পেয়ে অক্সিজেন সিলিন্ডার পিঠে বেঁধে মোটরসাইকেলে ঝালকাঠির নলছিটি থেকে বরিশালের শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসার একটি ছবি গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

গতকাল সন্ধ্যায় অক্সিজেনের স্বল্পতায় ভোগা এই করোনা রোগীকে শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার অবস্থা আগের চেয়ে ভালো বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক।

আজ রোববার সকালে ঝালকাঠি কৃষি ব্যাংকের কর্মকর্তা জিয়াউল হাসান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘মায়ের অক্সিজেন দ্রুত নেমে যাচ্ছিল। এক পর্যায়ে ৮০ তে নেমে গেলে অ্যাম্বুলেন্স এমনকি অটো রিকশা বা কোনো থ্রি-হুইলারও পাচ্ছিলাম না।’

‘উপায় না দেখে নিজের পিঠে অক্সিজেন সিলিন্ডার গামছা দিয়ে বেঁধে মোটরসাইকেলে মাকে নিয়ে এসে শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করাই।’

‘মার অবস্থা আগের চেয়ে কিছুটা ভালো’ বলে জানিয়েছেন তিনি।

এই ব্যাংক কর্মকর্তা আরও জানিয়েছেন, তার মা রেহানা বেগম (৫৭) নলছিটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। গত ১০ এপ্রিল নলছিটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনার নমুনা দিলেও রিপোর্ট এখনো তারা পাননি।

পরে গত ১৫ এপ্রিল আবার শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনার নমুনার পরীক্ষা করতে দেওয়া হয়। গতকাল শনিবার হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার আগ পর্যন্ত এই নমুনার ফল আসেনি বলেও জানিয়েছেন তিনি।

বলেন, ‘ইতোমধ্যে মায়ের অক্সিজেন স্যাচুরেশন নামতে থাকায় গতকাল দুপুর আড়াইটায় নলছিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তির চেষ্টা করি। মেডিকেল অফিসার ডা. মেহেদি হাসান মাকে সেখানে না রেখে শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজে নিয়ে যেতে বলেন। অ্যাম্বুলেন্স বা অন্য কোনো যানবাহন না পেয়ে পিঠে অক্সিজেন সিলিন্ডার বেঁধে মাকে হাসপাতালে নিয়ে আসি।’

রোগীর অবস্থা দেখে রাস্তায় কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশ তাকে আর কিছু জিজ্ঞেস করেনি বলেও জানিয়েছেন তিনি।

‘আমার কাছে ঐ মুহূর্তে এর কোনো বিকল্প ছিল না’ উল্লেখ করে জিয়াউল হাসান আরও বলেন, ‘মাকে বাঁচাতে যা করা দরকার আমি তাই করতে পেরেছি বলে আনন্দ হচ্ছে।’

শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডের ইনচার্জ সহকারী পরিচালক ডা. মনিরুজ্জামান শাহীন ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘এই মুহূর্তে রেহানা বেগমের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছে। তাকে অক্সিজেন ও ওষুধ দেওয়া হচ্ছে।’

Comments

The Daily Star  | English
Anti-Terrorism Act

Banning party activities: Govt amends anti-terror law

The interim government is set to bring the curtain down on the Awami League as a functioning political party.

7h ago